নিপীড়ন, ধর্ষণের বিরুদ্ধে প্রয়োজনে আবার যুদ্ধ হবে বলে জানিয়েছেন জাতীয় কবিতা পরিষদের সভাপতি কবি মোহন রায়হান। তিনি বলেন, ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধ করে আমরা দেশ স্বাধীন করেছিলাম, সাম্য, ন্যায়, মানবিক মর্যাদার জন্য কিন্তু আজ সমস্ত মানবিক মর্যাদা ভুলুষ্ঠিত নারী ও শিশুর প্রতি এই জঘন্য সহিংসতায়। প্রয়োজনে এই ধর্ষক আর নিপীড়কদের বিরুদ্ধে বাংলাদেশে আরেকবার যুদ্ধ হবে- ন্যায়ের যুদ্ধ, সম্প্রীতির যুদ্ধ, সম অধিকারের যুদ্ধ।

মঙ্গলবার সকালে জাতীয় প্রেসক্লাবের সম্মুখে শিশু ও নারীর প্রতি চলমান সহিংসতা, নিপীড়ন, ধর্ষণ, হত্যার বিরুদ্ধে এক প্রতিবাদ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন। সমাবেশ শেষে এক বিক্ষোভ মিছিল অনুষ্ঠিত হয়।

কবি মোহন রায়হানের সভাপতিত্বে ও যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক কবি শাহীন রেজার সঞ্চালনায় এ প্রতিবাদী কর্মসূচিতে কবি-সাহিত্যিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশগ্রহণ করেন। 

নারী ও শিশু ধর্ষক ও নিপীড়কদের অবিলম্বে গ্রেপ্তার ও দ্রুততম সময়ের মধ্যে সর্বোচ্চ শাস্তির দাবিতে এ সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, কবি মোহন রায়হান, কবি রেজাউদ্দিন স্টালিন, কবি শহীদুল্লাহ ফারায়জি, কবি শাহীন রেজা, কবি শ্যামল জাকারিয়া, কবি এবিএম সোহেল রশীদ, কবি ইউসুফ রেজা, কবি আসাদ কাজল, কবি মিতা আলী, কবি নূরুন্নবী সোহেল, কবি টিমুনি খান রীনো, কবি জামিল জাহাঙ্গীর, কবি রোকন জোহর, মুক্তা পারভীন প্রমুখ। 

কবিতা পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রেজাউদ্দিন স্টালিন বলেন, অন্তবর্তীকালীন সরকারকে অনুরোধ করব দ্রুততম সময়ের মধ্যে এই সমস্ত দুস্কৃতকারী, অন্যায়কারী, এবং স্বৈরাচারের পক্ষের নৈরাজ্য সৃষ্টিকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির ব্যবস্থা করা হোক। 

সভাপতির বক্তব্যে কবি মোহন রায়হান বলেন, আমরা সারা বাংলাদেশের মানুষকে আবারও জেগে উঠার আহ্বান জানাই-নারী ও শিশুর প্রতি এই পৈশাচিক বর্বরতার বিরুদ্ধে। জাতীয় কবিতা পরিষদের কবিরা অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হওয়া পর্যন্ত ঘরে ফিরবে না।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ