রাঙামাটিতে প্রসবকালে বন্য হাতি ও শাবকের মৃত্যু
Published: 11th, March 2025 GMT
রাঙামাটির রাজস্থলী উপজেলায় ২নং গাইন্দ্যা ইউনিয়নের কাইথাক পাড়া এলাকার বাগানে প্রসবকালে অসুস্থ হয়ে মা বন্য হাতি ও শাবকের মৃত্যু হয়েছে।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বিকালে ময়নাতদন্ত শেষে মা হাতি ও শাবকটিকে মাটিচাপা দেওয়া হয়।
স্থানীয় কয়েকজন বাসিন্দা জানান, গত কয়েক সপ্তাহ ধরে রাজস্থলী উপজেলার গাইন্দ্যা ইউনিয়নের গহীন বনের হাজী পাড়া, তংবসি পাড়া, নোয়া পাড়া সর্বশেষ কাইথাক পাড়া এলাকায় এক দল বন্য হাতি আসে। ধারণা করা হচ্ছে, দুই দিন আগে কাইথাক পাড়া এলাকায় হাতিটির প্রসবকালে শাবকসহ মারা গেছে।
রাজস্থলী উপজেলা প্রাণিসম্পদ বিভাগের সহকারী চিকিৎসক চিরজিৎ চাকমা বলেন, “মা হাতিটি প্রসবকালে শাবক দেওয়ার সময় যন্ত্রণায় কাতর হয়ে অসুস্থ হয় পড়ে। পরে শাবকসহ হাতিটি মারা যায়।”
কাপ্তাই পাল্পউড বাগান বিভাগের রাজভিলা রেঞ্জ কর্মকর্তা ফারজ আল আমিন বলেন, “উপজেলার কাইথাক পাড়া পাহাড়ে একটি হাতি মারা যাওয়ার খবর পেয়ে বেলা একটার দিকে বন বিভাগ, প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সহকারী চিকিৎসকসহ ঘটনাস্থলে যাই। পরে ময়নাতদন্ত শেষে হাতি ও শাবকটি মাটি চাপা দেওয়া হয়।”
তিনি আরো বলেন, “হাতির শরীরে কোনো গুলি বা আঘাতের চিহ্ন নেই। সেখানে বিদ্যুতের ফাঁদও নেই। চিকিৎসকেরা বলছেন, বাচ্চা প্রসবকালে অসুস্থ হয়ে হাতিটি মারা গেছে।”
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কার্যালয়ের সহকারী চিকিৎসক চিরঞ্জিৎ চাকমা বলেন, “হাতিটি বাচ্চা দেওয়ার সময় যন্ত্রণায় চটপট করতে করতে মা হাতি ও বাচ্চাসহ মারা গেছে। এর বয়স ২০ বছরের উপরে হতে পারে। মৃত হাতিটির ওজন প্রায় তিন টন, দৈর্ঘ্য ১০/১২ ফুট। দুই দিন আগে হাতিটি মারা গেছে বলে ধারণা করা হচ্ছে।”
এ ব্যাপারে রাজস্থলী থানায় বন বিভাগের উদ্যাগে সাধারণ ডায়েরি করা হয়েছে বলে বন বিভাগ নিশ্চিত করেছেন।
ঢাকা/শংকর/এস
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?