পবিত্র রমজান মাসে অনেক অন্তঃসত্ত্বা নারীই রোজা রাখতে চান। এ সময় তাঁদের সঠিক যত্ন অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। কারণ, এ সময় রোজা রাখলে তাঁদের শরীরে পরিবর্তন আসতে পারে।

চিকিৎসকের পরামর্শ গ্রহণ

অন্তঃসত্ত্বা নারীদের রোজা রাখার আগে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত। বিশেষত, যদি তাঁদের কোনো স্বাস্থ্যসমস্যা থাকে—যেমন উচ্চ রক্তচাপ, ডায়াবেটিস বা গর্ভাবস্থায় কোনো জটিলতা। এসব ক্ষেত্রে রোজা রাখায় বিধিনিষেধ থাকতে পারে।

সঠিক পুষ্টি গ্রহণ

অন্তঃসত্ত্বা নারীর জন্য সঠিক পুষ্টি খুবই গুরুত্বপূর্ণ, বিশেষত রমজান মাসে। সাহ্‌রিতে শক্তিদায়ক ও পুষ্টিকর খাবার খাওয়া উচিত, যেমন ডিম, দই, বাদাম, সবজি এবং প্রোটিনসমৃদ্ধ খাবার। ইফতারে ফ্যাট, প্রোটিন এবং শর্করাসমৃদ্ধ খাবার খাওয়া উচিত, যেমন স্যুপ, সালাদ, মাংস, ভাত ও ফল। এ ছাড়া পর্যাপ্ত পরিমাণে পানি পান করা দরকার। কারণ, রোজার সময় পানিশূন্যতা থেকে শরীর দুর্বল হতে পারে। সাহ্‌রি ও ইফতার—দুই সময়ে পানি ও শরবত পান করা উচিত।

পর্যাপ্ত বিশ্রাম

অন্তঃসত্ত্বা নারীরা রোজা রাখলে ক্লান্তি অনুভব করতে পারেন, বিশেষত দিনের বেলা। তাই তাঁদের পর্যাপ্ত বিশ্রাম নেওয়া উচিত। রাতে পর্যাপ্ত ঘুমানো ও দিনে কিছু সময় বিশ্রাম নেওয়া শরীরের শক্তি পুনরুদ্ধার করতে সাহায্য করবে। একটানা বেশি সময় না জেগে, শরীরের জন্য নিয়মিত বিশ্রাম অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।

শারীরিক অবস্থা পর্যবেক্ষণ

রোজা রাখলে শারীরিক অবস্থা খুব ভালোভাবে পর্যবেক্ষণ করা উচিত। যদি শরীরে কোনো অস্বস্তি বা দুর্বলতা, মাথাব্যথা, বমি বমি ভাব বা মাথা ঘোরা অনুভূত হয়, তবে উচিত রোজা ভেঙে বিশ্রাম নেওয়া এবং প্রয়োজনে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া।

মানসিক চাপ থেকে মুক্তি

অন্তঃসত্ত্বা নারীদের মানসিক চাপে হরমোনাল পরিবর্তন হতে পারে, যা গর্ভাবস্থার জন্য অস্বাস্থ্যকর হতে পারে। তাই তাঁদের উচিত মানসিক শান্তি বজায় রাখা ও চাপমুক্ত থাকা।

 

পর্যাপ্ত পানি পান

পর্যাপ্ত পানি পান করা অত্যন্ত জরুরি। সাহ্‌রি ও ইফতারে পর্যাপ্ত পানি পান করা উচিত; যাতে শরীর আর্দ্র থাকে এবং শরীরের সঠিক কার্যক্রম বজায় থাকে। পানি ও শরবত গ্রহণ করলে শরীর সতেজ থাকে এবং ত্বকও ভালো থাকে।

স্বাস্থ্য পরীক্ষা

অন্তঃসত্ত্বা নারীদের নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। তাঁদের উচিত, নিয়মিত গাইনোকোলজিস্ট বা চিকিৎসকের কাছে গিয়ে গর্ভস্থ শিশুর অবস্থান এবং মায়ের স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো; যাতে যেকোনো ধরনের ঝুঁকি এড়িয়ে চলা যায়।

 

রোজা না রাখার বিকল্প

যদি অন্তঃসত্ত্বা নারী শারীরিক কারণে রোজা রাখতে না পারেন, তবে ইসলামি বিধানে তাঁর রোজা না রাখার অনুমতি রয়েছে।

ডা.

শারমিন আব্বাসি, বন্ধ্যত্ববিশেষজ্ঞ ও গাইনোকোলজিস্ট

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর য প ত প চ ক ৎসক র প ন কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ