অনলাইনে সাশ্রয়ী মূল্যে ফ্লাইট বুক করার কার্যকর ৫ উপায়
Published: 13th, March 2025 GMT
সবচেয়ে আরামদায়ক ও দ্রুত ভ্রমণের জন্য ফ্লাইটই সেরা, এ বিষয়ে দ্বিমত নেই বললেই চলে। বাস কিংবা ট্রেন ভ্রমণে পথেই অনেকটা সময় লেগে যায়। আর রাস্তায় অতিরিক্ত ট্রাফিক থাকলে তো কথাই নেই। বিশেষ করে ছুটির দিন বা ঈদের সময় তো এটি বেড়ে যায় অনেক গুণ। তবে এসব ঝক্কিঝামেলা এড়াতে আকাশপথ সুবিধাজনক হলেও অনেকেই অতিরিক্ত খরচের ভয়ে ফ্লাইটে টিকিট বুক করার সাহস করে উঠতে পারেন না। কিন্তু একটু কৌশলী হলে ফ্লাইটের টিকিটও পাওয়া যেতে পারে সাশ্রয়ী মূল্যেই। এতে সময় যেমন বাঁচবে, তেমনই যাত্রাও হবে সহজ ও আরামদায়ক। চলুন জানা যাক, কীভাবে অনলাইনে সাশ্রয়ী মূল্যে ফ্লাইট বুক করা যায়।
১.
আগেভাগে টিকিট বুক করুন
অনেক এয়ারলাইনসেই নির্দিষ্ট সময়ের আগে বুকিং দিলে তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে টিকিট পাওয়া যায়। কারণ, এয়ারলাইনসগুলো সাধারণত ‘ডিমান্ড বেজড’ প্রাইসিং মডেল অনুসরণ করে থাকে, যেখানে ফ্লাইটের টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয় গ্রাহকদের চাহিদার ভিত্তিতে। অর্থাৎ কোনো রুটে যখন টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে, তখন এয়ারলাইনসগুলো বেশি মূল্যে টিকিট বিক্রি করে। বিশেষ করে ঈদ কিংবা পূজার মতো বড় ছুটিগুলোয় টিকিটের মূল্য দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এ ক্ষেত্রে যদি আপনি আগেভাগে টিকিট কেটে ফেলেন, তবে অনেকটা সাশ্রয়ী মূল্যেই পেতে পারেন। পরিকল্পনা করে আগেভাগে টিকিট কাটলে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সিতে বিভিন্ন সুবিধাও পাওয়া যায়। যেমন দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ফ্লাইট এক্সপার্টের ওয়েবসাইটে রয়েছে, ‘বুক নাও, পে লেটার’ নামের একটি ফিচার। যেখানে টিকিট আগে বুক করে মূল্য পরেও পরিশোধ করা যেতে পারে।
২. ভ্রমণে বেছে নিন কার্যদিবসগুলো
সাশ্রয়ী মূল্যে টিকিট পেতে ছুটির দিনগুলোয় টিকিট না কাটাই ভালো। যেমন শুক্র–শনিবার কিংবা বিশেষ ছুটির দিনগুলোয় যাত্রীদের চাপ বেশি থাকে। ফলে টিকিটের দামও বেশি হয়। অন্যদিকে সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়, যেমন মঙ্গলবার কিংবা বুধবার, এই দিনগুলোয় এয়ারলাইনসগুলো তুলনামূলকভাবে কম ব্যস্ত থাকে। তাই এসব দিনে টিকিটের মূল্যও কিছুটা সাশ্রয়ী থাকে। তাই চেষ্টা করুন সপ্তাহের মাঝের দিনগুলোয় ফ্লাইট বুক করার, এতে কিছুটা হলেও সাশ্রয়ী মূল্যে টিকিট পাওয়া যায়।
৩. এয়ারলাইনসের অফারগুলোর খোঁজ রাখুন
বিভিন্ন সময় এয়ারলাইনসগুলোয় বিশেষ ছাড় পাওয়া যায়, যেগুলো নির্দিষ্ট ব্যাংকের কার্ডধারী কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের বুকিংয়ের জন্য প্রযোজ্য হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন উৎসব, বর্ষপূর্তি কিংবা বিশেষ দিন উপলক্ষে অনেক এয়ারলাইনস ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকে। এসব অফারের খোঁজ পেতে চোখ রাখতে পারেন ট্রাভেল এজেন্সির ওয়েবসাইটগুলোয় কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ ধরনের অফারগুলো নজরে এলে টিকিট বুক করে ফেলতে পারেন। এতে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে ফ্লাইটে ভ্রমণ করা যায়।
৪. ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা নিন
ক্রেডিট কার্ড থাকলে এগুলোর সুবিধা নিতে মোটেও ভুল করবেন না। একেক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে একেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। ক্যাশব্যাক অফার, কিস্তিতে মূল্য পরিশোধসহ বিভিন্ন ছাড় পাওয়া যায়, যেমন কিছু ব্যাংক নির্দিষ্ট এয়ারলাইনসে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকে। আবার কোনো কোনো ব্যাংক ফ্লাইটের টিকিট বুকিংয়ে ইএমআই–সুবিধাও প্রদান করে থাকে। অনেক ট্রাভেল এজেন্সিতেও ইএমআইয়ের মাধ্যমে ফ্লাইট টিকিট কাটা যায়, যেমন ফ্লাইট এক্সপার্ট। তাই আপনার ক্রেডিট কার্ড থাকলে এ ধরনের সুবিধাগুলো যাচাই করে টিকিট কাটুন। এতে টিকিট বেশ সাশ্রয়ী মূল্যেই পাওয়া যায়।
৫. হিডেন চার্জ সম্পর্কে সচেতন থাকুন
অনলাইনে ফ্লাইট বুক করার সময় শুধু টিকিটের দাম দেখলেই হবে না, সঙ্গে থাকা বাড়তি চার্জগুলোর বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে। অনেক সময় ওয়েবসাইটে দেখানো মূল্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ট্যাক্স, লাগেজ ফি, সিট পছন্দের ফি, এমনকি পেমেন্ট প্রসেসিং চার্জও যুক্ত হয়। তাই টিকিট কনফার্ম করার আগে মোট মূল্য যাচাই করুন এবং এসব হিডেন চার্জ এড়িয়ে চলুন। এ জন্য সহজ সমাধান হলো ফ্লাইট এক্সপার্ট। তাদের এজেন্সিতে টিকিট বুকিং করলে এসব হিডেন চার্জের ঝক্কিঝামেলা নেই।
সাশ্রয়ী দামে ফ্লাইটের টিকিট পাওয়াটা যতটা কৌশলের ব্যাপার, ততটাই সচেতনতার বিষয়। আগে থেকে পরিকল্পনা করে সঠিক সময় ও সঠিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে টিকিট বুক করলে মূল্য সাশ্রয়ের পাশাপাশি উপভোগ করা যাবে ঝামেলামুক্ত ও আরামদায়ক ভ্রমণ।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ফ ল ইট র ট ক ট ট ক ট ব ক কর ট ব ক কর র ভ রমণ
এছাড়াও পড়ুন:
পুলিশ লাইনসগুলো গোপন কারাগারে রূপান্তরিত হয়েছিল: নূর খান
মানবাধিকারকর্মী মো. নূর খান বলেছেন, বিগত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় দেশের বিভিন্ন জেলার পুলিশ লাইনসগুলো গোপন কারাগারে রূপান্তরিত হয়েছিল। এসব গোপন কারাগারে বিভিন্ন জেলা ও বিভিন্ন জেল থেকে মানুষদের এনে নির্যাতন করা হতো।
মো. নূর খান বলেন, ‘পুলিশ লাইনস বলে একটা জিনিস আছে জেলায়। এই পুলিশ লাইনসগুলো গোপন কারাগারে রূপান্তরিত হয়েছিল। কীভাবে এটা সম্ভব? কীভাবে সেখানে জিজ্ঞাসাবাদের নামে নানা জেলা থেকে মানুষকে নিয়ে টর্চার করা হতো।...বর্তমান পুলিশ হেডকোয়ার্টার যেটা, সেটার নিচে এলআইসি নামে একটা ডিভিশন আছে সেখানে বন্দীদের এনেও টর্চার করা হতো।’
‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন মো. নূর খান। আজ শনিবার বেলা ১১টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলো কার্যালয়ে এই গোলটেবিল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়।
মো. নূর খান উদাহরণস্বরূপ বগুড়া ও বাগেরহাটের কথা উল্লেখ করেন। তিনি জানান, সাম্প্রতিককালে তাঁরা বিভিন্ন জায়গায় কাজ করতে যেয়ে এসব তথ্য পেয়েছেন। এসব ঘটনার সঙ্গে বিগত সময়ে ক্ষমতাসীন রাজনৈতিক দলের উচ্চপদস্থ ব্যক্তি ও দেশ পরিচালনাকারীরা সরাসরি জড়িত ছিলেন।
পুলিশের বদলি ও পদোন্নতির ক্ষেত্রে পুলিশ সংস্কার কমিশনের মতামতকে গুরুত্ব দেওয়ার ওপর জোর দেন নূর খান। তিনি বলেন, ‘পুলিশকে যদি আপনি তার মতো চলতে দিতে পারেন এবং সেখানে কমিশনের যদি একটা হস্তক্ষেপ থাকে অর্থাৎ কমিশন যদি বিষয়গুলো জানে ও তারা যদি পদক্ষেপ নিতে পারে, তাহলে এই জায়গাটায় কিছুটা চেক অ্যান্ড ব্যালেন্স (ভারসাম্য রক্ষা) হবে। পদায়নের ক্ষেত্রে একই অবস্থা হবে।’
সুশীল সমাজের যারা পুলিশের অভ্যন্তরীণ বিষয়গুলো জানেন, বোঝেন ও সাহসের সঙ্গে মোকাবিলা করতে পারেন, তাঁদের পুলিশ সংস্কার কমিশনে যুক্ত করার পরামর্শ দেন এই মানবাধিকারকর্মী।
পুলিশ কনস্টেবল পদে নিয়োগের সংখ্যা কমানোর পরামর্শ দেন মো. নূর খান। পাশাপাশি পুলিশ বাহিনীতে সত্যিকারের পরিবর্তনের জন্য সামাজিক দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন ঘটাতে হবে। রাজনৈতিক দলগুলো পুলিশ বাহিনীর রাজনীতিকীকরণ করবে না, এমন প্রতিশ্রুতিও দিতে হবে।
শুরুতে ‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ নিয়ে একটি প্রবন্ধ তুলে ধরেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (অবসরপ্রাপ্ত) ও বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি ইয়াসমিন গফুর।
গোলটেবিলে অংশ নেন অন্তর্বর্তী সরকারের আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, বাংলাদেশ পুলিশের সাবেক মহাপরিদর্শক নুরুল হুদা, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম আকবর আলী।
এ ছাড়া বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি কাজী মো. ফজলুল করীম এ বৈঠকে অংশ নেন।