কোনো কোনো ব্যাংক এখন মেয়াদি আমানতে ১২ শতাংশ পর্যন্ত সুদ দিচ্ছে। গত কয়েক বছরে এত সুদ পাওয়া যায়নি। অথচ ব্যাংক খাতে আমানতে প্রবৃদ্ধি কমে গত কয়েক বছরের মধ্যে সর্বনিম্ন পর্যায়ে নেমেছে। গত ডিসেম্বর শেষে এক বছরে ব্যাংক খাতে মাত্র ৭ দশমিক ৪৭ শতাংশ আমানত বেড়েছে। আমানতের পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ১৯ লাখ ৫০ হাজার কোটি টাকা। এ অবস্থায় ১৫টি ব্যাংকের ঋণ-আমানত অনুপাত (এডিআর) নির্ধারিত সীমার ওপরে উঠেছে। ২০২৩ সাল শেষে আমানত বেড়েছিল ১১ শতাংশের বেশি।

সংশ্লিষ্টরা জানান, আমানত প্রবৃদ্ধির হিসাবে সুদও যোগ  হয়। ফলে ৭ শতাংশ প্রবৃদ্ধি খুবই কম। আমানত প্রবাহে দূরবস্থার অন্যতম কারণ উচ্চ মূল্যস্ফীতি। আবার কয়েকটি ব্যাংকের প্রতি আস্থার সংকট দেখা দেওয়ায় মানুষ টাকা তুলে নিয়ে ট্রেজারি বিল ও বন্ডে খাটিয়েছে। অবশ্য পরিস্থিতির উন্নতি হতে শুরু করেছে। মূল্যস্ফীতি কমে ফেব্রুয়ারিতে গত ৯ দশমিক ৩৪ শতাংশে নেমেছে। ট্রেজারি বিল-বন্ডের সুদহার কমছে। ব্যাংকাররা জানিয়েছেন, ব্যাংক খাতে উদ্বেগ থাকায় মেয়াদ পূর্তির আগেই আমানত তুলে নেওয়ার কিছু ঘটনা ঘটেছে। আবার নানা অনিয়মের মাধ্যমে বিতরণ করা অনেক ঋণ আর আদায় হচ্ছে না। অনিয়মের মাধ্যমে প্রভাবশালী এবং গত সরকারের ঘনিষ্ঠদের ঋণের নামে বিপুল অর্থ বের করে নেওয়ার বিষয়টি তদন্ত করছে বিভিন্ন সংস্থা। কেন্দ্রীয় ব্যাংক এরই মধ্যে ১১টি ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করে দিয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, গত ডিসেম্বর পর্যন্ত ব্যাংক খাতের মোট ঋণস্থিতি দাঁড়িয়েছে ১৬ লাখ ৭৫ হাজার ১৪১ কোটি টাকা। ঋণ বেড়েছে ৮ দশমিক শূন্য ২ শতাংশ। প্রতি ১০০ টাকা আমানতের বিপরীতে প্রচলিত ধারার একটি ব্যাংক সর্বোচ্চ ৮৭ টাকা ঋণ দিতে পারে। আর ইসলামী ধারার ব্যাংক দিতে পারে ৯২ টাকা। নির্ধারিত এই সীমার ওপরে রয়েছে ১৫টি ব্যাংকের ঋণ। ডিসেম্বর নাগাদ ঋণ-আমানত অনুপাত নির্ধারিত সীমার ওপরে থাকা ব্যাংকগুলোর মধ্যে ৬টিই ছিল বিতর্কিত ব্যবসায়ী এস আলমের নিয়ন্ত্রণে। ব্যাংকগুলো হলো– ফার্স্ট সিকিউরিটি ইসলামী, সোশ্যাল ইসলামী, ইউনিয়ন, ন্যাশনাল, গ্লোবাল ইসলামী ও ইসলামী ব্যাংক বাংলাদেশ। এ ছাড়া এক্সিম, এবি, স্ট্যান্ডার্ড, ইউসিবি, আইএফআইসি, পদ্মা ও প্রিমিয়ার ব্যাংক রয়েছে তালিকায়। আর রাষ্ট্রীয় মালিকানার জনতা ও বেসিক ব্যাংকেরও এডিআর সীমার ওপরে আছে।

সোশ্যাল ইসলামী ব্যাংকের ভারপ্রাপ্ত এমডি নাজমুস সায়াদাত সমকালকে জানান, তাদের নতুন আমানত বাড়ছে। আগের ঋণ থেকে আদায়ও ভালো। তবে আমানতকারীদের একটি অংশ মেয়াদপূর্তির আগেই আমানত তুলে নিয়েছেন। আবার প্রতি মাস শেষে মুনাফা আরোপ হচ্ছে। এসব কারণে বিনিয়োগ-আমানত অনুপাত নির্ধারিত সীমার বেশি। যদিও নিট বিনিয়োগ আগের চেয়ে কমেছে। তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় ব্যাংক এলসির ওপর শতভাগ মার্জিনের যে বিধিনিষেধ দিয়েছিল, তা তুলে নেওয়ার পর আমদানি-রপ্তানি ব্যাপক বাড়ছে। ব্যাংকের সামগ্রিক পরিস্থিতির উন্নতির জন্য তারা কাজ করছেন। তিনি আশা করছেন, শিগগিরই নির্ধারিত সীমায় নামিয়ে আনা সম্ভব হবে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড.

আহসান এইচ মনসুর সম্প্রতি বলেছেন, উচ্চ সুদহার বিনিয়োগের জন্য বড় বাধা নয়। আশানুরূপ আমানত প্রবৃদ্ধি না হওয়া এখনকার ব্যাংক খাতের প্রধান সমস্যা। আস্থা বাড়ানোর মাধ্যমে এ সমস্যার সমাধানের চেষ্টা চলছে।

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: স ম র ওপর প রব দ ধ ইসল ম

এছাড়াও পড়ুন:

জ্বরে ভুগছেন মিরাজ, গলে প্রথম টেস্টে খেলা নিয়ে অনিশ্চয়তা

শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে দুই ম্যাচের টেস্ট সিরিজ দিয়ে শুরু হচ্ছে বাংলাদেশ দলের পূর্ণাঙ্গ সফর। আগামী মঙ্গলবার গলে মাঠে গড়াবে সিরিজের প্রথম টেস্ট। ম্যাচের আগে আজ রোববার প্রথমবারের মতো অনুশীলনে নামে বাংলাদেশ দল। মাঠে দেখা গেছে শান্ত, মুশফিক, নাহিদ রানা, জাকের আলিসহ বেশ কয়েকজন ক্রিকেটারকে।

তবে অনুশীলনে ছিলেন না সদ্য ওয়ানডে অধিনায়ক হওয়া মেহেদী হাসান মিরাজ। জানা গেছে, জ্বরে আক্রান্ত হওয়ায় এদিন বিশ্রামে ছিলেন তিনি।

দিন শেষে অনুশীলনের পর সংবাদমাধ্যমে টাইগারদের প্রধান কোচ ফিল সিমন্স জানিয়েছেন মিরাজের শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে। সিমন্স বলেন, 'হ্যাঁ, মিরাজ জ্বরে ভুগছে। তবে আজ সকালেই তাকে আগের চেয়ে কিছুটা ভালো দেখেছি। চিকিৎসা চলছে। আশা করি আগামীকাল সে অনুশীলনে ফিরতে পারবে।'

তবে মিরাজের না থাকা দলের ভারসাম্যকে প্রভাবিত করতে পারে বলেও জানান কোচ। তার ভাষ্য, 'মিরাজকে নিয়ে আমাদের কিছুটা দুশ্চিন্তা আছে। তবে কারও না থাকা মানেই অন্য কারও জন্য সুযোগ তৈরি হওয়া। আমরা সবাই চাই সে দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠুক। তবে যদি খেলতে না পারে, তাহলে দলে পরিবর্তন আনতে হবে। এটাই বাস্তবতা।'

সম্পর্কিত নিবন্ধ