পরপর দুইটি আইসিসি ইভেন্টে শিরোপা ভারতের। দুটিতেই বিরাট কোহলির বিরাট অবদান। ২০২৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ জেতার পর এবার তার হাতে চ‌্যাম্পিয়নস ট্রফির শিরোপা। ২০২৩ বিশ্বকাপও জেতার সূবর্ণ সুযোগ তৈরি হয়েছিল। কিন্তু রানার্সআপ হয়ে সন্তুষ্ট থাকতে হয়।

এবার অপরাজিত চ‌্যাম্পিয়ন হয়ে ভারত পেয়েছে শিরোপার স্বাদ। সবার সম্মিলিত প্রচেষ্টায় শিরোপা জয় সম্ভব হয়েছে বলে মনে করেন বিরাট। মাঠে তাৎক্ষণিক প্রতিক্রিয়ায় বলেছেন, ‘‘এটা (চ‌্যাম্পিয়নস ট্রফির সফর) অসাধারণ ছিল। অস্ট্রেলিয়ার কঠিন সফরের পর আমরা ঘুরে দাঁড়াতে চেয়েছিলাম। তরুণদের সাথে খেলাটা দারুন ছিল। তারা এগিয়ে আসছে এবং ভারতকে সঠিক পথে নিয়ে যাচ্ছে।’’

বাংলাদেশকে হারিয়ে চ‌্যাম্পিয়নস ট্রফির যাত্রা শুরু করে ভারত। এরপর পাকিস্তান ও নিউ জিল‌্যান্ডকে হারিয়ে গ্রুপ চ‌্যাম্পিয়ন হয়ে যায় সেমিফাইনালে। সেখানেও অদম‌্য ভারত। অস্ট্রেলিয়াকে উড়িয়ে নিশ্চিত করে ফাইনাল। নিউ জিল‌্যান্ডের বিপক্ষে ফাইনালে ফিরতি দেখায় তাদেরকে খুব একটা পাত্তা দেয়নি।

শিরোপা জয়ের পেছনে সবার অবদানের কথা মনে করালেন বিরাট, ‘‘এতদিন খেলার পর, চাপের মধ্যে খেলার জন্য আপনি প্রস্তুত আছেন এটা ভালো দিক। শিরোপা জিততে পুরো দলকে বিভিন্ন খেলায় এগিয়ে আসতে হয়। প্রত‌্যেকে এত প্রভাবশালী ইনিংস খেলেছে এবং ভালো স্পেল করেছে যে সম্মিলিত প্রচেষ্টাই আমাদের জন্য শিরোপা জয় করা সম্ভব হয়েছে।’’

মাহেন্দ্র সিং ধোনির পর বিরাট, জাদেজা, রোহিতের হাত ধরে ভারতের ক্রিকেট এগিয়েছে অনেক। এখন রাহুল, হার্দিক, গিল, শ্রেয়াসরা সেই ব‌্যাটন ধরে টিম ইন্ডিয়াকে প্রতিনিধিত্ব করছে দাপটের সঙ্গে। যোগ‌্য হাতেই ভারতীয় ক্রিকেট আছে বলে বিশ্বাস করেন বিরাট, ‘‘আমি এই ছেলেদের সাথে কথা বলার চেষ্টা করি, আমার অভিজ্ঞতা শেয়ার করি, তাদের বলি যে, আমি এত দিন ধরে কীভাবে খেলেছি। আপনি যখন চলে যাবেন অবশ‌্যই চাইবেন আপনার দলটা যেন ভালো অবস্থানে থাকে। আগেও বললাম, গিল, শ্রেয়াস, রাহুল এবং অন‌্যান‌্যরা প্রভাব বিস্তারকারী ইনিংস খেলেছে। দলটা খুব ভালো হাতে আছে।’’  

ফাইনাল হারলেও নিউ জিল‌্যান্ডকে প্রশংসায় ভাসিয়েছেন বিরাট, ‘‘সীমিত সংখ্যক খেলোয়াড় নিয়ে নিউ জিল্যান্ড কী করতে পারে তা নিয়ে আমরা সবসময়ই অবাক হয়েছি। তারা একটি নির্দিষ্ট পরিকল্পনা নিয়ে মাঠে আসে। প্রতিটি ফিল্ডার জানে বোলার কোথায় বল করবে। তাদের সামর্থ‌্যের উপর তাদের অগাধ বিশ্বাস, সেরা ফিল্ডিং দল। তাদের জন্য বিশাল শুভকামনা। হেরে যাওয়া দলে একজন খুব ভালো বন্ধু (কেন উইলিয়ামসন) । ব‌্যথিত তার জন‌্য। তার জন‌্য আমার কেবল ভালোবাসা।’’

ঢাকা/ইয়াসিন

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ ইন ল

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ