তৃতীয় তদন্তেও চূড়ান্ত প্রতিবেদন, মানতে নারাজ পরিবার
Published: 13th, March 2025 GMT
চট্টগ্রামে স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিন হত্যা মামলায় পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগের (সিআইডি) দেওয়া প্রতিবেদনের বিরুদ্ধে আদালতে নারাজি আবেদন করেছে পরিবার। আজ বৃহস্পতিবার চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এই নারাজি আবেদন করেন মামলার বাদী ও নিহত ছাত্রীর বাবা মো. আমিন। আদালত নারাজি আবেদনের ওপর শুনানির জন্য পরবর্তী দিন ধার্য রেখেছেন।
গত ৩০ জানুয়ারি সিআইডি নগরের পতেঙ্গা থানার তাসফিয়া হত্যা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন জমা দেয় আদালতে। এতে বলা হয়, পানিতে ডুবে তার মৃত্যু হয়েছে। ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রমাণিত না হওয়ায় ছয় আসামিকে অব্যাহতি দেওয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে। এর আগে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) ও নগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশও এই হত্যা মামলায় চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছিল। সেগুলোতেও বলা হয়েছিল একই কথা।
স্কুলছাত্রীর মা নাঈমা খানম প্রথম আলোকে বলেন, তাসফিয়ার শরীরে নির্যাতনের ব্যাখ্যা তদন্তে উঠে আসেনি। সবাই বলছে পানিতে ডুবে মারা গেছে। সুরতহাল প্রতিবেদনে রয়েছে, শরীরে ১১টি আঘাতের চিহ্ন রয়েছে। দুই চোখ মারাত্মকভাবে থেঁতলানো। ডান চোখের ভ্রু ক্ষতবিক্ষত। মৃত্যুর আগে নাক দিয়ে বের হয়েছে ফেনা। তাই নিরপেক্ষ তদন্তের জন্য আদালতে নারাজি আবেদন করা হয়েছে।
২০১৭ সালের ১ মে নগরের গোলপাহাড় মোড় থেকে অটোরিকশায় চড়ে বাসায় যাওয়ার কথা থাকলেও পতেঙ্গা সমুদ্রসৈকত এলাকায় চলে যায় নগরের একটি ইংরেজি মাধ্যম বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির শিক্ষার্থী তাসফিয়া আমিন। পরদিন সৈকতে তার মরদেহ পায় পুলিশ। তাসফিয়া কোন অটোরিকশায় চড়ে পতেঙ্গায় পৌঁছেছিল, সেই গাড়ির হদিস পায়নি পুলিশ।
ঘটনার পর তাসফিয়ার বাবা মো.
পুলিশ সূত্র জানায়, ঘটনার দিন কাউকে না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায় তাসফিয়া আমিন। বন্ধু আদনান মির্জার সঙ্গে গোলপাহাড় মোড়ের চায়না গ্রিল নামের একটি রেস্টুরেন্টে যায়। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩৭ মিনিটে বের হয়ে একা সিএনজিচালিত অটোরিকশায় ওঠে তাসফিয়া। এর পর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে জিইসি মোড়ের ২০ কিলোমিটার দূরে পতেঙ্গা নেভালে কর্ণফুলী নদীর তীরে তার লাশ পাওয়া যায়।
উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?