তিনটি অবস্থায় রোজা ভঙ্গকারী বিষয়টি ঘটালেও রোজা ভাঙে না।
এক. রোজার কথা ভুলে গেলে: যদি সাওমের কথা ভুলে যাওয়ার কারণে পানাহার করা হয়, তখন রোজা ভঙ্গ হয় না এবং রোজা পূর্ণ হতেও কোনও অসুবিধা হয় না। নবীজি (সা.) বলেছেন, যে রোজার কথা ভুলে গিয়ে পানাহার করে সে যেন তার রোজা অব্যাহত রাখে কারণ তাকে আল্লাহ তা আলা পানাহার করিয়েছেন। (মুসলিম, হাদিস: ১,১৫৫)
দুই.
অথচ নবীজি (সা.) তাদের রোজা কাজা করতে বলেননি। যদি কাজা করা ওয়াজিব হতো তবে তিনি অবশ্যই কাজা করতে আদেশ দিতেন।
আরও পড়ুনরোজার তাৎপর্য, ইতিহাস ও উদ্দেশ্য০২ মার্চ ২০২৫তিন. অনিচ্ছাকৃত পনাহার করলে: অনিচ্ছাকৃত পানাহার করলেও রোজা ভঙ্গ হবে না। অনিচ্ছাকৃত পনাহারের উদাহরণ হলো: কুলি করার সময় কারও গলার ভেতর পানি ভেতরে চলে গেল। এ-অবস্থায় রোজা ভাঙবে না, কেননা, সে পান করার ইচ্ছা করেনি। এমনিভাবে কারও স্বপ্নদোষ হয়ে বীর্যপাত হলেও তার রোজা কোনও ক্ষতি হবে না। কেননা, সে নিদ্রায় ছিল, ইচ্ছা করেনি। আল্লাহ-তাআলা বলেন, ‘তোমরা কোনো ভুল করলে কোনো অপরাধ নেই। কিন্তু তোমাদের অন্তর ইচ্ছা করলে অপরাধ হবে। (সুরা আহযাব, আয়াত: ৫)
মশা-মাছি, কীট-পতঙ্গ ইত্যাদি অনিচ্ছাকৃত পেটের ভেতর ঢুকে গেলে রোজা ভাঙবে না। ধোঁয়া বা ধুলোবালি অনিচ্ছাকৃতভাবে গলা বা পেটের ভেতর ঢুকে গেলে রোজা ভাঙবে না। ইবনে আব্বাস (রা.) বলেন, ‘কারও গলায় মাছি ঢুকে গেলে রোজা ভাঙবে না।’ (মুাসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, ৬/৩৪৯)
আরও পড়ুনরোজার নিয়ত: বাংলা উচ্চারণ ও কখন করবেন২৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫কাউকে ভুল করতে দেখলে করণীয়
যদি দেখা যায়, রমজানে দিনের বেলায় কেউ কিছু খাচ্ছে বা পান করছে, কিংবা কোনও জ্ঞাত ব্যক্তি দেখে যে, রোজাদার পানাহার করছে তখন তাকে সাওমের কথা স্মরণ করিয়ে দেওয়া ওয়াজিব। নবীজি (সা.) বলেছেন, তোমাদের মধ্যে যে অন্যায় কাজ হতে দেখবে সে যেন হাত দ্বারা তা প্রতিরোধ করে। যদি সে এর সামর্থ্য না রাখে তবে যেন মুখ দ্বারা বাধা দেয়। যদি এরও সামর্থ্য না রাখে তবে অন্তর দ্বারা। (মুসলিম, হাদিস: ৪৯)
আর এতে কোন সন্দেহ নেই যে রোজা রত অবস্থায় পানাহার করা একটি অন্যায় কাজ। কিন্তু তার ভুলে যাওয়ার কারণে সে ক্ষমাপ্রাপ্ত। কিন্তু যে দেখে বাধা না দেবে সে দায়িত্ব এড়াতে পারবে না। অতএব রোজা পালনকারীকে কিছু খেতে দেখলে তাকে স্মরণ করিয়ে দিতে হবে।
আরও পড়ুনইফতারের দোয়া আরবি ও বাংলা উচ্চারণ, অর্থসহ০৩ মার্চ ২০২৫স্মরণ হলে করণীয়
স্মরণ হওয়ার পর রোজা পালনকারীর উচিত হবে তাড়াতাড়ি খাওয়া বন্ধ করে দেওয়া। সে এ ভুলকে খাওয়া দাওয়া করার সুযোগ মনে করে তা যেন অব্যাহত না রাখে। যদি মুখে খাবার থাকে তবে তাড়াতাড়ি ফেলে দেবে। স্মরণ হওয়ার পর গিলে ফেলা বৈধ হবে না। নিজ ইচ্ছায় আবার খেলে রোজা নষ্ট হয়ে যাবে এবং কাজা করা জরুরি হবে। বমি হওয়ার কারণে রোজা নষ্ট হয়ে গেছে মনে করে রোজা ভেঙে ফেললেও কাজা করতে হবে। (মুসান্নাফে ইবনে আবি শাইবা, ৬/১৫০)
আরও পড়ুনযে কারণে রোজা ভেঙে যায়০৪ মার্চ ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: অন চ ছ ক ত প প ন হ র কর স মরণ র করল
এছাড়াও পড়ুন:
বেড়েছে মাছ, মুরগি ও ডিমের দাম
উৎপাদন ও বাজারে সরবরাহ কম থাকায় বেড়েছে ডিমের দাম। বিক্রেতারা বলছেন, উৎপাদন কম হওয়ায় খামারিরা মুরগি বিক্রি করে দিচ্ছেন এবং টানা বৃষ্টিপাতের জন্য সরবরাহ ব্যাহত হচ্ছে।
শুক্রবার (১ আগস্ট) রাজধানীর নিউ মার্কেট, রায়েরবাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ বাজারগুলো ঘুরে ক্রেতা-বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গত সপ্তাহে ফার্মের মুরগির ডিম বিক্রি হয়েছে প্রতি ডজন ১২০ টাকায়, এ সপ্তাহে তা বিক্রি হচ্ছে ১৩০ থেকে ১৩৫ টাকায়। সেই হিসেবে ডিমের দাম বেড়েছে ১০ থেকে ১৫ টাকা।
সবজির দাম স্বাভাবিক
এ সপ্তাহে বাজারে টমেটো ছাড়া অন্যান্য সবজির দাম স্বাভাবিক আছে। গত সপ্তাহে টমেটো বিক্রি হয়েছিল ১২০ থেকে ১৩০ টাকায়, এ সপ্তাহে বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়। কাঁচামরিচ ২০০ টাকা, শশা ৭০ টাকা, বেগুন ৭০ থেকে ৮০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, গাজর (দেশি) ১২০ থেকে ১৩০ টাকা, চিচিঙ্গা ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ থেকে ৮০ টাকা, ঢেঁড়স ৪০ টাকা, মিষ্টি কুমড়া ৩০ টাকা, পটল ৫০ টাকা, কাকরোল ৬০ টাকা, কচুরমুখী ৬০ টাকা, প্রতিটি পিস জালি কুমড়া ৫০ টাকা এবং লাউ ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
মুদিবাজারে চালসহ অন্যান্য নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দাম স্থিতিশীল আছে। তবে, পেঁয়াজের দাম সামান্য বেড়েছে। এ সপ্তাহে দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০ টাকা কেজি দরে। গত সপ্তাহে ৫৫ টাকায় কেজিতে বিক্রি হয়েছে। প্রতি কেজি আলু বিক্রি হচ্ছে ২৫ থেকে ৩০ টাকায়। রসুন ১৮০ থেকে ২০০ টাকা এবং দেশি আদা ১৭০ থেকে ১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
বেড়েছে মাছ ও মুরগির দাম
বিক্রেতারা বলছেন, নদীতে পানি বৃদ্ধির জন্য জেলেদের জালে মাছ কম ধরা পড়ছে এবং উজানের পানিতে খামারিদের পুকুর ও ঘের তলিয়ে যাওয়ায় মাছের দাম বেড়েছে। বাজারে এখন মাঝারি সাইজের চাষের রুই মাছ বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে থেকে ৩৫০ টাকায়। চাষের পাঙাসের কেজি ২০০ থেকে ২২০ টাকা, তেলাপিয়া ২০০ থেকে ২২০ টাকা, মাঝারি সাইজ কৈ মাছ ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, দেশি শিং ৬৫০ থেকে ৭০০ টাকা, বড় সাইজের পাবদা ৬০০ টাকা, চিংড়ি ৭০০ থেকে ৮০০ টাকা, দেশি পাঁচমিশালি ছোট মাছ ৬০০ টাকা এবং এক কেজির বেশি ওজনের ইলিশ মাছ বিক্রি হচ্ছে ২ হাজার ৫০০ থেকে ২ হাজার ৬০০ টাকায়।
এ সপ্তাহে প্রতি কেজি ব্রয়লার মুরগি বিক্রি হচ্ছে ১৭০ থেকে ১৮০ টাকা, যা গত সপ্তাহ ছিল ১৫০ থেকে ১৬০ টাকা। সোনালি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৩০০ থেকে ৩৫০ টাকায়। গরুর মাংস ৭৫০ থেকে ৮০০ টাকা এবং খাসির মাংস ১ হাজার ১৫০ থেকে ১ হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।
ঢাকা/রায়হান/রফিক