বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তী সরকার দায়িত্ব নেওয়ার শুরু থেকে আমরা তাদের সমর্থন জানিয়েছি। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে, নারীদের প্রতি অত্যাচার, নির্যাতন ও ধর্ষণের ঘটনার সংবাদ আমরা পাচ্ছি। তাতে ছাত্রসমাজ ও জনগণ শঙ্কিত।’

আজ সোমবার দুপুরে হাইকোর্টের প্রধান ফটকের সামনে মানববন্ধন করেন ছাত্রদলের নেতারা। দেশব্যাপী নারীদের বিরুদ্ধে সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, অনলাইনে হেনস্তা এবং আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সার্বিক অবনতি ও বিচারহীনতার প্রতিবাদে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল কেন্দ্রীয় সংসদ এই মানববন্ধন করে।

ছাত্রদলের সভাপতি রাকিবুল ইসলাম রাকিব আরও বলেন, ‘বিগত সাত মাসে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির যে অবনতি হচ্ছে, তারই ধারাবাহিকতায় নারীদের প্রতি নিপীড়ন, নির্যাতন, ধর্ষণসহ সহিংসতার সংবাদ আমরা প্রতিনিয়ত পাচ্ছি। তাতে ছাত্রদল ব্যথিত, মর্মাহত ও ক্ষুব্ধ।’

ধর্ষক ও নিপীড়নকারীদের বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে সংগ্রাম চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় নেতারা। দিনের পর দিন নারীর প্রতি সহিংসতা ও ধর্ষণের ঘটনা বাড়লেও সরকারের পক্ষ থেকে অতীতের মতো গতানুগতিক ধারার বক্তব্য শোনা যাচ্ছে বলে জানান ছাত্রদলের নেতারা।

মাগুরার সেই শিশুটির ন্যায়বিচার নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত রাজপথে থাকার ঘোষণা দিয়েছে ছাত্রদল। অতি দ্রুত অপরাধীদের বিচার নিশ্চিত করার আহ্বান জানানো হয়েছে।

ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির সাধারণ সম্পাদক নাসির উদ্দীন বলেন, ২০২০ সালে ধর্ষণের শাস্তি হিসেবে মৃত্যুদণ্ড ঘোষণা করা হয়েছিল। কিন্তু বিচার নিশ্চিত না হওয়ায় ধর্ষণের কার্যক্রম বেড়েই চলেছে। ছাত্রদল আহ্বান জানাচ্ছে, অন্তর্বর্তী সরকারকে অবশ্যই আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি কঠোর করতে হবে।

এ দেশের কিছু মানুষ নারীদের পোশাক নিয়ে বারবার কথা বলে উল্লেখ করে নাসির উদ্দীন বলেন, ‘নারীদের পোশাক যদি সমস্যা হতো, তাহলে কীভাবে আমার আট বছরের বোন ধর্ষণের শিকার হয়, ছাত্রদল প্রশ্ন রাখতে চায়। বাংলাদেশে গত ১৫ বছরে যে বিচারহীনতার সংস্কৃতি গড়ে উঠেছে, সে জন্য সাত বা আট মাস ধরে নারীর প্রতি যে সহিংসতা, যে নির্যাতন, সেগুলো কিন্তু ক্রমান্বয়ে বৃদ্ধি পাচ্ছে।’

মানববন্ধনে ছাত্রদলের কেন্দ্রীয় কমিটির নেতারাসহ বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয় কমিটির নেতা-কর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ছ ত রদল র

এছাড়াও পড়ুন:

নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা

নড়াইলের কালিয়ায় মোটরসাইকেল চালক রফিকুল মোল্যার (৪০) লাশ উদ্ধারের ঘটনায় মামলা হয়নি। এ ঘটনায় নিজেদের নির্দোষ দাবি করেছে প্রতিপক্ষ। গতকাল বুধবার সকালে আয়োজিত মানববন্ধনে তারা অভিযোগ করেন, তাদের পক্ষের ফরিদ হত্যা মামলা দুর্বল করতে ও ফাঁসাতে পরিকল্পিতভাবে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। 

নিহত রফিকুল মোল্যা উপজেলার কাঞ্চনপুর গ্রামের বাসিন্দা। মঙ্গলবার বেলা ১১টার দিকে একই গ্রামের প্রতিপক্ষ রিকাইল শেখের বাড়ির পেছনে তাঁর লাশ পাওয়া যায়। নড়াইল সদর হাসপাতালের মর্গে ময়নাতদন্ত শেষে রাতেই রফিকুলের দাফন হয়েছে।

স্থানীয় সূত্র জানায়, আধিপত্য বিস্তার নিয়ে একই গ্রামের মিলন মোল্যার লোকজনের সঙ্গে আফতাব মোল্যার পক্ষের বিরোধ দীর্ঘদিনের। এর জেরে ১১ এপ্রিল দু’পক্ষের সংঘর্ষে খুন হন ফরিদ মোল্যা (৫৭)। এ ঘটনায় বাবলা-হাসলা ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হক পিকুলকে প্রধান আসামি করে ৪৫ জনের বিরুদ্ধে কালিয়া থানায় হত্যা মামলা হয়। নিহত রফিকুল মামলাটির ১৮ নম্বর আসামি। এই দু’পক্ষের মধ্যে ২০২৪ সালের ১ ও ৪ সেপ্টেম্বর দুই দফায় সংঘর্ষ হয়। 

বাবলা-হাসলা ইউপি চেয়ারম্যান মোজাম্মেল হকের লোকজনের বিরুদ্ধে এ হামলায় জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে। এর পরই চলতি মাসে দুটি হত্যাকাণ্ড ঘটল। স্থানীয় বাসিন্দাদের দেওয়া তথ্যমতে, ফরিদ মোল্যা হত্যার জেরে আসামি পক্ষের ২৫টি পরিবারের প্রায় ৫০টি বাড়িতে আগুন, ভাঙচুর ও লুটপাটের ঘটনা ঘটে। এ ঘটনায় ২৭ এপ্রিল রফিকুলের মা ফাতেমা বেগম কালিয়া থানায় মামলা করেন। এতে আসামি করা হয় প্রতিপক্ষ আফতাব মোল্যা পক্ষের লোকজনকে। এর এক দিন পরই তাঁর ছেলের লাশ পাওয়া যায়। 

রিকাইল শেখের বাড়ির সামনে তাঁর পরিবার ও এলাকাবাসীর ব্যানারে বুধবার সংবাদ সম্মেলন ও মানববন্ধনের আয়োজন করা হয়। এতে বক্তব্য দেন মুস্তারি বিল্লাহ, রিকাইল শেখের মেয়ে ইভা খানম, ফিরোজ মোল্যা, হানেফ মোল্যা, আব্দুল গফুর ও জামিলা বেগম। তারা অভিযোগ করেন, প্রতিপক্ষকে ফাঁসাতে ও ফরিদ হত্যা মামলা দুর্বল করতে পরিকল্পিতভাবে রফিকুলকে হত্যা করা হয়েছে। উন্নত প্রযুক্তি ব্যবহার করে তদন্ত করলে ঘটনার প্রকৃত রহস্য বেরিয়ে আসবে। 

এ সময় বক্তারা দাবি করেন, রফিকুল হত্যার জেরে মঙ্গলবার রাতে ওই গ্রামের পূর্বপাড়া হামলা হয়। এতে বেশ কয়েকটি বাড়িতে ভাঙচুর চালিয়ে ২০০ মণ ধান ও ১৫টি গরু লুট করা হয়েছে। 

রফিকুলের শ্যালক শামিম আহমেদ প্রতিপক্ষের অভিযোগ অস্বীকার করেন। তিনি বলেন, ‘আমরা শোকাহত পরিবার নিয়ে ব্যস্ত। কারা কোথায় কী করছে (ভাঙচুর), তা আমাদের জানা নেই।’ রফিকুল হত্যায় তারা এখনও মামলা করেননি বলেও জানান।

রফিকুলের স্ত্রী অজুহা বেগমের ভাষ্য, সোমবার মাগরিবের আজানের পর স্বামীর সঙ্গে ফোনে সর্বশেষ কথা হয় তাঁর। রাত ৩টার দিকে কল দিলে ফোন নম্বরে সংযোগ পাননি। মঙ্গলবার সকালে স্বামীর লাশ উদ্ধারের খবর পান। 

কালিয়া থানার ওসি আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, রফিকুল হত্যার বিষয়টি রহস্যজনক। এ ঘটনায় এখনও মামলা হয়নি। ময়নাতদন্তের প্রতিবেদনের ভিত্তিতে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে। ওই এলাকায় কোনো বাড়ি ভাঙচুর বা লুটপাটের ঘটনা ঘটেনি। কিছু লোক গবাদি পশু ও বাড়ির মালপত্র সরিয়ে নিয়েছেন বলে জেনেছেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • করিডোরের জন্য দু’দেশের সম্মতি লাগবে: জাতিসংঘ 
  • সামাজিক মাধ্যমে ভুল তথ্যের ৪৫% রাজনৈতিক
  • নির্দোষ দাবি প্রতিপক্ষের, হয়নি মামলা
  • নির্বাচনে র‌্যাব-পুলিশের সঙ্গে সশস্ত্র বাহিনী যুক্ত করাসহ ১২ প্রস্তাব
  • ‘কৃষির উন্নয়নে জাপানের অংশীদারিত্ব আরও বৃদ্ধি করা হবে’
  • চলতি বছর বিশ্বে মন্দার ঝুঁকি বেড়েছে, জরিপে অর্থনীতিবিদদের শঙ্কা
  • ডিবির অভিযানে আ.লীগের সাবেক এমপিসহ গ্রেপ্তার ৭
  • পুলিশ সপ্তাহ শুরু মঙ্গলবার, নির্বাচনী নির্দেশনা পাবে আইনশৃঙ্খলা ব
  • রাখাইনের জন্য করিডোরে বাংলাদেশের নিরাপত্তা ঝুঁকি কতটুকু
  • সাবেক আইজিপিসহ আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর শীর্ষ কর্মকর্তাদের তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের সময় আবার বাড়ল