বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তা অফিস করেনি, গ্রেপ্তারে অভিযান চলছে
Published: 9th, March 2025 GMT
মামলায় অভিযুক্ত বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) ১৬ কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা অফিস করেননি। মূলত গ্রেপ্তার এড়াতে তারা অফিসে আসেননি। তবে তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে বিভিন্ন জায়গায় অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ।
রবিবার (৯ মার্চ) বিএসইসির কার্যালয় সরেজমিন ঘুরে এবং শেরেবাংলা নগর থানা সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে।
অভিযুক্ত বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের গ্রেপ্তার করতে তিনটি টিম করছে বলে রাইজিংবিডি ডটকমকে জানিয়েছেন শেরেবাংলা নগর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) গোলাম আজম।
আরো পড়ুন:
ডিএসইতে কমেছে লেনদেন, সিএসইতে বেড়েছে
ডিএসইতে দাম কমার শীর্ষে এস আলম কোল্ড
তিনি বলেন, “আমরা অভিযুক্তদের গ্রেপ্তার করার চেষ্টা অব্যাহত রেখেছি। তারা কেউ বাসায় নেই, অফিসও করেননি। এজন্য বিভিন্ন জায়গায় টিম পাঠানো হয়েছে। তাদেরকে গ্রেপ্তার করতে পুলিশি অভিযান চলছে।”
তবে রবিবার (৯ মার্চ) দুপুরে পুঁজিবাজারের গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডারদের সঙ্গে বৈঠক শেষে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদ সাংবাদিকদের বলেন, “আজ এখানে গুরুত্বপূর্ণ স্টেকহোল্ডাররা এসেছিলেন। তারা আমাদের সহমর্মিতা জানিয়েছেন। আমরা দেখতে পাচ্ছি আমাদের কর্মকর্তা কর্মচারীরা কাজে ফিরে এসেছেন। আমরা সবাইকে বলেছি, কাজে যোগদান করতে। আমরা সবাইকে নিয়ে একসঙ্গে কাজ করব। সবাই কাজে যোগদান করলে, কাজ স্বাভাবিক নিয়মে চলে চলবে।”
কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেছেন কিনা এমন প্রশ্নের জবাবে বিএসইসির চেয়ারম্যান বলেন, “এখনো সেই সময় হয়নি।”
যেসব কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তারা কি করবে-এমন প্রশ্নের জবাবে খন্দকার রাশেদ মাকসুদ বলেন, “পরবর্তীতে আলোচনা করে আরো বিস্তারিত আপনাদের জানানো হবে।”
বুধবার (৫ মার্চ) বিএসইসির চেয়ারম্যান ও কমিশনারদের অবরুদ্ধ করে দাবি আদায়ের চেষ্টা করেন সেখানকার কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। পরে অরাজকতা ও ভীতিকর পরিস্থিতি সৃষ্টি হলে সেনাবাহিনীসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা তাদের উদ্ধার করেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে ওই দিন বিকেল ৫টায় রাজধানীর শেরেবাংলা নগর থানায় বিএসইসির ১৬ কর্মকর্তার বিরুদ্ধে মামলা করেন সংস্থাটির চেয়ারম্যান খন্দকার রাশেদ মাকসুদের গানম্যান (পুলিশ সদস্য) মো.
মামলার আসামিরা হলেন-বিএসইসির সাবেক নির্বাহী পরিচালক সাইফুর রহমান, নির্বাহী পরিচালক মাহবুবুল আলম ও রেজাউল করিম, পরিচালক আবু রায়হান মো. মোহতাছিন বিল্লা, অতিরিক্ত পরিচালক নজরুল ইসলাম, যুগ্ম পরিচালক রাশেদুল ইসলাম, উপ-পরিচালক বনী ইয়ামিন, আল ইসলাম, শহিদুল ইসলাম ও তৌহিদুল ইসলাম, সহকারী পরিচালক জনি হোসেন, রায়হান কবীর, সাজ্জাদ হোসেন ও আব্দুল বাতেন, লাইব্রেরিয়ান মো. সেলিম রেজা বাপ্পী এবং ব্যক্তিগত কর্মকর্তা আবু ইউসুফ।
ঢাকা/এনটি/এসবি
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর গ র প ত র কর ব এসইস র ল ইসল ম
এছাড়াও পড়ুন:
বড় বিনিয়োগকারীদের মুনাফার তথ্য চেয়ে সকালে চিঠি, বিকেলে না
গত ২০২৪–২৫ অর্থবছরে বিনিয়োগ করে ৫০ লাখ টাকা বা তার বেশি মূলধনি মুনাফা করেছে, এমন ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠানের তথ্য চেয়ে চিঠি পাঠিয়ে সেটির কার্যকারিতা স্থগিত করেছে চট্টগ্রাম স্টক এক্সচেঞ্জ বা সিএসই। আজ বৃহস্পতিবার সকালে এই তথ্য চেয়ে বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে চিঠি পাঠিয়েছিল সিএসই। বিকেলে সিএসই সেই চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে কোনো তথ্য দিতে হবে না বলে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর কাছে বার্তা পাঠায়।
জানা যায়, পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে সিএসইর পক্ষ থেকে ওই চিঠি ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে বিতরণ করা হয়। বড় বিনিয়োগকারীদের মুনাফার ব্যক্তিগত তথ্য চেয়ে আজ সকালে চিঠিটি বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে পাঠানোর পর তা নিয়ে বাজারে প্রতিক্রিয়া দেখা দেয়। এরপর বিকেলে তা সিএসই ফিরতি এক বার্তায় তথ্য দিতে হবে না বলে ব্রোকারেজ হাউসগুলোকে জানিয়ে দেয়।
জানা যায়, জাতীয় রাজস্ব বোর্ড বা এনবিআরের এক চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে ৫০ লাখ টাকার বেশি মূলধনি মুনাফা করেছে, এমন বিনিয়োগকারীর তথ্য চেয়ে গত ১৪ সেপ্টেম্বর দুই স্টক এক্সচেঞ্জের কাছে চিঠি পাঠায় বিএসইসি। চিঠিতে ব্রোকারেজ হাউস ও মার্চেন্ট ব্যাংক থেকে এসব তথ্য সংগ্রহ করে বিএসইসিতে জমা দেওয়ার কথা বলা হয়। তবে তথ্য দেওয়ার কোনো সময়সীমা চিঠিতে উল্লেখ করা হয়নি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, এনবিআর থেকে এ ধরনের তথ্য চাওয়া হলে বাজারে সেটির প্রতিক্রিয়া কী হতে পারে, তা না ভেবেই বিএসইসির পক্ষ থেকে বিনিয়োগকারীদের এসব তথ্য চেয়ে স্টক এক্সচেঞ্জে চিঠি পাঠানো হয়েছিল। তবে বিএসইসির সঙ্গে আলোচনা না করে ব্রোকারেজ হাউসগুলোর কাছে এ ধরনের চিঠি না পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় ডিএসই। এর কারণ, চিঠিতে বিনিয়োগকারীদের যে তথ্য চাওয়া হয়েছে, তা অত্যন্ত সংবেদনশীল এবং বিনিয়োগকারীদের ব্যক্তিগত গোপনীয় তথ্য। তা ছাড়া এমন তথ্য পাঠানোর কোনো সময়সীমাও ছিল না। এ কারণে ডিএসইর পক্ষ থেকে এই চিঠি আর ব্রোকারেজ হাউসগুলোতে বিতরণ করা হয়নি। তবে সিএসই আজ সকালে এই চিঠি বিভিন্ন ব্রোকারেজ হাউসে পাঠায়।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিএসইসির সংশ্লিষ্ট এক কর্মকর্তা প্রথম আলোকে জানান, আপাতত এ বিষয়ে আর অগ্রসর না হওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। এনবিআরের সঙ্গে আলোচনা করে পরে বিষয়টির সমাধান করা হবে।
গত বছর শেয়ারবাজারে ৫০ লাখ টাকার বেশি মূলধনি মুনাফার ওপর ১৫ শতাংশ হারে করারোপ করা হয়। সেই হিসাবে ২০২৪–২৫ অর্থবছরে যেসব ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান ৫০ লাখ টাকার বেশি মুলধনি মুনাফা করেছে, তাদের কর দেওয়ার কথা। সংশ্লিষ্ট বিনিয়োগকারীরা কর দিচ্ছেন কি না, তা যাচাইয়ে গত ২৫ আগস্ট এনবিআর থেকে এ বিষয়ে তথ্য চেয়ে বিএসইসিতে চিঠি পাঠানো হয়। তারই পরিপ্রেক্ষিতে ১৪ সেপ্টেম্বর এই তথ্য চেয়ে বিএসইসির পক্ষ থেকে ডিএসই ও সিএসইকে চিঠি দেওয়া হয়।
একাধিক ব্রোকারেজ হাউস জানিয়েছে, আজ সকালে সংস্থাটির সদস্যভুক্ত ব্রোকারেজ হাউসে এই চিঠি পাঠিয়ে তথ্য চাওয়া হয়েছে। তবে বিকেলে তথ্য পাঠাতে হবে না মর্মে নতুন বার্তা পাঠানো হয়েছে।