গুগলের সঠিক ব্যবহার
গুগলে চাকরি খুঁজলে সার্চ ইঞ্জিনটি বিভিন্ন উৎস থেকে আপনাকে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেখাবে। তবে আপনি চাইলে বিভিন্ন রকম ‘ফিল্টার’ ব্যবহার করে অনুসন্ধানের ব্যাপ্তিটা নির্দিষ্ট করে দিতে পারেন। ধরা যাক, আপনি ঢাকায় মার্কেটিং–সংক্রান্ত চাকরি খুঁজছেন, কিংবা আপনি ঘরে বসেই (রিমোট জব) সফটওয়্যার প্রকৌশলী হিসেবে কাজ করতে চান। কাজের ধরন, স্থান, সবই নির্দিষ্ট করে দেওয়া সম্ভব। অভিজ্ঞতা, ডিগ্রি, বিজ্ঞপ্তি প্রকাশের তারিখ, এসবও ফিল্টারে উল্লেখ করা যায়। তবে এর চেয়েও কার্যকর হতে পারে ‘গুগল অ্যালার্ট’। google.
ইদানীং অনেক প্রতিষ্ঠান ও নিয়োগকর্তা ফেসবুকের মাধ্যমেও চাকরির বিজ্ঞাপন দেন। করপোরেট প্রতিষ্ঠানগুলোর চাকরি–সংক্রান্ত নিজস্ব পেজও থাকে (যেমন বাংলালিংক ক্যারিয়ারস)। আবার এমন অনেক ফেসবুক গ্রুপ আছে, যেখানে নিয়মিত চাকরি বা ইন্টার্নশিপের সুযোগের খবর পোস্ট করা হয়। গ্রুপ নোটিফিকেশন চালু রাখলে আপনি নতুন পোস্টের তথ্য নিয়মিত পেয়ে যাবেন। কয়েকটি গ্রুপ: ভ্যাকেনসি অ্যানাউন্সমেন্ট বিডি, জবস ফর উইমেন ইন বাংলাদেশ অ্যান্ড বিয়ন্ড, জব ইনফরমেশন বাংলাদেশ, ফেসবুক মার্কেটপ্লেস ও পেজ। আবার নির্দিষ্ট চাকরিভিত্তিক গ্রুপও আছে (যেমন গ্রাফিক ডিজাইন জবস বিডি)। ছাত্রজীবন থেকেই এ ধরনের গ্রুপগুলোতে যুক্ত হতে পারেন। তাহলে বাজারের চাহিদা সম্পর্কে ধারণা হবে।
আরও পড়ুনদেশে বসে বিদেশে চাকরি, কেন জনপ্রিয় হচ্ছে ‘রিমোট জব’১৯ জানুয়ারি ২০২৫লিংকডইনচাকরি খোঁজার জন্য লিংকডইন এখন সবচেয়ে প্রচলিত মাধ্যম। এখানে শুধু আপনিই যে চাকরি খুঁজবেন তা নয়, চাকরিও আপনাকে খুঁজবে। তাই নিজের প্রোফাইল ঠিকঠাক সাজানো জরুরি। linkedin.com/jobs-এ গেলেই আপনি নানা চাকরির খোঁজ পাবেন। নির্দিষ্ট ফিল্টার (অবস্থান, অভিজ্ঞতা স্তর, কোম্পানি ইত্যাদি) ব্যবহার করে বিভিন্ন চাকরির তথ্য ও বর্ণনা দেখতে পারেন। অনেক প্রতিষ্ঠান লিংকডইনের মাধ্যমে সরাসরি চাকরির আবেদনের সুযোগ দেয়। ‘ইজি অ্যাপ্লাই’ অপশনে ক্লিক করলেই আপনার প্রোফাইল থেকে চাকরির আবেদন চলে যাবে নিমেষে। আপনি যে খাতে চাকরি করতে চান, সেই খাতের নামী প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রোফাইল ‘ফলো’ করতে পারেন। এ ছাড়া বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগের কর্মকর্তাদের সঙ্গে যোগাযোগ করার সুযোগও থাকে লিংকডইনে।
চাকরির পোর্টালবাংলাদেশে বিভিন্ন চাকরির পোর্টাল (ওয়েবসাইট ও অ্যাপ) আছে। এসব পোর্টাল থেকে আপনি নিয়মিত বিভিন্ন পদের জন্য চাকরির খোঁজ নিতে পারেন। বিডিজবসের মতো সাইট নিয়মিত নিয়োগ বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে। এসব সাইটে নিবন্ধন করে আপনার হালনাগাদ সিভি আপলোড করুন। চাকরির শিরোনাম, অবস্থান, অভিজ্ঞতা এবং বেতনের তথ্য ফিল্টার করে নিলে অনুসন্ধান করা সহজ হবে।
অফিশিয়াল ওয়েবসাইটঅনেক প্রতিষ্ঠান তাদের অফিশিয়াল ক্যারিয়ার পেজে চাকরি ও ইন্টার্নশিপের তথ্য পোস্ট করে। আপনি যে প্রতিষ্ঠানে কাজ করতে আগ্রহী, সেই প্রতিষ্ঠানের ওয়েবসাইটে নজর রাখতে পারেন। যেমন ব্র্যাক: careers.brac.net, ইউএনডিপি: undp.org/careers, গ্রামীণফোন: grameenphone.com/about/career, আইসিডিডিআরবি: career.icddrb.org, ইত্যাদি। এসব পোর্টাল আপনাকে একটি প্রোফাইল তৈরি করে জীবনবৃত্তান্ত আপলোড করার সুযোগ দেবে। নিয়মিত চাকরির বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা ছাড়াও এসব ওয়েবসাইটে তথ্য আপলোড থাকলে প্রতিষ্ঠানের মানবসম্পদ বিভাগ জরুরি নিয়োগের সময় আপনার সঙ্গে যোগাযোগ করবে।
আরও পড়ুনফ্রিল্যান্সিং শুরু করেও ব্যর্থ হওয়ার ৫ কারণ০২ মার্চ ২০২৫অভ্যন্তরীণ নিয়োগের খোঁজ নিনঅনেক প্রতিষ্ঠান ঘটা করে চাকরির বিজ্ঞপ্তি দেওয়ার আগে অভ্যন্তরীণভাবে খোঁজ নেয়। অর্থাৎ অফিসের ভেতরেই কর্মীদের কাছে জানতে চায়, যোগ্য কোনো প্রার্থী আছে কি না। নতুন চাকরির খোঁজ জানতে কোম্পানির মানবসম্পদ বিভাগে ই–মেইল করতে পারেন। কোনো প্রতিষ্ঠানে কাজ করার ব্যাপারে বেশি আগ্রহী হলে সেই প্রতিষ্ঠানের কর্মীদের সঙ্গে পরিচিত হতে পারেন, নিয়মিত যোগাযোগ রাখতে পারেন। সেটিও কাজে দেবে।
চাকরির মেলাদেশের বিভিন্ন প্রান্তে বিভিন্ন ধরনের ‘চাকরির মেলা’ আয়োজন করা হয়। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ে হয় ‘জব ফেয়ার’। কোনো কোনো মেলা অবশ্য শুধু আয়োজক বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের জন্য। এ ধরনের অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে আপনি সরাসরি সিভি জমা দেওয়ার, এমনকি কখনো কখনো সাক্ষাৎকার দেওয়ার সুযোগও পাবেন। সব সময় সিভি ও পোর্টফলিও তৈরি রাখুন।
আরও পড়ুন‘অনেক চাকরি নিয়ে বসে আছি, কিন্তু লোক পাচ্ছি না’১৯ জানুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: চ কর র ব জ ন চ কর র চ কর র খ এ ধরন র ক জ কর ফ সব ক স ট কর র জন য আপন ক
এছাড়াও পড়ুন:
উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণে মারাত্মক সংকটে তিস্তা নদী
আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। আর প্রস্তাবিত তিস্তা প্রকল্প নিয়েও কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না।
রোববার রাজধানীর প্রেস ইনস্টিটিউট বাংলাদেশে (পিআইবি) ‘সংকটে তিস্তা নদী: সমাধানের পথ কী?’ শীর্ষক মতবিনিময় সভায় বক্তারা এ কথা বলেন। বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) ও বাংলাদেশ পরিবেশ নেটওয়ার্ক (বেন) যৌথভাবে এ মতবিনিময় সভার আয়োজন করে।
মতবিনিময় সভায় মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন বাপার সহসভাপতি অধ্যাপক মো. খালেকুজ্জমান। প্রবন্ধে তিনি উল্লেখ করেন, ভারতের সঙ্গে কোনো পানিবণ্টন চুক্তি না থাকায় এবং আন্তর্জাতিক নিয়ম না মেনে উজানে বাঁধ ও জলবিদ্যুৎকেন্দ্র নির্মাণের ফলে তিস্তা নদী মারাত্মক সংকটে পড়েছে। শুষ্ক মৌসুমে পানির অভাবে আর বর্ষাকালে নিয়ন্ত্রণহীন পানিনির্গমনের ফলে বাংলাদেশ অংশে বন্যা ও ভাঙনের ঝুঁকি বাড়ছে।
মতবিনিময় সভায় বিশেষজ্ঞরা তিস্তা সমস্যার সমাধানে ভারতের সঙ্গে গঠনমূলক সম্পৃক্ততা, আন্তর্জাতিক আইনের প্রয়োগ এবং প্রকল্পে স্থানীয় জনগণের মতামত গ্রহণের ওপর জোর দেন। তাঁরা তিস্তা মহাপরিকল্পনা সম্পর্কে স্বচ্ছতা ও পুনর্মূল্যায়নের দাবি জানান।
অর্থনীতিবিদ আনু মুহাম্মদ বলেন, ‘সরকারের কাছে তিস্তা মহাপরিকল্পনার কোনো তথ্য নেই। বিগত বছরগুলোতে উন্নয়নের নামে দেশের নদীগুলোকে সংকুচিত করা হয়েছে। আমরা আর সংকুচিত করার উন্নয়ন চাই না। নদীকে নদীর মতোই রাখতে হবে।’
আনু মুহাম্মদ আরও বলেন, দেশের উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণের ক্ষেত্রে ব্যক্তিস্বার্থকে উপেক্ষা করে দেশের স্বার্থকে বড় করে দেখতে হবে। যেসব প্রকল্প দীর্ঘমেয়াদি, সেসব প্রকল্প গ্রহণের আগে অবশ্যই জনগণের মতামত নিতে হবে।
বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাবেক সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন বলেন, ‘আমাদের নিজস্ব সামর্থ্য অনুযায়ী প্রকল্প নেওয়া উচিত। নদীকে রক্ষা করতে হবে কিন্তু তাকে খালে পরিণত করে নয়। এই প্রকল্প পুনর্মূল্যায়ন করা প্রয়োজন।
বাপার প্রতিষ্ঠাতা নজরুল ইসলাম বলেন, ‘বাপা কখনো উন্নয়নবিরোধী নয়। আমরাও চাই দেশের উন্নয়ন হোক। কিন্তু সেই উন্নয়ন হতে হবে দেশের প্রাণপ্রকৃতি, পরিবেশ ও নদীকে ঠিক রেখে। তিস্তা প্রকল্প নিয়ে কেউ খোলামেলা কথা বলতে চাইছেন না। সরকার ও বিরোধী দল উভয়ই চীন-বাংলাদেশ সম্পর্ক নিয়ে সংবেদনশীল হওয়ায় এই গুরুত্বপূর্ণ বিষয়টি উপেক্ষিত থেকে যাচ্ছে।’
বাপার সভাপতি অধ্যাপক নুর মোহাম্মদ তালুকদারের সভাপতিত্বে এবং সাধারণ সম্পাদক আলমগীর কবিরের সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা, পরিবেশবিদ, গবেষক ও তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা অংশ নেন।