বাংলাদেশকে আনন্দে ভাসিয়ে নেওয়ার সেই রাতের দশম বর্ষপূর্তি আজ। অ্যাডিলেডে ইংল্যান্ডকে হারিয়ে ২০১৫ বিশ্বকাপের কোয়ার্টার ফাইনালে উঠে গিয়েছিল বাংলাদেশ। সেই প্রথম এবং এখন পর্যন্ত শেষবারের মতো। মাহমুদউল্লাহর সেঞ্চুরি আর রুবেল হোসেনের দুর্দান্ত বোলিংয়ে আসা সেই জয় নিয়ে প্রথম আলোতে প্রকাশিত উৎপল শুভ্রর লেখাটা এই দিনে আবার পড়াই যায়।
বাংলাদেশের খেলোয়াড়েরা মাঠে দিগ্বিদিক ছুটছেন। ডাগ-আউট থেকে ছুটে আসছেন দলের বাকি সবাই। মাশরাফি বিন মুর্তজা দাঁড়িয়ে ছিলেন মিড অফে, সেখানেই উপুড় হয়ে শুয়ে পড়লেন। সেদিকে চোখ পড়তেই একে একে সবাই ঝাঁপিয়ে পড়লেন অধিনায়কের ওপর। অ্যাডিলেড ওভালের সবুজ ঘাসে লাল-সবুজের অপরূপ একটা ছবি আঁকা হয়ে গেল।
ফুটবলে এমন দৃশ্য অহরহই দেখা যায়। ক্রিকেটে একটু বিরলই বটে। তা বিরল সাফল্যের উদ্যাপন তো একটু ব্যতিক্রমীই হবে। অস্ট্রেলিয়া-নিউজিল্যান্ডের বিরূপ কন্ডিশনে বিশ্বকাপ আর সেটিতেই কি না গ্রুপের শেষ ম্যাচ বাকি থাকতেই বাংলাদেশ কোয়ার্টার ফাইনালে!
আরও পড়ুনছক্কা মেরে সেঞ্চুরি তামিমের, মোহামেডানের বড় জয়১ ঘণ্টা আগেম্যাচ শেষ হওয়ার পর অ্যাডিলেড ওভালের বাইরের আঙিনাটা যেন মিরপুর হয়ে গেল। ‘আমার দেশ তোমার দেশ বাংলাদেশ বাংলাদেশ’ স্লোগান চলছে, ডুগডুগির মতো কী যেন একটা বাজছে, বাতাসে গর্বিত ভঙ্গিমায় দুলছে লাল-সবুজ পতাকা.
অ্যাডিলেড ওভাল অনেক ক্রিকেট ইতিহাসের সাক্ষী। ত্রিশের দশকে উডফুল আর ওল্ডফিল্ডকে ছোবল দেওয়া লারউডের আগুনে গোলায় বডিলাইন সিরিজ উত্তেজনার তুঙ্গ ছুঁয়েছিল এখানেই। এই মাঠকেই নিজের হোমগ্রাউন্ড করে নিয়েছিলেন স্যার ডন ব্র্যাডম্যান। ইতিহাসের আরও কতশত টুকরো ছড়িয়ে-ছিটিয়ে এই মাঠে। বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসেও এখন নাম লেখা হয়ে গেল অ্যাডিলেড ওভালের। এখানেই যে রচিত হলো বাংলাদেশের ক্রিকেটের অমর এক কাব্য।
অ্যাডিলেডে সেদিন অমর কাব্য রচনার পথে এই মুহূর্তগুলো নিশ্চয়ই অনেকেরই মনে আছেউৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
বিস্ফোরক মামলায় চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ
চট্টগ্রামে বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনে করা মামলায় সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসকে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের আদেশ দিয়েছেন আদালত। পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে আজ সোমবার দুপুরে চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট এস এম আলাউদ্দিন এ আদেশ দেন।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (প্রসিকিউশন) মফিজ উদ্দিন প্রথম আলোকে বলেন, কারাগারে থাকা চিন্ময় দাসকে কোতোয়ালি থানার বিস্ফোরক দ্রব্য নিয়ন্ত্রণ আইনের মামলায় কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য আবেদন করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা। শুনানি শেষে আদালত তা মঞ্জুর করেছেন।
গত বছরের ২৬ নভেম্বর সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপত্র চিন্ময় দাসের জামিনকে কেন্দ্র করে সংঘর্ষের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করা হয়। এ হত্যার ঘটনায় তাঁর বাবা জামাল উদ্দিন বাদী হয়ে ৩১ জনের নাম উল্লেখ করে হত্যা মামলা করেন। এ ছাড়া পুলিশের ওপর হামলা, কাজে বাধা এবং আইনজীবী ও বিচারপ্রার্থীদের ওপর হামলা ও ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনায় আরও পাঁচটি মামলা হয়। ৬টি মামলায় গ্রেপ্তার হন ৫১ জন। তাঁদের মধ্যে হত্যায় জড়িত অভিযোগে ২১ জন গ্রেপ্তার রয়েছেন।
আদালত সূত্র জানায়, সাইফুল হত্যার আসামিদের মধ্যে চন্দন দাস, রিপন দাস ও রাজীব ভট্টাচার্য আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে উল্লেখ করা হয়, আইনজীবীর ঘাড়ে বঁটি দিয়ে দুটি কোপ দেন রিপন দাস। আর কিরিচ দিয়ে কোপান চন্দন দাস। পরে রাস্তায় পড়ে থাকা সাদা শার্ট ও কালো প্যান্ট পরা এই আইনজীবীকে লাঠি, বাটাম, ইট, কিরিচ ও বঁটি দিয়ে তাঁরা ১৫ থেকে ২০ জন পিটিয়ে হত্যা করেন।
গত বছরের ৩১ অক্টোবর চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও মোহরা ওয়ার্ড বিএনপির তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক ফিরোজ খান বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় চিন্ময় দাসসহ ১৯ জনের বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননায় রাষ্ট্রদ্রোহের অভিযোগে মামলা করেন। পরে ফিরোজ খানকে বিএনপি থেকে অব্যাহতি দেওয়া হয়। এ মামলায় চিন্ময় দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।