দুই বছরের কন্যাকে হারালেন হজরতউল্লাহ জাজাই
Published: 14th, March 2025 GMT
হযরতউল্লাহ জাজাইয়ের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্টে গেলে দুই ধরনের ছবি পাওয়া যায়। তাঁর ব্যাটিংয়ের ছবি, অনুশীলনের ছবি, কোথাও ঘুরতে যাওয়ার ছবি। নিজের ও খেলার বাইরের অন্য সব ছবি-ভিডিও জাজাইয়ের মেয়ের। ২০২২ সালের ৫ জুন মেয়ের জন্মের ছবি পোস্ট দিয়ে যার শুরু।
আফগানিস্তান ক্রিকেট দলের খেলোয়াড় করিম জানাত জানিয়েছেন, জাজাইয়ের কন্যা আর নেই। ইন্নালিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন। তবে জাজাইয়ের মেয়ে কখন এবং কীভাবে মারা গেছে, এ সম্পর্কে কিছু বলেননি।
আজ এক ইনস্টাগ্রাম পোস্টে জানাত লিখেছেন, ‘গভীর দুঃখের সঙ্গে আপনাদের জানাচ্ছি যে, আমার ভাইয়ের মতো ঘনিষ্ঠ বন্ধু হযরতউল্লাহ জাজাই তার মেয়েকে হারিয়েছে। এই অবিশ্বাস্য কঠিন সময়ে তাঁর ও তাঁর পরিবারের জন্য আমি গভীরভাবে মর্মাহত। এই শোকের সময়ে তাদের আপনার প্রার্থনায় রাখুন। হযরতউল্লা জাজাই ও তাঁর পরিবারের প্রতি গভীর সমবেদনা।’
২৬ বছর বয়সী জাজাই এখন পর্যন্ত আফগানিস্তানের হয়ে ৪৫ টি-টোয়েন্টি ও ১৬টি ওয়ানডে খেলেছেন। আন্তর্জাতিক টি-টোয়েন্টিতে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ইনিংসের (১৬২*) মালিক এই বাঁহাতি ব্যাটসম্যান। আফগানিস্তানের হয়ে সর্বশেষ খেলেছেন গত ডিসেম্বরে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টি-টোয়েন্টিতে।
২০১৬ সালে আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে পা রাখা জাজাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম জগতে পারিবারিক জীবন খুব একটা সামনে আনেন না।
এ যাবত শুধু মেয়ের ছবি ও ভিডিওই পোস্ট করতে দেখা গেছে। বিশেষ করে মেয়ের জন্মের খবর, ২ মাস, ৩ মাস ও প্রথম জন্মবার্ষিকীর মতো বয়সের বিভিন্ন মাইলফলক ও উদ্যাপনের ছবি পোস্ট করেছেন বিভিন্ন সময়ে।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?