‘হিরো অথবা জিরো’ জাদেজা এবং পান্ডিয়ার ‘প্রতিশোধ’
Published: 10th, March 2025 GMT
পিচের ওপর ট্রফিটি রেখে দাঁড়িয়ে হার্দিক পান্ডিয়া। হাত দিয়ে ট্রফি দেখিয়ে চোখেমুখে তাঁর এমন ভঙ্গি যে এ তো হওয়ারই কথা ছিল!
চ্যাম্পিয়নস ট্রফিতে ভারত এক ম্যাচও হারেনি। শক্তি এবং কন্ডিশনের সুবিধা বিচারে আসলে ভারতেরই চ্যাম্পিয়ন হওয়ার কথা। তবে কাল রাতের ফাইনালটি পান্ডিয়ার জন্য ছিল বিশেষ উপলক্ষ। এটা ছিল তাঁর জন্য প্রতিশোধের ফাইনাল।
আরও পড়ুনগাভাস্কারকে মুখ সামলে কথা বলতে বললেন ইনজামাম৪৮ মিনিট আগে২০১৭ চ্যাম্পিয়নস ট্রফি নিশ্চয়ই মনে আছে? সেবার ফাইনালে পাকিস্তানের কাছে হেরেছিল ভারত। এবার ফাইনালে ৮ বছর আগের সেই হারের ক্ষতমোচন করতে চেয়েছিলেন পান্ডিয়া। নিউজিল্যান্ডকে ৪ উইকেটে হারিয়ে ক্ষতমোচনের পর সাংবাদিকদের ভারতের এই অলরাউন্ডার বলেছেন, ‘এখন যেহেতু জিতেছি, তাই বলতে পারি ২০১৭ ফাইনাল হারের প্রতিশোধ নিলাম। কিন্তু আট বছর অনেক লম্বা সময়, অনেক কিছুই ঘটে গেছে। আমার কাছে ভারতের জয়টাই গুরুত্বপূর্ণ। দেশের সমর্থকেরা খুশি; নিজেদের জায়গা থেকে আমরা এটাই সর্বোচ্চ করতে পারি।’
পাকিস্তান চ্যাম্পিয়নস ট্রফির আয়োজক হলেও প্রতিবেশী দেশটিতে একটি ম্যাচও খেলেনি ভারত। নিজেদের সব ম্যাচ দুবাইয়ে খেলেছে রোহিত শর্মার দল। চ্যাম্পিয়নস ট্রফি শুরুর আগেই ভারত জানিয়ে দিয়েছিল, পাকিস্তানে তাঁরা খেলতে যাবে না। এ কারণে টুর্নামেন্টটি হাইব্রিড পদ্ধতিতে আয়োজন করা হয়।
দুবাইয়ে বসবাসরত পাকিস্তানের ক্রিকেটপ্রেমীদেরও ধন্যবাদ জানিয়েছেন পান্ডিয়া। তবে ভারত কী কারণে পাকিস্তানে খেলতে যায়নি, সেই প্রশ্নের সরাসরি কোনো উত্তর দিতে পারেননি এই তারকা, ‘আমি নিশ্চিত দুবাইয়ে বসবাস করা পাকিস্তানিরা আমাদের পারফরম্যান্স উপভোগ করেছেন। আমরা কেন (পাকিস্তানে) যাইনি, এই প্রশ্নের উত্তর দেওয়ার ক্ষমতা আমার নেই।’
ফাইনালে আগে ব্যাট করে ৭ উইকেটে ২৫১ রান তুলেছিল নিউজিল্যান্ড। তাড়া করতে নেমে ষষ্ঠ উইকেটে লোকেশ রাহুল–হার্দিক পান্ডিয়ার ৩৬ বলে ৩৮ রানের জুটি জয়ে খুব গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে। ৪৭.
পান্ডিয়া যখন ক্রিজে আসেন, ৫ উইকেট হাতে রেখে ৫১ বলে ৪৯ রান দরকার ছিল ভারতের। তখন দ্রুত একটি–দুটি উইকেটের পতনে বিপদ হতেই পারত। রাহুল–পান্ডিয়ার জুটি তা হতে দেয়নি এবং তারপর দলকে আরামসেই জেতান জাদেজা, যেটা তাঁর কাজ।
সেই কাজ ভালোভেবে সেরে ওয়ানডে ক্রিকেটে নিজের ব্যাটিং পজিশন নিয়ে কথা বলেছেন জাদেজা। গতকাল আটে নামলেও এ সংস্করণে ছয়ে ও সাতেই বেশি ব্যাট করেন এই স্পিন অলরাউন্ডার। এসব পজিশনে নেমে ম্যাচ জিতিয়ে আসা কিংবা দলকে ভালো অবস্থানে পৌঁছে দেওয়াই আসল দায়িত্ব। জাদেজার ভাষায় সেটা করতে পারলে ‘হিরো’ না পারলে ‘জিরো।’
ভারত চ্যাম্পিয়ন হওয়ার পর সম্প্রচারকদের জাদেজা বলেছেন, ‘আমার ব্যাটিং পজিশন এমন যে ম্যাচ শেষে হয় নায়ক কিংবা খলনায়ক হব। সৌভাগ্যবশত হার্দিক ও রাহুল শেষ ১০ ওভারে খুব ভালো ব্যাট করে গুরুত্বপূর্ণ জুটি গড়েছে। মাঝে রান তোলা সহজ নয়। কিন্তু আমাদের ওপর থেকে চাপ শুষে নেওয়ার কৃতিত্বটা তাদের।’
সপ্তম উইকেটে রাহুল–জাদেজার ৯ বলে ১৩ রানের অবিচ্ছিন্ন জুটিতে জেতে ভারত। ৩৩ বলে ৩৪ রানে অপরাজিত ছিলেন রাহুল।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্ত সরকারি চাকরিজীবীরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন
সরকারি চাকরিজীবীদের মধ্যে টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডপ্রাপ্তরাও উচ্চতর গ্রেড পাবেন বলে রায় দিয়েছেন আপিল বিভাগ।
বুধবার সকালে ভারপ্রাপ্ত প্রধান বিচারপতি আশফাকুল ইসলামের নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগ এ রায় দেন।
এর ফলে প্রায় ১৫ লাখ সরকারি ও স্বায়ত্তশাসিত প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা এই সুবিধা পাবেন। রিটকারীদের আইনজীবী ব্যারিস্টার ইব্রাহিম খলিল বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে ২০১৭ সালের ফেব্রুয়ারিতে সরকারি চাকরিজীবীদের স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড পাওয়ার বিষয়ে অর্থ মন্ত্রণালয়ের দেওয়া আদেশ অবৈধ ঘোষণা করেছিলেন হাইকোর্ট। সংক্ষুব্ধ চাকরিজীবীদের এ সংক্রান্ত এক রিট আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে এ রায় দিয়েছিলেন হাইকোর্ট।
পরিপত্রে যা বলা হয়েছে
২০১৭ সালের ২১ সেপ্টেম্বর এক পরিপত্রে অর্থ মন্ত্রণালয় জানায়, একই পদে কর্মরত কোনো সরকারি কর্মচারী দুই বা তার চেয়ে বেশি টাইম স্কেল বা সিলেকশন গ্রেড পেয়ে থাকলে নতুন পে-স্কেল অনুযায়ী তিনি উচ্চতর গ্রেড পাবেন না। তবে ইতোমধ্যে একটিমাত্র টাইম স্কেল অথবা সিলেকশন গ্রেড পেলে নতুন স্কেলে শুধু একটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন।
পরিপত্রে আরও উল্লেখ করা হয়, সরকারি কর্মচারীদের প্রদত্ত এসব আর্থিক সুবিধা কোনোক্রমেই ২০১৫ সালের ১৫ ডিসেম্বরের আগে দেওয়া হবে না। পরবর্তী সময়ে পরিপত্রের এ আদেশের বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করেন সংক্ষুব্ধ সরকারি চাকরিজীবীরা।
মূল পে-স্কেলে যা বলা আছে
সরকারি চাকরিতে নিচের স্তরের কর্মচারীদের পদোন্নতির সুযোগ সীমিত। এসব পদোন্নতিবঞ্চিতদের আর্থিক সুবিধা নিশ্চিত করতে বর্তমান সরকার বহুল আলোচিত টাইম স্কেল ও সিলেকশন গ্রেডের পুরোনো প্রথা বাতিল করে। একইসঙ্গে স্বয়ংক্রিয়ভাবে উচ্চতর গ্রেড প্রথা প্রবর্তন করে। নতুন স্কেল অনুযায়ী, কোনো কর্মচারী একই পদে ১০ বছর চাকরি করার পর পদোন্নতি না পেলে স্বয়ংক্রিয়ভাবে দুটি উচ্চতর গ্রেড পাবেন। এরমধ্যে একটি পাবেন চাকরির ১০ বছর পর (১১তম বছরে)। আর অপরটি ১৬ বছর পর অর্থাৎ ১৭তম বছরে।
অর্থ মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে, মূল পে-স্কেলে এ বিধান করা হলেও এ সুবিধা কীভাবে দেওয়া হবে, সে বিষয়ে কোনো দিক-নির্দেশনা ছিল না। এ প্রেক্ষাপটে মূল পে-স্কেলে উল্লেখিত নিয়ম কার্যকর করতে স্পষ্ট করে ব্যাখ্যা দিয়ে একটি পরিপত্র জারি করে অর্থ মন্ত্রণালয়। মূল পে-স্কেল কার্যকর হওয়ার ৩ মাস পর গত বছরের সেপ্টেম্বরে এটি জারি করা হয়।