২০৩৪ সালে ভারতের খুচরা বাজার হবে ১৯০ লাখ কোটি রুপির
Published: 17th, March 2025 GMT
বিশ্বের অন্যতম দ্রুত বর্ধনশীল বাজার ভারত। সেই দেশটির খুচরা বিক্রির বাজার আগামী ২০৩৪ সালের মধ্যে ১৯০ লাখ কোটি রুপিতে উঠে যাবে বলে পূর্বাভাস দিয়েছে দুটি বাণিজ্য গবেষণা সংস্থা।
ক্রমবর্ধমান এই বাজারে যেসব খুচরা বিক্রেতা বিভিন্ন প্রান্তের ভিন্ন ক্রেতা মানসিকতার সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারবে, তারা সবচেয়ে বেশি লাভবান হবে। বোস্টন কনসাল্টিং গ্রুপ (বিসিজি) ও রিটেলার্স অ্যাসোসিয়েশন অব ইন্ডিয়ার (রাই) যৌথ গবেষণায় এই তথ্য তুলে ধরা হয়েছে। খবর ইকোনমিক টাইমস।
২০২৪ সালে ভারতের খুচরা বিক্রির বাজার ৮২ লাখ কোটি রুপিতে উঠেছে। ১০ বছর আগে অর্থাৎ ২০১৪ সালে এই বাজারের আয়তন ছিল ৩৫ লাখ কোটি রুপি। অর্থাৎ ১০ বছরে বাজারের আকার দ্বিগুণ হয়েছে। ক্রেতাদের ক্রয়ক্ষমতা বৃদ্ধি পাওয়া ও ভারতীয় অর্থনীতির প্রবৃদ্ধির ওপর ভর দিয়ে গত ১০ বছর ভারতের খুচরা বাজার ৮ দশমিক ৯ শতাংশ হারে বেড়েছে বলে জানিয়েছে সংস্থা দুটি। ‘উইনিং ইন ভারত অ্যান্ড ইন্ডিয়া: দ্য রিটেল ক্যালেইডোস্কোপ’ শীর্ষক প্রতিবেদনে তারা এই তথ্য জানিয়েছে।
ভারতের মতো বিশাল দেশে ক্রেতাদের চাহিদা ও কেনাকাটার অভ্যাস পৃথক। এমনকি একই শহরে নানা বৈচিত্র্যের মানুষ দেখা যায়। খুচরা পণ্য বিক্রেতাদের এই বাজারে সফল হতে গেলে সব খুঁটিনাটি জানার পাশাপাশি নতুন নতুন সুযোগ খুঁজতে হবে বলে মনে করে সংস্থা দুটি। কোন ক্ষেত্রে ব্যবসা করলে সফলতা আসবে, তা চিহ্নিত করার পর দ্রুত সেই সুযোগের সদ্ব্যবহার করলেই কাঙ্ক্ষিত ফল পাওয়া যাবে, প্রতিবেদনে এমনটাই জানিয়েছে বিসিজি-রাই।
কোভিড মহামারির সময় বাদ দিলে সাধারণ ভারতীয় ক্রেতাদের পণ্য কেনাকাটায় প্রবৃদ্ধির হার মোটামুটি একই রকম ছিল। ২০২৪-২০৩৪ সালের মধ্যে এই বৃদ্ধির হার সর্বোচ্চ পর্যায়ে পৌঁছাবে বলে মনে করছে বিসিজি ও রাই।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, ‘ভারতের খুচরা পণ্যের বাজার অনেক বড় এবং ক্রমেই তা বড় হচ্ছে। ২০৩৪ সালের মধ্যে তা ১৯০ লাখ কোটি রুপির ঘরে উঠে যাবে। খুচরা বাজারের এই বাড়বাড়ন্তের পেছনে নানা মানসিকতার ক্রেতার সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ার বড় ভূমিকা আছে। ভারতে অবস্থাপন্ন পরিবারের সংখ্যা যেমন বাড়ছে, তেমনি খরচ করে কেনা পণ্য কতটা কাজে লাগবে, তা ভাবনাচিন্তা করার মানসিকতাও ক্রেতাদের মধ্যে দেখা যাচ্ছে। কাজেই খুচরা বিক্রেতাদের সব দিক বিবেচনা করে ভারসাম্য বজায় রাখার চেষ্টা করতে হবে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
সফলতা পেতে খুচরা বিক্রেতাদের জটিল পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য তৈরি থাকতে হবে বলে পরামর্শ দিয়েছে বিসিজি-রাই। একাধিক মাধ্যম ব্যবহার করে কেনাকাটা করা ও ডিজিটাল পেমেন্ট আগামী দিনে বাড়তে থাকবে বলেই মনে করে খুচরা বিক্রেতাদের সংগঠন ও উপদেষ্টা সংস্থাটি। যদিও এখন পর্যন্ত মোট কেনাকাটার ৫৮ শতাংশ সরাসরি হয়ে থাকে বলেও প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিসিজি-রাই আরও জানিয়েছে, ভারতের ক্রেতাদের মধ্যে আন্তর্জাতিক মানের পণ্য কেনার প্রবণতা ও ব্র্যান্ড প্রীতি বাড়লেও ঘরোয়া পণ্য নিয়ে গর্ববোধ চলে যায়নি।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: ২০৩৪ স ল
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ