আসন্ন ঈদকে সামনে রেখে পরিবহন চাঁদাবাজরা বেশ বেপরোয়া  হয়ে উঠেছে বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে। এর ধারাবাহিকতা গত রোববার (১৬ মার্চ) বিকেল ৪টায় বন্দর থানার ফরাজিকান্দা এলাকায় চাঁদা না দেওয়ার জের ধরে সেনাবাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত কর্পোরাল ও অটো চালক মনির উদ্দিনকে পিটিয়ে নগদ টাকা ছিনিয়ে নিয়েছে স্থানীয় চাঁদাবাজরা।

এ ঘটনায় ভুক্তভোগী  আহত অবসরপ্রাপ্ত সেনা কর্মকর্তা বাদী হয়ে ঘটনার ওই দিন সন্ধ্যায় স্থানীয়  চাঁদাবাজ আনাজ ও রাসেলের নাম উল্লেখ্য করে এবং আরো ৬/৭ জনকে অজ্ঞাত আসামী করে বন্দর থানায় ও সেনা ক্যাম্পে পৃথক লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছে।

অভিযোগ সূত্রে জানা গেছে, বন্দর উপজেলার কুশিয়ারা এলাকার মৃত আব্দুর রহমান মোল্লা ছেলে মনির উদ্দিন দীর্ঘ দিন ধরে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী কর্পোরাল পদে দায়িত্ব পালন করে বেশ কয়েক বছর ধরে অবসর গ্রহন করে। জিবীকার তাগিদে অবসরপ্রাপ্ত সেনাকর্মকর্তা অটোগাড়ী চালিয়ে জীবন যাপন করে আসছিল।

এর ধারাবাহিকতা গত রোববার বিকেল ৪টায় অটো চালক মনির উদ্দিন নবীগঞ্জ বাসস্ট্যান্ড থেকে যাত্রী নিয়ে ফরাজিকান্দা বাসস্ট্যান্ডে আসলে ওই সময় ফরাজিকান্দা এলাকার চাঁদাবাজ আনাজ ও রাসেলসহ স্থানীয় চাঁদাবাজরা অটো চালকের নিকট চাঁদা দাবি করে।

ওই সময় অটো চালক চাঁদা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে ওই সময় উল্লেখিত চাঁদাবাজরা ক্ষিপ্ত হয়ে অটো চালককে বেদম ভাবে পিটিয়ে নীলাফুলা জখম করে ঘটনাস্থল ত্যাগ করে।

এলাকাবাসী জানিয়েছে, ঈদ যত ঘনিয়ে আসছে বন্দরে পরিবহন চাঁদাবাজরা বেশ সক্রিয় হয়ে উঠেছে। বন্দরে মদনগঞ্জ, ফরাজিকান্দা, নবীগঞ্জ, ফুলহর ও মদনপুরসহ বেশ কয়েকটি স্থানে পরিবহন চাঁদাবাজরা ব্যাপক চাঁদাবাজি করে আসছে।

এ অবস্থা থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট প্রশাসনের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেছে ভূক্তভোগী সাধারণ চালকেরা। 

.

উৎস: Narayanganj Times

কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ ফর জ ক ন দ পর বহন চ

এছাড়াও পড়ুন:

‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা

বাংলাদেশে পুলিশে পেশাদারি মনোভাব গড়ে না ওঠার জন্য এই বাহিনীকে দলীয় স্বার্থে ব্যবহারকে দায়ী করছেন সাবেক পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) মুহাম্মদ নুরুল হুদা। তিনি বলেছেন, বিভাজিত সমাজে ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’—এমন নানা তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ করা কঠিন।

আজ শনিবার রাজধানীর কারওয়ান বাজারে প্রথম আলোর কার্যালয়ে ‘বাংলাদেশ পুলিশের সংস্কার: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়’ শীর্ষক গোলটেবিল বৈঠকে এ কথা বলেন তিনি। যৌথভাবে এ বৈঠক আয়োজন করে প্রথম আলো ও অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতি। বৈঠকে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর সম্পাদক মতিউর রহমান। একটি প্রবন্ধ তুলে ধরেন পুলিশের অতিরিক্ত আইজি (অবসরপ্রাপ্ত) ও বাংলাদেশ অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ কর্মকর্তা কল্যাণ সমিতির সহসভাপতি ইয়াসমিন গফুর।

নিজের পেশাজীবনের অভিজ্ঞতা তুলে ধরে সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা বলেন, ‘আমি দুই সরকারপ্রধানের (সাবেক দুই প্রধানমন্ত্রী) সঙ্গেই কাজ করেছি। অ্যাপয়েন্টমেন্ট পেয়ে একটা ভদ্রতা, সৌজন্য সাক্ষাৎ করতে হয়। দেখা করলে অনেক কথার পরও বা অল্প কথার পরও ‘এ কি আমাদের?’—এমন কথা শুনলে প্রথমেই বিব্রত বোধ করতে হয়।’

সরকারের পরিবর্তনে পুলিশে নিয়োগ, বদলি ও পদোন্নতিতে প্রভাবিত হওয়ার উদাহরণ দিয়ে মুহাম্মদ নুরুল হুদা বলেন, ‘বাড়ি ফরিদপুর যদি হয় বা ফরিদপুরের আশপাশে হয়, কোনো অ্যাপয়েন্টমেন্ট হবে না। আবার আরেক সময় বগুড়ায় বাড়ি, ঝিনাইদহে বাড়ি, দিনাজপুরের বাড়ি, তাহলে চাকরিতে নেওয়া যাবে না বা ক্ষেত্রবিশেষে পদোন্নতি হবে না।’ এ ধরনের মনোভাব থেকে বের হতে না পারলে পুলিশ বাহিনীর সংস্কার বা পেশাদারি মনোভাব ফেরানো কঠিন হবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের পরও আচরণের পরিবর্তন না হওয়ায় বিস্ময় প্রকাশ করে নুরুল হুদা বলেন, ‘এক অদ্ভুত ব্যাপার। এখানে দুই হাজারের মতো লোক মারা গেল। অথচ বিহেভিয়ারে চেঞ্জ নেই।’

দেশের আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঠিকভাবে কাজ করতে না পারার অন্তরায় হিসেবে নিয়োগে দুর্নীতি এবং সমাজে বিভাজনকে চিহ্নিত করেন সাবেক এই পুলিশপ্রধান। তিনি বলেন, ‘এই যে প্রচুর সংখ্যার লোক পয়সা দিয়ে চাকরিতে ঢুকেছে বা এখানে হলে...অনেক পয়সা হয়, এই অ্যাটিচিউড (আচরণ) থাকলে তো ল এনফোর্সমেন্ট (আইনশৃঙ্লা নিয়ন্ত্রণ) মুশকিল। আর ল এনফোর্সমেন্টের আরেকটা বড় জিনিস হচ্ছে আমি যে সমাজে কাজ করতে যাচ্ছি, সেই সমাজ কতখানি বিভাজিত।’

সংস্কারের পটভূমিতে স্বাধীন পুলিশ কমিশনের কর্মপদ্ধতি জানতে চেয়েছেন নুরুল হুদা। পুলিশ রিমান্ডের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে কি না, তা নিয়েও প্রশ্ন তোলেন তিনি।

এই গোলটেবিল বৈঠকে আইন উপদেষ্টা অধ্যাপক আসিফ নজরুল, টিআইবির নির্বাহী পরিচালক ইফতেখারুজ্জামান, বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলম, পুলিশ সংস্কার কমিশনের সদস্য অধ্যাপক শাহনাজ হুদা, অবসরপ্রাপ্ত পুলিশ অফিসার কল্যাণ সমিতির সভাপতি এম আকবর আলী, মানবাধিকার কর্মী নূর খান বক্তব্য দেন।

বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাহদী আমিন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর কেন্দ্রীয় নির্বাহী পরিষদ সদস্য সাইফুল আলম খান মিলন, জাতীয় নাগরিক পার্টির (এনসিপি) জ্যেষ্ঠ যুগ্ম আহ্বায়ক আরিফুল ইসলাম আদীব, খেলাফত মজলিসের মহাসচিব আহমদ আবদুল কাদের, পুলিশের অতিরিক্ত আইজি কাজী মো. ফজলুল করীম বৈঠকে অংশ নেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • বাবুডাইং আলোর পাঠশালা পরিদর্শন করলেন দুই বিদেশি পর্যটক
  • ২ হাজার কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগে মামলা হচ্ছে সালমান এফ রহমানের বিরুদ্ধে
  • গজারিয়ায় পরিবারকে জিম্মি করে অর্ধলক্ষাধিক টাকার মালামাল লুট
  • পুলিশ কমিশন অধ্যাদেশের খসড়া প্রস্তুত, সচিব কমিটি উপদেষ্টা পরিষদে পাঠাবে
  • পুলিশ লাইনসগুলো গোপন কারাগারে রূপান্তরিত হয়েছিল: নূর খান
  • মাঝে মধ্যে শুনতে হয়, ‘উনি কী আমাদের লোক’: আইজিপি
  • ‘আওয়ামী পুলিশ, বিএনপি পুলিশ’ তকমা নিয়ে আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণ কঠিন: সাবেক আইজিপি নুরুল হুদা
  • মবের ঘটনা নানাভাবে রাজনীতিকরণ করা হয়: এনসিপি নেতা আদীব