সরকারি বরাদ্দ পেলেও জামালপুর সদরসহ সাত উপজেলার টিআর (টেস্ট রিলিফ), কাবিখা (কাজের বিনিময়ে খাদ্য) ও কাবিটা (কাজের বিনিময়ে টাকা) প্রকল্পের কোনো কাজ এখনও শুরুই হয়নি। অথচ প্রকল্পের নির্ধারিত মেয়াদ শেষ হচ্ছে আজ শনিবার। গ্রামীণ অবকাঠামোর এসব গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্প বাস্তবায়ন না হলে ক্ষতিগ্রস্ত হবে গ্রামাঞ্চলের সাধারণ মানুষ।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যমতে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য জামালপুরের সাত উপজেলায় কাবিটা প্রকল্পের জন্য দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে ১২ কোটি ২০ লাখ ৭৫ হাজার, টিআর প্রকল্পের জন্য ১১ কোটি ৫৬ লাখ ৭৩ হাজার টাকা ও কাবিখা প্রকল্পের জন্য ৮৭৫ টন চাল এবং ৮৭৫ টন গম বরাদ্দ আসে। নগদ টাকা এবং চাল ও গমের মূল্যসহ বরাদ্দের মোট টাকার পরিমাণ প্রায় ৩৩ কোটি। এসব কাজের মেয়াদ শেষ আজ শনিবার। অথচ জেলার কোথাও কোনো প্রকল্পের কাজ এখনও শুরু না হওয়ায় সহস্রাধিক প্রকল্প বাস্তবায়ন অনিশ্চয়তার মুখে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে জানা গেছে, জামালপুর সদর উপজেলার ইউনিয়ন পর্যায় থেকে প্রকল্পের তালিকা পেতে বিলম্ব ও অন্য ছয় উপজেলায় আইবাস প্লাস প্লাস জটিলতার কারণে অর্থছাড় করতে না পারায় কাজই শুরু করতে পারেনি উপজেলা গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কমিটি। তবে কর্তৃপক্ষ বলছে, প্রকল্পের মেয়াদ বর্ধিত হলে শুকনো মৌসুমেই সব প্রকল্প বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তার কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠমো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণের জন্য প্রকল্প বাস্তবায়নের নিমিত্তে দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর থেকে জেলায় বরাদ্দপত্র আসে গত ১৫ জানুয়ারি। চাল-গম ও নগদ অর্থসহ জেলার ৭ উপজেলায় বরাদ্দের পরিমাণ প্রায় ৫০ কোটি টাকা। জেলা থেকে উপজেলা পর্যায়ে উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয় ১৯ জানুয়ারি। আর উপজেলা থেকে প্রকল্পের তালিকা চেয়ে ইউনিয়ন পর্যায়ে উপ-বরাদ্দ দেওয়া হয় ২৯ জানুয়ারি। বরাদ্দপত্র প্রাপ্তির এক সপ্তাহের মধ্যে ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রকল্পের তালিকা উপজেলা গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার ও রক্ষণাবেক্ষণ কমিটির কাছে পাঠানোর কথা ছিল। জেলা কর্ণধার কমিটির অনুমোদন ও
বরাদ্দপ্রাপ্তির ১৫ দিনের মধ্যে এসব প্রকল্পের কাজ শুরু করার কথা ছিল।
সদর উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) আব্দুল আলীম বলেন, প্রকল্পের তালিকা চেয়ে যথাসময়ে সদর উপজেলার ১৫টি ইউনিয়ন পরিষদে উপ-বরাদ্দের চিঠি পাঠানো হয়। তাদের বারবার তাগিদ দেওয়ার পরও সময়মতো প্রকল্পের তালিকা না পাওয়ায় জেলা কর্ণধার কমিটির অনুমোদনের জন্য ফাইল পাঠানো যায়নি।
একাধিক ইউপি চেয়ারম্যান ও সদস্যের অভিযোগ, দেশের রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট পরিবর্তনের পর থেকেই জেলার অধিকাংশ ইউপি চেয়ারম্যান আত্মগোপনে। ইউনিয়ন পরিষদের কার্যক্রম চলছে প্যানেল চেয়ারম্যান ও সরকারি কর্মকর্তা দিয়ে। ফলে ইউনিয়নগুলো রয়েছে একটি রাজনৈতিক দলের নেতাকর্মীর কবজায়। তাই প্রকল্পের তালিকা
ওইসব নেতার মনমতো না হলে মতবিরোধ সৃষ্টি
হয়। যে কারণে প্রকল্পের তালিকা প্রণয়নে বিঘ্ন সৃষ্টি ও বিলম্বিত হয়।
ইসলামপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তৌহিদুর রহমান জানান, ইউনিয়ন পরিষদ থেকে প্রকল্পের তালিকা পেয়েছেন। তবে আইবাস প্লাস প্লাস
জটিলতার কারণে অর্থছাড় করতে না পারায় কাজই শুরু করতে পারেননি।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সরিষাবাড়ী, মাদারগঞ্জ, দেওয়ানগঞ্জ, বকশীগঞ্জ ও মেলান্দহ উপজেলায়ও বিরাজ করছে আইবাস প্লাস প্লাস জটিলতা। যে কারণে অর্থছাড় করতে না পেরে তারাও প্রকল্পের কাজে হাত দিতে পারেননি।
জামালপুর সদর উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা জিন্নাত শহীদ পিংকির দাবি, এরই মধ্যে ১৫টি ইউনিয়ন থেকে প্রকল্পের তালিকা পাওয়া গেছে। যা অনুমোদনের জন্য দ্রুতই পাঠানো হবে জেলা কর্ণধার কমিটিতে। প্রকল্পের সময় বর্ধিত হলে সব প্রকল্পই বাস্তবায়ন করা সম্ভব হবে।
জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা মো.
উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: প রকল প গ র ম ণ অবক ঠ ম প রকল প র ত ল ক সদর উপজ ল র প রকল প র ক কর মকর ত বর দ দ র উপজ ল য় র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস
আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়
সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।
সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।
সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।
সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।
সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।
সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।
সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।