যুদ্ধ নিয়ে পুতিনের দর–কষাকষির কৌশল কী হবে
Published: 17th, March 2025 GMT
কালো স্যুট ও গাঢ় রঙের টাই পরা পুতিন মাইক্রোফোনের দিকে ঝুঁকে একটি আঙুল তুলে ধরেন, তবে তাঁর মুখ বন্ধ। তিনি বসে আছেন রুশ লাল ও সবুজ পতাকার সামনে। ভ্লাদিমির পুতিন শুরুতেই নিজের বক্তব্য পরিষ্কার করতে চাইলেন। ইউক্রেন যুদ্ধবিরতির প্রস্তাবে কোনো মন্তব্য করার আগেই তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পকে ধন্যবাদ জানান। ১৩ মার্চ মস্কোতে তিনি বলেন, ‘ইউক্রেন সংকট নিয়ে এত মনোযোগ দেওয়ার জন্য আমি ট্রাম্পকে কৃতজ্ঞতা জানাই।’
এটি কোনো কাকতালীয় ঘটনা নয়। রাজনৈতিক বিশ্লেষক আন্তন বারবাশিন বলেন, ‘পুতিন চাচ্ছেন, ট্রাম্প যেন বিশ্বাস করেন যে তিনি (পুতিন) আলোচনায় আগ্রহী।’ ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির মতো ট্রাম্পকে ক্ষুব্ধ করতে চান না পুতিন। বরং বারবাশিনের মতে, রুশ প্রেসিডেন্ট কৌশলগতভাবে এমন বার্তা দিতে চান যাতে ট্রাম্প তাঁর সঙ্গে আলোচনা করতে আগ্রহী হন এবং কোনো সমঝোতায় আসেন।
ওভাল অফিসে হলুদ আসনে বসে আছেন জেলেনস্কি ও ট্রাম্প। জেলেনস্কি সম্পূর্ণ কালো পোশাকে। তিনি ট্রাম্পের দিকে তাকিয়ে আছেন। হাত দিয়ে কিছু বোঝানোর চেষ্টা করছেন। ট্রাম্প নীল স্যুট ও লাল টাই পরে, তাঁর দিকে আঙুল উঁচিয়ে কথা বলছেন। মুখে কপট বিরক্তির ছাপ।
তবে পুতিনের চাওয়া সমঝোতা ট্রাম্পের ভাবনার চেয়ে আলাদা হতে পারে। ট্রাম্প চান, অন্তত ৩০ দিনের জন্য রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে যুদ্ধবিরতি হোক। পুতিন এটিকে সমর্থন করার ইঙ্গিত দিলেও বলেছেন, ‘কিছু বিষয় আছে, যা নিয়ে আলোচনা করতে হবে’। এই ‘কিছু বিষয়’ কী? এইগুলো থেকে বোঝা যায়, রাশিয়া এখন কী পরিকল্পনা করছে!
পুতিন যে ‘কিছু প্রশ্ন’ উত্থাপন করেছেন, সেগুলো আসলে পরোক্ষ আপত্তি নয়, বরং স্পষ্ট দাবি। তিনি চান, রাশিয়ার কুর্স্ক অঞ্চলে এখনো লড়াইরত ইউক্রেনের সেনারা আত্মসমর্পণ করুক। যুদ্ধবিরতির সময় ইউক্রেন যেন নতুন কোনো সেনা মোতায়েন করতে না পারে। একই সঙ্গে, পশ্চিমা দেশগুলো যেন কিয়েভে অস্ত্র সরবরাহ বন্ধ করে দেয়।
পুতিনের মতে, এই যুদ্ধবিরতি ‘দীর্ঘমেয়াদি শান্তির পথে এগিয়ে নিয়ে যাবে এবং সংঘাতের মূল কারণ দূর করবে’। তবে এই অস্পষ্ট বক্তব্যের উদ্দেশ্য হলো, আলোচনাকে মস্কোর দীর্ঘমেয়াদি লক্ষ্যগুলোর দিকে নিয়ে যাওয়া।
কুর্স্ক শহরে দেয়াল চিত্রের পাশ দিয়ে হেঁটে যাচ্ছেন একজন নাগরিক.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ইউক র ন
এছাড়াও পড়ুন:
দুবাই থেকে দেশে ফিরে বিমানবন্দরে গ্রেপ্তার ৫৭ মামলার আসামি
চট্টগ্রামে বাড়ি। তাঁর বিরুদ্ধে রয়েছে ৫৭টি মামলা। তবে তিনি প্রায় পাঁচ বছর ধরে পালিয়ে ছিলেন দুবাইয়ে। গ্রেপ্তার এড়াতে সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর হয়ে দেশে ফিরছিলেন। এরপরও তাঁর রক্ষা হয়নি তাঁর। সিলেটে বিমানবন্দর থেকেই পুলিশের হাতে গ্রেপ্তার হয়েছেন পলাতক এই আসামি।
গতকাল শনিবার বিকেল চারটার দিকে গ্রেপ্তার হওয়া এই ব্যক্তির নাম মোহাম্মদ রুহুল আমিন (৫৫)। বিমানবন্দরে নিয়োজিত ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে চট্টগ্রামের পটিয়া থানার পুলিশের কাছে হস্তান্তর করে। আজ রোববার সকালে তাঁকে আদালতের মাধ্যমে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
মোহাম্মদ রুহুল আমিনের বাড়ি পটিয়া উপজেলার জঙ্গলখাইন ইউনিয়নের পাইরোল গ্রামে। তাঁর বাবার নাম আবদুস সালাম। চট্টগ্রাম নগরের চাক্তাইয়ে ফিশারিঘাটে মাছের আড়ত ছিল রুহুল আমিনের।
পুলিশ জানায়, মোহাম্মদ রুহুল আমিনের বিরুদ্ধে হওয়া মামলাগুলোর বেশির ভাগই চেক প্রতারণার অভিযোগে করা। এর মধ্যে ১০টি মামলায় তাঁর সাজা হয়েছে। বাকি মামলা বিচারাধীন। বিদেশভ্রমণে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও পরোয়ানাভুক্ত এই আসামি সাজা ও গ্রেপ্তার এড়াতে দুবাইয়ে পালিয়ে যান। পাঁচ বছর পর সেখান থেকে গোপনে সিলেট হয়ে দেশে ফিরছিলেন তিনি।
পটিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নুরুজ্জামান আজ দুপুরে প্রথম আলোকে বলেন, পটিয়া থানার পুলিশের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে ইমিগ্রেশন পুলিশ তাঁকে বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করেছে। গ্রেপ্তার রুহুল আমিনকে গতকাল রাতেই সিলেট থেকে পটিয়ায় নিয়ে আসা হয়। এরপর আজ সকালে পটিয়া জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।