যাঁর গানে শুনে মুগ্ধ সংগীতশিল্পীরাও, কে এই মমতাজ বেগম
Published: 9th, March 2025 GMT
হারমোনিয়ামের তালে ঘরোয়া আসরে গাইছেন, ‘খুঁজবে আমায় সেদিন, যেদিন আমি থাকব না’। এক প্রৌঢ় শিল্পীর কণ্ঠে গানটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রীতিমতো ছড়িয়ে পড়েছে।
৭ মার্চ গানের ভিডিওটি ফেসবুকে পোস্ট করেছেন গিটারিস্ট রায়হান পারভেজ। সাধারণ শ্রোতারা যেমন তাঁর গায়কির প্রশংসা করছেন, সংগীতশিল্পীরাও তাঁর গায়কিতে লীন।
জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কনকচাঁপা গানের ভিডিওর মন্তব্যের ঘরে লিখেছেন, ‘আহা! কী অসাধারণ কণ্ঠ। অসাধারণ কারুকাজ। সুরের গিরিখাতের পথে ওঠানামা। আমি অভিভূত।’
সেই পৌঢ় শিল্পী মমতাজ বেগম। অনেকটা আড়ালেই ছিলেন তিনি। ৭২ বছরে পা দিয়েছেন, তবু কণ্ঠের ধারটা ধরে রেখেছেন।
ভারতীয় সংগীতশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার গাওয়া ‘খুঁজবে আমায় সেদিন, যেদিন আমি থাকব না’ গানটি মমতাজের খুব প্রিয়; সেই গান গেয়ে শ্রোতাদের কাছে পরিচিতি পেলেন মমতাজ।
আরও পড়ুনটিকটকে ভাইরাল গানটি শুনেছেন?১৯ ফেব্রুয়ারি ২০২৫দুই দিনের ব্যবধানে মমতাজের গানের ভিডিওটি ৩ হাজার ৮০০ বার শেয়ার হয়েছে। ১১ হাজারের বেশি রিঅ্যাক্ট এসেছে, ১ হাজার ৩০০–এর বেশি মন্তব্য জমা পড়েছে। সংগীতশিল্পী স্বপ্নীল সজীব লিখেছেন, ‘কী অসাধারণ, আপনাকে অতলান্ত শ্রদ্ধা।’ পল্লবী সরকার নামের আরেক শ্রোতা লিখেছেন, ‘প্রাণটা জুড়িয়ে গেল।’
মমতাজ বেগমের ভাতিজা সরোদশিল্পী তানিম হায়াত খান মন্তব্যের ঘরে জানান, মমতাজ বেগমের জন্ম ও বেড়ে ওঠা কলকাতায়। সারা জীবন কলকাতায় কাটিয়েছেন। কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশে থাকছেন তিনি।
মমতাজ বেগমের বাবা সেতারশিল্পী ওস্তাদ আলী আহমেদ। আলী আহমেদ ওস্তাদ আয়েত আলী খাঁর সরাসরি শিষ্য ছিলেন। মমতাজের ভাই চঞ্চল খান কণ্ঠশিল্পী হৈমন্তী শুক্লার সঙ্গে দীর্ঘদিন তবলা বাজিয়েছেন।
তানিম হায়াত খান লিখেছেন, ‘অসাধারণ ভালো মানুষ মমতা পিসি। ওনার কলকাতার তোপসিয়ার বাসাতেও গেছি আমি। আর আমরা কলকাতায় গেলেই হোটেলে চলে আসতেন গল্প–আড্ডা দেওয়ার জন্য।। কী যে দারুণ সময় কাটিয়েছি ওনার সাথে।’
আরও পড়ুনচলো ভুলে যাই: কোটা সংস্কার আন্দোলন নিয়ে পারশার গানটি ‘ভাইরাল’০১ আগস্ট ২০২৪.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: কলক ত
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?