সবচেয়ে আরামদায়ক ও দ্রুত ভ্রমণের জন্য ফ্লাইটই সেরা, এ বিষয়ে দ্বিমত নেই বললেই চলে। বাস কিংবা ট্রেন ভ্রমণে পথেই অনেকটা সময় লেগে যায়। আর রাস্তায় অতিরিক্ত ট্রাফিক থাকলে তো কথাই নেই। বিশেষ করে ছুটির দিন বা ঈদের সময় তো এটি বেড়ে যায় অনেক গুণ। তবে এসব ঝক্কিঝামেলা এড়াতে আকাশপথ সুবিধাজনক হলেও অনেকেই অতিরিক্ত খরচের ভয়ে ফ্লাইটে টিকিট বুক করার সাহস করে উঠতে পারেন না। কিন্তু একটু কৌশলী হলে ফ্লাইটের টিকিটও পাওয়া যেতে পারে সাশ্রয়ী মূল্যেই। এতে সময় যেমন বাঁচবে, তেমনই যাত্রাও হবে সহজ ও আরামদায়ক। চলুন জানা যাক, কীভাবে অনলাইনে সাশ্রয়ী মূল্যে ফ্লাইট বুক করা যায়।

১.

আগেভাগে টিকিট বুক করুন

অনেক এয়ারলাইনসেই নির্দিষ্ট সময়ের আগে বুকিং দিলে তুলনামূলক সাশ্রয়ী মূল্যে টিকিট পাওয়া যায়। কারণ, এয়ারলাইনসগুলো সাধারণত ‘ডিমান্ড বেজড’ প্রাইসিং মডেল অনুসরণ করে থাকে, যেখানে ফ্লাইটের টিকিটের মূল্য নির্ধারণ করা হয় গ্রাহকদের চাহিদার ভিত্তিতে। অর্থাৎ কোনো রুটে যখন টিকিটের চাহিদা বেশি থাকে, তখন এয়ারলাইনসগুলো বেশি মূল্যে টিকিট বিক্রি করে। বিশেষ করে ঈদ কিংবা পূজার মতো বড় ছুটিগুলোয় টিকিটের মূল্য দ্রুত বৃদ্ধি পায়। এ ক্ষেত্রে যদি আপনি আগেভাগে টিকিট কেটে ফেলেন, তবে অনেকটা সাশ্রয়ী মূল্যেই পেতে পারেন। পরিকল্পনা করে আগেভাগে টিকিট কাটলে বিভিন্ন ট্রাভেল এজেন্সিতে বিভিন্ন সুবিধাও পাওয়া যায়। যেমন দেশের শীর্ষস্থানীয় অনলাইন ট্রাভেল এজেন্সি ফ্লাইট এক্সপার্টের ওয়েবসাইটে রয়েছে, ‘বুক নাও, পে লেটার’ নামের একটি ফিচার। যেখানে টিকিট আগে বুক করে মূল্য পরেও পরিশোধ করা যেতে পারে।

২. ভ্রমণে বেছে নিন কার্যদিবসগুলো

সাশ্রয়ী মূল্যে টিকিট পেতে ছুটির দিনগুলোয় টিকিট না কাটাই ভালো। যেমন শুক্র–শনিবার কিংবা বিশেষ ছুটির দিনগুলোয় যাত্রীদের চাপ বেশি থাকে। ফলে টিকিটের দামও বেশি হয়। অন্যদিকে সপ্তাহের মাঝামাঝি সময়, যেমন মঙ্গলবার কিংবা বুধবার, এই দিনগুলোয় এয়ারলাইনসগুলো তুলনামূলকভাবে কম ব্যস্ত থাকে। তাই এসব দিনে টিকিটের মূল্যও কিছুটা সাশ্রয়ী থাকে। তাই চেষ্টা করুন সপ্তাহের মাঝের দিনগুলোয় ফ্লাইট বুক করার, এতে কিছুটা হলেও সাশ্রয়ী মূল্যে টিকিট পাওয়া যায়।

৩. এয়ারলাইনসের অফারগুলোর খোঁজ রাখুন

বিভিন্ন সময় এয়ারলাইনসগুলোয় বিশেষ ছাড় পাওয়া যায়, যেগুলো নির্দিষ্ট ব্যাংকের কার্ডধারী কিংবা নির্দিষ্ট সময়ের বুকিংয়ের জন্য প্রযোজ্য হয়। এ ছাড়া বিভিন্ন উৎসব, বর্ষপূর্তি কিংবা বিশেষ দিন উপলক্ষে অনেক এয়ারলাইনস ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকে। এসব অফারের খোঁজ পেতে চোখ রাখতে পারেন ট্রাভেল এজেন্সির ওয়েবসাইটগুলোয় কিংবা সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে। এ ধরনের অফারগুলো নজরে এলে টিকিট বুক করে ফেলতে পারেন। এতে তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী মূল্যে ফ্লাইটে ভ্রমণ করা যায়।

৪. ক্রেডিট কার্ডের সুবিধা নিন

ক্রেডিট কার্ড থাকলে এগুলোর সুবিধা নিতে মোটেও ভুল করবেন না। একেক ব্যাংকের ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার করলে একেক ধরনের সুবিধা পাওয়া যায়। ক্যাশব্যাক অফার, কিস্তিতে মূল্য পরিশোধসহ বিভিন্ন ছাড় পাওয়া যায়, যেমন কিছু ব্যাংক নির্দিষ্ট এয়ারলাইনসে ১০ থেকে ২৫ শতাংশ পর্যন্ত ডিসকাউন্ট দিয়ে থাকে। আবার কোনো কোনো ব্যাংক ফ্লাইটের টিকিট বুকিংয়ে ইএমআই–সুবিধাও প্রদান করে থাকে। অনেক ট্রাভেল এজেন্সিতেও ইএমআইয়ের মাধ্যমে ফ্লাইট টিকিট কাটা যায়, যেমন ফ্লাইট এক্সপার্ট। তাই আপনার ক্রেডিট কার্ড থাকলে এ ধরনের সুবিধাগুলো যাচাই করে টিকিট কাটুন। এতে টিকিট বেশ সাশ্রয়ী মূল্যেই পাওয়া যায়।

৫. হিডেন চার্জ সম্পর্কে সচেতন থাকুন

অনলাইনে ফ্লাইট বুক করার সময় শুধু টিকিটের দাম দেখলেই হবে না, সঙ্গে থাকা বাড়তি চার্জগুলোর বিষয়েও সচেতন থাকতে হবে। অনেক সময় ওয়েবসাইটে দেখানো মূল্যের সঙ্গে অতিরিক্ত ট্যাক্স, লাগেজ ফি, সিট পছন্দের ফি, এমনকি পেমেন্ট প্রসেসিং চার্জও যুক্ত হয়। তাই টিকিট কনফার্ম করার আগে মোট মূল্য যাচাই করুন এবং এসব হিডেন চার্জ এড়িয়ে চলুন। এ জন্য সহজ সমাধান হলো ফ্লাইট এক্সপার্ট। তাদের এজেন্সিতে টিকিট বুকিং করলে এসব হিডেন চার্জের ঝক্কিঝামেলা নেই।

সাশ্রয়ী দামে ফ্লাইটের টিকিট পাওয়াটা যতটা কৌশলের ব্যাপার, ততটাই সচেতনতার বিষয়। আগে থেকে পরিকল্পনা করে সঠিক সময় ও সঠিক প্ল্যাটফর্ম ব্যবহার করে টিকিট বুক করলে মূল্য সাশ্রয়ের পাশাপাশি উপভোগ করা যাবে ঝামেলামুক্ত ও আরামদায়ক ভ্রমণ।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ফ ল ইট র ট ক ট ট ক ট ব ক কর ট ব ক কর র ভ রমণ

এছাড়াও পড়ুন:

বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম

উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।

শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।

সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে  ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

ঢাকা/রায়হান/রফিক 

সম্পর্কিত নিবন্ধ