সিলেটের ওসমানি আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে সকাল থেকেই উৎসবের আবহ। এসেছেন বাংলাদেশ ফুটবল ফেডারেশনের অন্তত আটজন কর্মকর্তা। জাতীয় দলের নতুন স্পনসর প্রতিষ্ঠানের কর্মকর্তারা এসেছেন ফুল নিয়ে। বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাড়তে থাকে ফুটবলপ্রেমীর সংখ্যা। উদ্দেশ্য, বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন তারকা হামজা চৌধুরীকে বরণ।

বেলা পৌনে ১২টায় বিমানবন্দরে অবতরণ করে হামজাকে বহনকারী বিমান। খবরটা কানে যেতেই স্লোগান ওঠে ভিড়ের মধ্যে। অনেকের হাতে বাংলাদেশের পতাকা। অনেকের হাতে অভিনন্দন জানানো ব্যানার। এরই মধ্যে কেউ কেউ গ্যালারির মতো করে ফ্লেয়ার ছোড়েন।

সাধারণত বিদেশ থেকে কিছু জয় করে এলে বিমানবন্দরের বাইরে সমর্থকেরা ভিড় জমান। হামজা বাংলাদেশের হয়ে এখনো কিছু জয় করেননি। তবে জয় করবেন এমন আশা নিয়ে সমর্থকেরা বুক বেঁধেছেন। লন্ডন থেকে হামজা দেশে আসাকে কেন্দ্র করে বিমানবন্দরে গণমাধ্যমকর্মীদেরও প্রচণ্ড ভিড় । অনেকে এসেছেন ঢাকা থেকে। পেশাদার সংবাদকর্মীদের পাশাপাশি অনেক ইউটিউবারও হাজির হয়েছেন।

এক ফাঁকে ভিভিআইপি প্রবেশ গেটের বাইরে এসে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলেন হামজা চৌধুরীর বাবা মোরশেদ দেওয়ান চৌধুরী । তিনি বলেন, ‘মাতৃভূমির প্রতি অসামান্য টানের কারণে সে আসছে। শেকড় যাতে ভুল না যায় সে কারণেই তাকে আমি একে এখানে নিয়ে এসেছি। আমি তাকে জোর করিনি। সে নিজের ইচ্ছাতে এসেছে।’ দেশবাসী যে প্রত্যাশা করছে হামজাকে নিয়ে হামজা তা পূরণ করতে পারবেন বলে তার বাবার আশা।

হামজার বাবা কথা বলার সময় অনেকটা আবেগপ্রবণ হয়ে পড়েন। আজকের দিনটা যে তার জন্য আবেগের , আনন্দের। অনেক দিন ধরে অপেক্ষা করছেন এই দিনটির জন্য। ছেলে বাংলাদেশ জাতীয় দলের জার্সিতে আন্তর্জাতিক ফুটবল খেলবেন, একজন বাবা হিসেবে এর চেয়ে বড় গর্বের কিছু নেই তার জন্য।

হামজার বাবা জানালেন, সিলেট বিমানবন্দরে নামার পর হামজাকে নিয়ে যাওয়া হবে হবিগঞ্জের গ্রামের বাড়িতে। সেখানে স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে দেখা করবেন, কথা বলবেন তিনি। আজ সেখানে ইফতার বিতরণ করা হবে গরিবদের মধ্যে। হামজা নিজে একটি এতিমখানা চালান। সেখানে ইফতারি বিতরণ করে হামজা নিজের বাসায় আসবেন।

.

উৎস: Prothomalo

এছাড়াও পড়ুন:

লামিনে ‘মেসি’ ইয়ামাল

১৭ বছর বয়সী ক্রিস্টিয়ানো রোনালদো: ১৯ ম্যাচ, ৫ গোল, ৪ গোলে সহায়তা।

১৭ বছর বয়সী লিওনেল মেসি: ৯ ম্যাচ, ১ গোল, গোলে সহায়তা নেই।

১৭ বছর বয়সী লামিনে ইয়ামাল: ১০০ ম্যাচ, ২২ গোল, ৩৩ গোলে সহায়তা।

মেসি–রোনালদোর সঙ্গে তুলনা নয়, লামিনে ইয়ামালের শুরুটা বোঝাতে এই পরিসংখ্যান হাজির করেছে টিএনটি স্পোর্টস। ধূমকেতুর মতো শুরু হলেও ধূমকেতুর মতোই মিলিয়ে যাওয়ার পাত্র তিনি নন।

বার্সেলোনার এস্তাদি অলিম্পিক লুইস কোম্পানিসে  গত রাতের ম্যাচটি স্মরণ করতে পারেন। ৬ গোলের থ্রিলার, যেখানে বার্সেলোনা–ইন্টার মিলান সেমিফাইনাল প্রথম লেগের ‘ক্লাসিক’ লড়াই ৩–৩ গোলে অমীমাংসীত। দুই দলের হয়েই ‘সুপার হিরো’ ছিলেন বেশ কজন। ইন্টারের যেমন ডেনজেল ডামফ্রিস ও মার্কাস থুরাম, বার্সার তেমনি রাফিনিয়া, ফেরান তোরেসরা। কিন্তু সবাইকে ছাপিয়ে ঠিকই রবির কিরণের মতো আলো দিয়েছেন এক কিশোর—লামিনে ইয়ামাল নাসরাউয়ি এবানা। সংক্ষেপে লামিনে ইয়ামাল।

আরও পড়ুন৬ গোলের থ্রিলারে বার্সেলোনা–ইন্টার সেয়ানে সেয়ানে টক্কর৮ ঘণ্টা আগে

২৪ মিনিটে ইয়ামালের করা গোলটির প্রসঙ্গে পরে আসা যাবে। যেভাবে খেলেছেন তাতে গোলটি না করলেও লোকে কাল রাতে তাঁর পারফরম্যান্স মনে রাখতেন। পরিসংখ্যান বলছে ১০২টি টাচ, একটি গোল, ২টি গোল হওয়ার মতো পাস, ৬টি শট (পোস্টে মেরেছেন দুবার) এবং ১০টির মধ্যে ৬টি সফল ড্রিবলিং।

কিন্তু পরিসংখ্যানে এ তথ্য নেই—মাঠে ডান প্রান্তকে ইয়ামাল ফাইনালে ওঠার হাইওয়ে বানিয়ে যতবার কাট–ইন করে ইন্টারের বক্সে ঢুকেছেন, সেটা আসলে ইতালিয়ান ক্লাবটির রক্ষণের জন্য দুঃস্বপ্নের। প্রতিবারই মৌমাছির মতো ছেঁকে ধরা হয়েছে ইয়ামালকে। কিন্তু আটকানো কি সম্ভব হয়েছে? রাত থেকেই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভিডিওগুলো ভাসছে। সেসব আসলে ইয়ামালের পায়ের কারুকাজে ইন্টারের রক্ষণকে স্রেফ খোলামকুচির মতো উড়িয়ে দেওয়ার ভিডিও।

ইয়ামাল কত ভয়ংকর সেটা এই এক ছবিতেই পরিস্কার। সবাই ছেঁকে ধরেও তাঁকে আটকাতে পারেননি

সম্পর্কিত নিবন্ধ