রাজশাহীর চিকিৎসকদের প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের ঘোষণা
Published: 11th, March 2025 GMT
হাইকোর্টের পূর্ণাঙ্গ রায় প্রকাশ ও পাঁচদফা দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত অনির্দিষ্টকালের জন্য প্রাইভেট প্র্যাকটিস বন্ধের ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহীর সব চিকিৎসক।
মঙ্গলবার দুপুর সোয়া ১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজের সামনে বিক্ষোভ থেকে এ ঘোষণা দেন চিকিৎসকরা।
চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক ডা.
এর আগে চিকিৎসকরা রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল কমপ্লিট শাটডাউন কর্মসূচির পাশাপাশি বহির্বিভাগের চিকিৎসা সেবা বন্ধ করে দেন। এরপর বেলা সাড়ে ১১টার দিকে রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের বহির্বিভাগের গেটের সামনে মানববন্ধন ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে ইন্টার্ন চিকিৎসকরা।
এদিকে ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবির সঙ্গে একাত্মতা প্রকাশ করে ক্লাস-পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছেন রাজশাহী মেডিকেল কলেজের শিক্ষার্থীরা। সঙ্গে যোগ দিয়েছেন সিনিয়র চিকিৎসকরাও।
আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা বলেন, রাজশাহী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের সব ইন্টার্ন চিকিৎসক কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা করেছে, দাবি না আদায় হওয়া পর্যন্ত তা অব্যাহত থাকবে।
ইন্টার্ন চিকিৎসকদের দাবিগুলো হচ্ছে-
১। এমবিবিএস কিংবা বিডিএস ডিগ্রি ব্যতীত কেউ নামের আগে ডাক্তার শব্দ ব্যবহার না করা।
২। বিএমডিসির বিরুদ্ধে করা রিট প্রত্যাহার, আন্তর্জাতিক মান অনুযায়ী ওটিসি ড্রাগ লিস্ট আপডেট করা।
৩। স্বাস্থ্যখাতে চিকিৎসকের সংকট নিরসন, এমটিএস ও নিম্নমানের মেডিকেল কলেজ বন্ধ করা ও চিকিৎসক সুরক্ষা আইন বাস্তবায়ন।
৪। দ্রুত ১০ হাজার ডাক্তার নিয়োগ দিয়ে শূন্যপদ পূরণ করতে হবে।
৫। ডাক্তারদের বিসিএসের বয়সসীমা ৩৪ বছর পর্যন্ত করার দাবি।
আগামীকাল রায়ে একমত না হলে আরো কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে হল ঘোষণা দেন শিক্ষার্থীরা।
কর্মসূচিতে রামেক অধ্যক্ষ ডা. খন্দকার ফয়সাল আলম, মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. আজিজুল হক আজাদসহ সিনিয়র শিক্ষকরা উপস্থিত ছিলেন।
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: চ ক ৎসক ম ড ক ল কল জ চ ক ৎসকদ র চ ক ৎসকর
এছাড়াও পড়ুন:
মুসলিম নারী চিকিৎসকেরা হারিয়ে গেলেন কেন
কর্দোভার সংকীর্ণ গলিতে এক নারী দ্রুত পা চালিয়ে যাচ্ছেন। তাঁর হাতে একটি কাঠের বাক্স, ভেতরে হাতে তৈরি মলম ও ঔষধি গাছ। তিনি আল-জাহরাভির কন্যা, একজন ধাত্রী, যিনি প্রসূতি মায়েদের সেবা করছেন। তাঁর কাজ শুধু শারীরিক নিরাময় নয়, বরং একটি সম্প্রদায়ের আস্থা ও আশার প্রতীক।
মধ্যযুগের মুসলিম বিশ্বে মুসলিম নারী চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যকর্মীরা এমন অগণিত গল্প রচনা করেছেন, যা চিকিৎসাবিজ্ঞান ও সমাজের ওপর দীর্ঘমেয়াদি প্রভাব ফেলেছে। তৃতীয় ও শেষ পর্বে আমরা তাঁদের প্রভাব, আধুনিক স্বাস্থ্যসেবার সঙ্গে তুলনা এবং তাদের ঐতিহাসিক স্বীকৃতির চ্যালেঞ্জ নিয়ে আলোচনা করব।
চিকিৎসাবিজ্ঞানে নারীদের ছাপমুসলিম নারী চিকিৎসকদের কাজ মুসলিম বিশ্বের চিকিৎসাব্যবস্থাকে একটা কাঠামো দিয়েছে। রুফায়দা আল-আসলামিয়া (রা.)-এর মোবাইল হাসপাতালের ধারণা আধুনিক ফিল্ড হাসপাতালের পূর্বসূরি। তাঁর তাঁবু যা মদিনার মসজিদে নববিতে স্থাপিত হয়েছিল, স্বাস্থ্যসেবার মডেল হিসেবে কাজ করেছে।
২০২০ সালে কোভিড-১৯ মহামারিতে মসজিদগুলো চিকিৎসা ও টিকাকরণ কেন্দ্র হিসেবে ব্যবহৃত হয়, যা রুফায়দার মসজিদভিত্তিক তাঁবুর সঙ্গে সাদৃশ্যপূর্ণ।এই মডেল পরবর্তী সময়ে আব্বাসীয় যুগের বিমারিস্তানে (হাসপাতাল) প্রতিফলিত হয়, যেখানে শিহাবুদ্দিন আল-সায়িগের (মৃ. ১৬২৭ খ্রি.) কন্যার মতো নারীরা নেতৃত্ব দিয়েছেন। (আল-সাঈদ, আত-তিব ওয়া রায়িদাতুহু আল-মুসলিমাত, পৃ. ১৮৯, আম্মান: দারুল ফিকর, ১৯৮৫)
নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে। আল-জাহরাভির (৯৩৬-১০১৩ খ্রি.) গ্রন্থ আত-তাসরিফ নারী চিকিৎসকদের জন্য শিক্ষার ভিত্তি ছিল, বিশেষ করে প্রসূতি ও গাইনোকোলজিতে। এই গ্রন্থ ইউরোপে অনূদিত হয়ে রেনেসাঁসের চিকিৎসাবিজ্ঞানে প্রভাব ফেলেছে। ১৯০৮ সালে গ্রন্থটির আধুনিক সংস্করণ প্রকাশ পেয়েছে কায়রো ‘দারুল কুতুব’ থেকে।
আন্দালুসে উম্ম হাসান বিনত কাজি তানজালি (১৪ শতক) চিকিৎসাশিক্ষার মাধ্যমে নতুন প্রজন্ম তৈরি করেন, যা শিক্ষার ক্ষেত্রে নারীদের ভূমিকাকে প্রতিষ্ঠিত করেছে। (আবু বকর ও আল-সাদি, আন-নিসা ওয়া মিহনাত আল-তিব, পৃ. ২১২, কায়রো: দারুল কুতুব, ১৯৯৯)
এই কাজগুলো আধুনিক পাবলিক হেলথ সিস্টেমের পূর্বসূরি হিসেবে বিবেচিত হয়।
আরও পড়ুনযে নারী সাহাবির বিয়ের পরামর্শদাতা ছিলেন রাসুল (সা.)২৫ সেপ্টেম্বর ২০২৩নারীদের ওষুধ তৈরি ও শল্যচিকিৎসার কাজ চিকিৎসাবিজ্ঞানে নতুন দিগন্ত উন্মোচন করেছে