ইফতারে অংশ নিয়ে বিপাকে থালাপাতি, পুলিশের কাছে অভিযোগ
Published: 11th, March 2025 GMT
দক্ষিণী সিনেমার সুপারস্টার থালাপতি বিজয় সিনেমা ছাড়ার ঘোষণা দিয়ে এখন পুরোপুরি রাজনীতিবিদ। ২০২৪ সালের ফেব্রুয়ারিতে রাজনৈতিক দলট গঠনের ঘোষণা দিয়ে তিনি ২০২৬ সালের তামিলনাড়ু বিধানসভা নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতার পরিকল্পনা করছেন।
সম্প্রতি রমজান মাস উপলক্ষে অভিনেতার একটি ভিডিও প্রকাশিত হয়েছে। ভিডিওতে বিজয়কে চেন্নাইয়ে একটি ইফতার পার্টিতে অংশ নিতে দেখা গেছে। এই ভিডিওতে বিজয়কে সাদা কুর্তা এবং মাথায় টুপি পরা অবস্থায় দেখা যায়, এমনকি তিনি দোয়াতেও অংশ নিয়েছেন। ভিডিওটি সংবাদ সংস্থা এএনআই তাদের অফিসিয়াল এক্স অ্যাকাউন্টে শেয়ার করেছে। এতে দেখা যাচ্ছে, বিজয় তার দল তামিলাগা ভেট্টি কাজাগাম এর সঙ্গে এই ইফতার পার্টির আয়োজন করেছেন।
থালাপতি বিজয়ের এই ভিডিও ভক্তদের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করেছে। অনেকে তার এই সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতির প্রয়াসের প্রশংসা করেছেন। ভক্তরা সামাজিক মাধ্যমে তার এই কাজকে সাহসী এবং অন্তর্ভুক্তিমূলক বলে উল্লেখ করেছেন। কিন্তু একই সঙ্গে, কিছু নেটিজেনরা তাকে ট্রোল করতেও ছাড়েননি।
এবার ভারতীয় গণমাধ্যমে নতুন খবর, এই ইফাতারে অংশ নেওয়ায় মুসলিম সম্প্রদায়কে অপমান করার অভিযোগ উঠেছে দক্ষিণী তারকার বিরুদ্ধে। ইতিমধ্যেই তামিলনাড়ু সুন্নত জামাত চলচ্চিত্র তারকা বিজয়ের বিরুদ্ধে চেন্নাই পুলিশ কমিশনারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।
তামিলনাড়ু সুন্নত জামাত এর কোষাধ্যক্ষ সৈয়দ কওস আইনি পদক্ষেপ করছেন। সাংবাদিকদের তিনি জানিয়েছেন, “বিজয় আয়োজিত ইফতারে মুসলিম সম্প্রদায়ের মানুষকে অপমান করা হয়েছে। রোজা বা ইফতারের সঙ্গে মদ্যপ ও গুন্ডাদের কোনও সম্পর্ক নেই। আমরা মনে করি, ওই অনুষ্ঠানে এদের উপস্থিতি মুসলিমদের পক্ষে অপমানজনক।”
সৈয়দ কওস দাবি করেছেন, গোটা অনুষ্ঠানটির আয়োজন করা হয়েছিল ‘খারাপ’ ভাবে। তাঁদের কাছে বিজয় একবারও দুঃখপ্রকাশ করেননি বলে অভিযোগ করেছেন তিনি। তাঁদের অভিযোগ, বিজয়ের ‘বিজাতীয় রক্ষী’র সকলেই তাঁদের অপমান করেছেন। আমন্ত্রিতদের সঙ্গে ‘গরুর মতো ব্যবহার’ করা হয়েছে বলেও তাঁর দাবি। কওস বলেন, “এ ধরনের ঘটনা যাতে আগামী দিনে ফের না ঘটে সে জন্য বিজয়ের বিরুদ্ধে আইনি পদক্ষেপ করা হচ্ছে। আমরা কিন্তু প্রচারের আলোয় আসার জন্য অভিযোগ দায়ের করিনি।” ওই ইফতারে কিছু মানুষের মদ্যপান করে উপস্থিত হওয়াতেই আপত্তি তুলেছেন আমন্ত্রিতদের একাংশ।
বিজয়ের রাজনৈতিক প্রবেশ তামিলনাড়ুতে ঝড় তুলেছে। তার দল তামিলাগা ভেট্টি কাজাগাম গঠনের পর প্রথম সমাবেশে তিন লক্ষ মানুষের উপস্থিতির দাবি করা হয়েছিল। এটি তার জনপ্রিয়তা এবং রাজনৈতিক প্রভাবের একটি বড় প্রমাণ।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: থ ল প ত ব জয় কর ছ ন র জন ত অপম ন ইফত র
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?