ঈদুল ফিতরে দেড় কোটি মানুষ বাড়ি যাবেন বলে জানিয়েছেন সড়ক পরিবহন ও সেতু এবং রেলপথ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান। তিনি বলেছেন, ‘‘এই যাত্রার আগে রাস্তা সংস্কার করার একটা বিষয় থাকে। আমরা সেই জায়গাগুলো চিহ্নিত করেছি। আগামী ১৫ রোজার মধ্যে সব রাস্তার সংস্কার কাজ শেষ করতে হবে।’’

রবিবার (৯ মার্চ) বিকেলে রাজধানীর বিদ্যুৎ ভবনে আসন্ন ঈদুল ফিতরে ঘরমুখো মানুষের যাতায়াত নিরাপদ ও নির্বিঘ্ন করতে আয়োজিত আন্তঃমন্ত্রণালয় সভা শেষে সাংবাদিকদের এ কথা জানান তিনি।

মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান বলেন, ‘‘ঈদের সময় গুলিস্তান, ফুলবাড়িয়া, মহাখালী, গাবতলী এবং সায়েদাবাদ টার্মিনাল এলাকায় সিসিটিভি বসানো হবে এবং সেগুলো মনিটরিং করা হবে।’’

এবার ঈদে যানজট কম হবে জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘অনেক ছুটি আছে মানুষ ধাপে ধাপে যেতে পারবে। এছাড়া মোটরসাইকেল, নসিমন, করিমন এগুলো মহাসড়কের বাইরে রাখার নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। রাস্তার পাশে হাট-বাজার ঈদের আগে যেন না বসে সে জিনিসগুলো খেয়াল রাখতে হবে। ঢাকা বাইপাস এর কাজ চলছে এটা ঈদের আগে সাময়িকভাবে খুলে দেওয়া হবে যাতে যানবাহন স্বাভাবিকভাবে চলতে পারে। বিআরটি করিডোর ঈদের আগে একমুখী চলাচল করে দেওয়া হবে।’’ 

সংবাদ সম্মেলনে মহাসড়কে ডাকাতের বিষয়ে প্রশ্ন করা হলে সড়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘‘হাইওয়ে পুলিশের সংখ্যা বাড়ানো হবে। তারা মহাসড়কে টহল দিবে যাতে ডাকাতের মতো ঘটনা না ঘটে এবং রাস্তায় ট্রাফিক পুলিশের সব সদস্য থাকবে।’’ 

ঈদের শেষের দিকে বাসে অতিরিক্ত ভাড়া নেওয়া হয় এমন প্রশ্ন করা হলে সড়ক উপদেষ্টা বলেন, ‘‘সড়ক এবং রেল মন্ত্রণালয় থেকে টিম থাকবে। তারা নিজে এসব জায়গা পরিদর্শন করবে। ঈদে মানুষের যাতায়াতটা যেন সুন্দর হয় এবার সেই ব্যবস্থাটা আমরা করার চেষ্টা করছি।’’

মহাসড়কে চাঁদাবাজি হচ্ছে উল্লেখ করে প্রশ্ন করা হলে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি অ্যাডভোকেট শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, ‘‘সড়কপথে কোথাও কোনো ধরনের চাঁদাবাজি কেউ করতে পারবে না। এরকম কখনো তথ্য পেলে আমাদের কাছে দিলে আমরা ব্যবস্থা নেব।’’

ঢাকা/আসাদ/এনএইচ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ