হারমোনিয়ামের তালে ঘরোয়া আসরে গাইছেন, ‘খুঁজবে আমায় সেদিন, যেদিন আমি থাকব না’। এক প্রৌঢ় শিল্পীর কণ্ঠে গানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ছড়িয়ে পড়েছে।
৭ মার্চ গানের ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন গিটারিস্ট রায়হান পারভেজ। সাধারণ শ্রোতারা যেমন তাঁর গায়কির প্রশংসা করছেন, সংগীতশিল্পীরাও তাঁর গায়কিতে লীন।

জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা গানের ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘আহা! কী অসাধারণ কণ্ঠ। অসাধারণ কারুকাজ। সুরের গিরিখাতের পথে ওঠানামা। আমি অভিভূত।’

সেই পৌঢ় শিল্পী মমতাজ বেগম। অনেকটা আড়ালেই ছিলেন তিনি। ৭২ বছরে পা দিয়েছেন, তবু কণ্ঠের ধারটা ধরে রেখেছেন।

ভারতীয় সংগীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার গাওয়া ‘খুঁজবে আমায় সেদিন, যেদিন আমি থাকব না’ গানটি মমতাজের খুব প্রিয়; সেই গান গেয়ে শ্রোতাদের কাছে পরিচিতি পেলেন মমতাজ।

আরও পড়ুনটিকটকে ভাইরাল গানটি শুনেছেন?১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

দুই দিনের ব্যবধানে মমতাজের গানের ভিডিওটি ৩ হাজার ৮০০ বার শেয়ার হয়েছে। ১১ হাজারের বেশি রিঅ্যাক্ট এসেছে, ১ হাজার ৩০০–এর বেশি মন্তব্য জমা পড়েছে। সংগীতশিল্পী স্বপ্নীল সজীব লিখেছেন, ‘কী অসাধারণ, আপনাকে অতলান্ত শ্রদ্ধা।’ পল্লবী সরকার নামের আরেক শ্রোতা লিখেছেন, ‘প্রাণটা জুড়িয়ে গেল।’

মমতাজ বেগমের ভাতিজা সরোদশিল্পী তানিম হায়াত খান মন্তব্যের ঘরে জানান, মমতাজ বেগমের জন্ম ও বেড়ে ওঠা কলকাতায়। সারা জীবন কলকাতায় কাটিয়েছেন। কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে থাকছেন তিনি।

মমতাজ বেগমের বাবা সেতারশিল্পী ওস্তাদ আলী আহমেদ। আলী আহমেদ ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর সরাসরি শিষ্য ছিলেন। মমতাজের ভাই চঞ্চল খান কণ্ঠশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার সঙ্গে দীর্ঘদিন তবলা বাজিয়েছেন।

তানিম হায়াত খান লিখেছেন, ‘অসাধারণ ভালো মানুষ মমতা পিসি। ওনার কলকাতার তোপসিয়ার বাসাতেও গেছি আমি। আর আমরা কলকাতায় গেলেই হোটেলে চলে আসতেন গল্প–আড্ডা দেওয়ার জন্য।। কী যে দারুণ সময় কাটিয়েছি ওনার সাথে।’

আরও পড়ুনচলো ভুলে যাই: কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে পারশার গানটি ‘ভাইরাল’০১ আগস্ট ২০২৪.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: কলক ত

এছাড়াও পড়ুন:

চাকরি খেয়ে ফেলব, কারারক্ষীকে কারাবন্দী আ’লীগ নেতা

‘চাকরি খেয়ে ফেলব, দেখে নেব তোমাকে, চেন আমি কে?’ কারবন্দী কুড়িগ্রাম জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজু (৪৯) মঙ্গলবার বিকেল ৪টার দিকে ২ কারারক্ষীকে এভাবে হুমকি দেন বলে অভিযোগ উঠেছে। 

জানা যায়, কুড়িগ্রাম জেলা কারাগারে জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে দেখতে যান তার কয়েকজন স্বজন। কারা নিয়মানুযায়ী সাক্ষাৎ কক্ষে বেঁধে দেওয়া সময়ে কথা শেষ করার কথা থাকলেও তিনি তার মানতে রাজি নন। তিনি দীর্ঘ সময় কথা বলতে চাইলে সাক্ষাৎ কক্ষে দায়িত্বরত মহিলা কারারক্ষী পপি রানী কারাবন্দী নেতার স্বজনদের সময়ের মধ্যে কথা শেষ করতে বলেন। এতে ক্ষিপ্ত হন আওয়ামী লীগ নেতা সাজু। তখন তিনি বলেন, ‘এই আপনি কে? ডিস্টার্ব করছেন কেন? চিনেন আমাকে? চাকরি খেয়ে ফেলব।’

এ সময় সাক্ষাৎ কক্ষে সাজুর স্বজনরাও পপি রানীর সঙ্গেও আক্রমণাত্মক আচরণ করেন। পপি রানীকে নিরাপদ করতে সুমন নামের আরেকজন কারারক্ষী এগিয়ে এলে তাকে লাথি দিয়ে বের করে দেওয়ার হুমকি দেন সাজু। উত্তেজনার একপর্যায়ে ঘটনাস্থলে দ্রুত উপস্থিত হন প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক। তিনি সাজুর স্বজনদের সাক্ষাৎ কক্ষ থেকে চলে যেতে বলেন। তারাও চলে যাওয়ার সময়ে কারারক্ষীদের গালিগালাজ করেন। 

এ ব্যাপারে কারারক্ষী পপি রানী  বলেন, ‘আমি ডিউটিরত অবস্থায় তিনি আমাকে প্রভাব দেখিয়ে চাকরি খাওয়ার হুমকি দেন ও গালিগালাজ করেন। আমি জেলার স্যারের কাছে বিচার প্রার্থনা করছি।’

প্রত্যক্ষদর্শী কারারক্ষী মো. সুমন বলেন, ‘আমরা তো ছোট পদে চাকরি করি, আমাদের নানান নির্যাতন সহ্য করতে হয়। আমি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতি ছাড়া আর কিছু বলতে পারব না।’

প্রধান কারারক্ষী আব্দুর রাজ্জাক বলেন, ‘সাক্ষাৎ কক্ষের ভেতরে পুলিশ সদস্যকে গালিগালাজ করা হয়। পরে আমি গিয়ে পরিবেশ শান্ত করি।’ 

এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুড়িগ্রাম কারাগারের জেলার এ জি মো. মামুদ বলেন, ‘বিষয়টি আমি শুনেছি। বন্দীরা আমাদের সঙ্গে খারাপ ব্যবহার করলেও আমরা মানবিকতা প্রদর্শন করি। কেউ অতিরিক্ত কিছু করলে জেলের নিয়ম অনুযায়ী ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

উল্লেখ্য, জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোস্তাফিজুর রহমান সাজুকে গত ৩ ফেব্রুয়ারি বিকেলে রংপুর শহরের সড়ক ও জনপথ কার্যালয়ের কাছ থেকে গ্রেপ্তার করে পুলিশের গোয়েন্দা শাখা (ডিবি)। তার বিরুদ্ধে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে ছাত্র-জনতার ওপর হামলা ও শিক্ষার্থী আশিক হত্যা মামলাসহ একাধিক মামলা রয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ