ঢাবির এফআর হলে নিম্নমানের ইফতার পরিবেশনের অভিযোগ
Published: 12th, March 2025 GMT
ইফতারে নিম্নমানের খাবার পরিবেশন ও আইটেম কম দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) স্যার এএফ রহমান হলের প্রাধ্যক্ষ কাজী মাহফুজুল হক সুপণের বিরুদ্ধে।
পরে শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভের মুখে আগামী শনিবার দিবাগত রাতে হল প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেহরির আয়োজন করার আশ্বাস দেন।
বুধবার (১২ মার্চ) বিকেলে খাবার বিতরণের পরপরই বিক্ষোভ শুরু করেন হলের শিক্ষার্থীরা। খাবারের মান নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে হলের সব শিক্ষার্থী এ বিক্ষোভে অংশগ্রহণ করেন।
আরো পড়ুন:
কিউএস এর ৫৫০ বিশ্ববিদ্যালয়ের তালিকায় ঢাবি
শাহবাগে ইনকিলাব মঞ্চের সঙ্গে থাকবে জাতীয় বিপ্লবী পরিষদ
এ সময় ‘প্রভোস্টের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘দুর্নীতিবাজের কালো হাত, ভেঙে দাও গুড়িয়ে দাও’, ‘দুর্নীতির বিরুদ্ধে ডাইরেক্ট অ্যাকশন’, ‘ভুয়া ভুয়া’ ইত্যাদি স্লোগান দিতে দেখা যায় তাদের।
স্যার এএফ রহমান হলের শিক্ষার্থীরা জানান, প্রতি বছর রমজানে একটি নির্দিষ্ট দিনে হলগুলোর পক্ষ থেকে ইফতার আয়োজন করা হয়। এবারো সেই নিয়মের ব্যতিক্রম হয়নি। তবে, এবারের ইফতার আয়োজনটি অত্যন্ত নিম্নমানের ছিল। বিশেষ করে বিরিয়ানি ও ছোলা খাওয়ার উপযুক্ত ছিল না। মেন্যুতে পানি, জুস এবং কোমল পানীয়ের কোনো ব্যবস্থা ছিল না। এছাড়া, কোনো ধরনের ফলমূল দেওয়া হয়নি। অন্যান্য হলগুলোর সঙ্গে তুলনা করলে স্পষ্টভাবে বোঝা যায়, আমাদের হলের ইফতারের মান অনেক কম ছিল।
শিক্ষার্থীরা আরো জানান, আবাসিক ও অনাবাসিক মোট ১ হাজার ৬২৬ শিক্ষার্থীর জন্য ইফতার আয়োজনের জন্য অর্থ বরাদ্দ দেওয়া হয়েছিল। তবে হলের মধ্যে আবাসিক শিক্ষার্থীর সংখ্যা মাত্র ৮০০ জন। এরই পরিপ্রেক্ষিতে শুধু আবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্যই খাবারের ব্যবস্থা করা হয়। অথচ অনাবাসিক শিক্ষার্থীদের জন্য কোনো খাবারের ব্যবস্থা করা হয়নি। ফলে তাদের জন্য কোনো অর্থ ব্যয়ও করা হয়নি। তাহলে খাবারের মান এত কম কেন, জানতে চেয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
অভিযোগের বিষয়ে প্রাধ্যক্ষ কাজী মাহফুজুল হক সুপণকে একাধিকবার ফোন করেও পাওয়া যায়নি। তবে তিনি গণমাধ্যমকে বলেছেন, “১০ থেকে ১২ জন শিক্ষার্থী এসে জানালো, তারা খাবার নিয়ে খুশি না। আমরা আগে রোজা আর পহেলা বৈশাখের খাবার একসঙ্গে দিতাম। এ বছরে দুটা ভিন্ন হয়ে গেছে।”
তিনি আরো বলেন, “আমরা পহেলা বৈশাখের খাবার আলাদা দিব। পহেলা বৈশাখে যে খাবারটা দেই- একটা মুরগির রোস্ট, একটা সেদ্ধ ডিম ও একটা দই। এটা আমরা ইফতারের সঙ্গে দেইনি।”
ঢাকা/সৌরভ/মেহেদী
.উৎস: Risingbd
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?