নারী ও শিশুর প্রতি চলমান যৌন সহিংসতা ও হয়রানির ঘটনায় তীব্র ক্ষোভ ও নিন্দা জানিয়েছে হিউম্যান রাইটস ফোরাম বাংলাদেশ (এইচআরএফবি)। পাশাপাশি ধর্ষণ ও নিপীড়ন নিয়ে আন্দোলনকারীদের ওপর থেকে পুলিশের মামলা প্রত্যাহার এবং শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে বলপ্রয়োগ না করতে সরকারের প্রতি আহ্বান জানিয়েছে সংগঠনটি। তা ছাড়া সংলাপের মাধ্যমে ক্ষোভ প্রশমনের পরামর্শ দিয়েছে তারা। আজ শুক্রবার এক বিবৃতিতে মানবাধিকার সংগঠনটি এসব নিন্দা ও দাবি জানিয়েছে।

এইচআরএফবির বিবৃতিতে বলা হয়েছে, সম্প্রতি তিন বছর থেকে শুরু করে বিভিন্ন বয়সী মেয়েশিশু ও নারী ধর্ষণ, যৌন নিপীড়ন ও হেনস্তার ঘটনা ঘটেছে। এসব ঘটনা থেকে এ বিষয়টি সুস্পষ্ট যে জনপরিসর ও অনলাইন থেকে শুরু করে পরিবার—কোথাও মেয়েশিশু বা নারীরা নিরাপদ নয়। নারীর স্বাধীনতা, চলাফেরা, মতপ্রকাশ এবং পছন্দ বা নির্বাচন করার অধিকার, তথা সামগ্রিক নারীর অধিকার ও ক্ষমতায়ন সংকুচিত করার একটা অপচেষ্টাও লক্ষ করা যাচ্ছে। এটি মারাত্মক উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠা তৈরি করেছে।

‘ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ’ নামের প্ল্যাটফর্মের কর্মসূচিতে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের বিষয়ে এইচআরএফবির বিবৃতিতে বলা হয়, কর্মসূচি পালনকালে পুলিশের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীদের ওপর বলপ্রয়োগের অভিযোগ উঠেছে। কিন্তু এ ঘটনায় পরে নারীসহ কিছু আন্দোলনকারীর বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলা করেছে পুলিশ।

প্রসঙ্গত, দেশব্যাপী ধর্ষণ ও নারী নির্যাতনের ঘটনার প্রতিবাদ জানাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের উদ্যোগে ধর্ষণ ও নিপীড়নের বিরুদ্ধে বাংলাদেশ নামের প্ল্যাটফর্ম গড়ে উঠেছে। তারা ১১ মার্চ প্রধান উপদেষ্টার বাসভবন অভিমুখে গণপদযাত্রা কর্মসূচি পালন করার এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।

এইচআরএফবি সরকারের কাছে বেশ কিছু দাবি জানিয়েছে। এসব দাবির মধ্যে রয়েছে—যেকোনো শান্তিপূর্ণ প্রতিবাদ কর্মসূচিতে বলপ্রয়োগের প্রবণতা পরিহার করে নাগরিক অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকা। পুলিশের ওপর হামলার অভিযোগ এনে করা মামলা প্রত্যাহার করা এবং সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের কোনোভাবে হয়রানি না করা। শক্তি প্রয়োগ না করে প্রধান উপদেষ্টার সঙ্গে সাক্ষাতের মাধ্যমে আন্দোলনকারীদের বক্তব্য উপস্থাপনের সুযোগ প্রদান করা। ধর্ষণের বিরুদ্ধে সরকারের ঘোষিত ‘শূন্য সহনশীলতা নীতি’ অব্যাহত রাখা। নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিটি ঘটনার দ্রুততার সঙ্গে সুষ্ঠু তদন্ত, বিচার, ভুক্তভোগীদের নিরাপত্তা ও ক্ষতিপূরণ নিশ্চিত করা। ধর্ষণ বা যৌন হয়রানির শিকার নারীদের পুনর্বাসন এবং মানসিক স্বাস্থ্যসেবা প্রদান।

এইচআরএফবির দাবির মধ্যে আরও রয়েছে—ধর্ষণের ভুক্তভোগী কিংবা সাইবার হয়রানির ভুক্তভোগী নারী ও শিশুদের গোপনীয়তা রক্ষা করা। অনলাইনে এসব ভুক্তভোগীর ব্যক্তিগত পরিচয় কিংবা সংবেদনশীল তথ্য যেন প্রকাশিত না হয়, সে বিষয়ে আইনি বিধান যোগ করা। স্কুল, কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয়ে নারী–পুরুষের মধ্যে সমতার ধারণা প্রতিষ্ঠার জন্য বিশেষ সচেতনতামূলক কর্মসূচি গ্রহণ করা।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: সরক র র হয়র ন র ঘটন

এছাড়াও পড়ুন:

ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত

ভোলায় গ্যাস ও অবকাঠামোগত উন্নয়নের দাবিতে চলমান ছয় দফা আন্দোলন স্থগিত করেছে ‘আমরা ভোলাবাসী’। সরকারি আশ্বাসের ভিত্তিতে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে জানিয়েছে সংগঠনটি। আজ মঙ্গলবার দুপুরে ভোলা প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দেন নেতারা।

সংগঠনের পক্ষ থেকে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির সদস্যসচিব ও আমরা ভোলাবাসীর জ্যেষ্ঠ নির্বাহী সদস্য রাইসুল আলম। এ সময় আরও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মো. এনামুল হক, বিজেপির সাধারণ সম্পাদক মোতাসিন বিল্লাহ, ভোলা জেলা কমিউনিস্ট পার্টির সভাপতি মোবাশ্বির উল্লাহ চৌধুরী, ভোলা আলিয়া মাদ্রাসার উপাধ্যক্ষ মোবাশ্বিরুল হক নাঈম, ইসলামী আন্দোলনের ভোলা উত্তর জেলা শাখার সাধারণ সম্পাদক মাওলানা তরিকুল ইসলাম, ভোলা সদর উপজেলা জামায়াতে ইসলামীর আমির মো. কামাল হোসেন ও আমরা ভোলাবাসীর সদস্যসচিব মীর মোশাররফ হোসেন।

লিখিত বক্তব্যে বলা হয়, ভোলার গ্যাস স্থানীয়ভাবে ব্যবহারের দাবিসহ ছয় দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন চলছে। সরকারের সঙ্গে একাধিক বৈঠকের মাধ্যমে দাবি আদায়ে অগ্রগতি হয়েছে।

আমরা ভোলাবাসীর দাবির মধ্যে রয়েছে, ভোলায় মেডিকেল কলেজ স্থাপন, বিদ্যমান ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালে পূর্ণাঙ্গ চিকিৎসার সুবিধা নিশ্চিত করা, ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণ, ঘরে ঘরে গ্যাস সরবরাহ, গ্যাসভিত্তিক শিল্পকারখানা স্থাপন ও নদীভাঙন প্রতিরোধ।

সংগঠনটি জানায়, আন্দোলনের আগে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট হাসপাতালটিতে মাত্র আট চিকিৎসক কর্মরত ছিলেন, বর্তমানে তা বেড়ে দাঁড়িয়েছে ২৮ জন। আরও চিকিৎসক, নার্স ও যন্ত্রপাতি দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছে সরকার। মেডিকেল কলেজ স্থাপনের বিষয়ে বলা হয়েছে, ভবিষ্যতে নতুন মেডিকেল কলেজ হলে, সেটি ভোলায় হবে। ভোলা–বরিশাল সেতু নির্মাণের ক্ষেত্রেও ফিজিবিলিটি স্টাডি ও নকশা সম্পন্ন হয়েছে এবং ২০২৬ সালের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে বলে আশ্বাস দেওয়া হয়েছে।

সার কারখানা ও ইপিজেড স্থাপনের জন্য জমি নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে বলেও জানিয়েছেন নেতারা। গ্যাস–সংযোগের বিষয়ে জানানো হয়, সুন্দরবন গ্যাস কোম্পানিকে ডিমান্ড নোট জমা দেওয়া ২ হাজার ১৪৫ গ্রাহককে গ্যাস–সংযোগ দেওয়া হবে এবং ন্যায্যমূল্যে ২০ হাজার সিলিন্ডার বিতরণ করা হবে।

সংগঠনের পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, আগামী দুই মাসের মধ্যে দৃশ্যমান অগ্রগতি না হলে আবার কঠোর কর্মসূচি দেওয়া হবে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • দুর্নীতিবাজ রাজনীতিবিদদের থেকে তরুণদের দূরে থাকতে হবে: মজিবুর রহমান
  • শিশু নাঈমের পাশে ইবি ক্রিকেট ক্লাব
  • ছয় দফা দাবিতে ‘আমরা ভোলাবাসী’র আন্দোলন ‘সরকারি আশ্বাসে’ স্থগিত