আওয়ামী লীগ সরকারের সাবেক স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় প্রতিমন্ত্রী স্বপন ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা দিয়েছেন যশোরের আদালত। 

সোমবার (১৭ মার্চ) দুপুরে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা দুর্নীতি দমন কমিশনের (দুদক) প্রধান কার্যালয়ের সহকারী পরিচালক খোরশেদ আলমের আবেদনের প্রেক্ষিতে সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ শেখ নাজমুল আলম এ আদেশ দেন। 

আরো পড়ুন: স্বপন ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রীর বিরুদ্ধে দুদকের মামলা 

আরো পড়ুন:

রাজশাহীতে বাসায় ঢুকে চাঁদা দাবি, গ্রেপ্তার ৪

ধর্ষণের দায় একাই নিচ্ছেন মাগুরার সেই শিশুর বোনের শ্বশুর

এছাড়া, একইদিন পৃথক আরেকটি আবেদনের প্রেক্ষিতে তন্দ্রা ভট্টাচার্যের আয়করের মূল নথি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক। খুলনা কর অঞ্চলের ডেপুটি কমিশনার অব ট্যাক্সেস সার্কেল-৮ যশোরকে তার মূলনথি সংগ্রহের নির্দেশনা দেওয়া হয়েছে। 

বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন আদালতে দুদুকের পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট সিরাজুল ইসলাম। 

স্বপন ভট্টাচার্য যশোর-৫ (মনিরামপুর) আসন থেকে দুইবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। দ্বাদশ জাতীয় সাংসদ নির্বাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েও স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছে পরাজিত হন তিনি। গত বছরের ৫ আগস্ট রাজনৈতিক পট পরিবর্তনের পর স্ত্রীসহ অস্ট্রেলিয়ায় মেয়ের কাছে অবস্থান করছেন সাবেক এই সংসদ সদস্য বলে দলীয় সূত্রে জানা গেছে। 

আরো পড়ুন: যে কারণে হারলেন স্বপন ভট্টাচার্য

আদালত সূত্র জানায়, গত ২৪ ডিসেম্বর স্বপন ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের বিরুদ্ধে জ্ঞাত আয় বহির্ভূত সম্পদের অর্জনের মামলা হয়। মামলার অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, স্বপন ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী পরস্পর যোগসাজশে জ্ঞাত আয়ের সঙ্গে অসঙ্গতিপূর্ণ ৫ কোটি ৫৫ লাখ ৪৫ হাজার ৩৯১ টাকার সম্পদ অর্জন করেন। 

এছাড়াও ১০টি ব্যাংক হিসাবে ১০ কোটি ৩৬ লাখ ৩৫ হাজার ৫৮৩ টাকার সন্দেহজনক লেনদেনের তথ্য গোপন করার জন্য রূপান্তর, হস্তান্তর ও স্থানান্তর করে দুদক আইনে শাস্তিযোগ্য অপরাধ করেছেন তন্দ্রা ভট্টাচার্য। এই মামলার তদন্তকালে তদন্ত কর্মকর্তা স্বপন ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যের দেশ ত্যাগে নিষেধাজ্ঞার আবেদন জানান। বিচারক তা মঞ্জুর করেন। 

একই দিন, একই অভিযোগে আরও একটি মামলা করে দুদক। ওই মামলায় স্বপন ভট্টাচার্য ও তার স্ত্রী তন্দ্রা ভট্টাচার্যকে আসামি করা হয়। এ মামলায় উল্লেখ করা হয়, ২ কোটি ৪৮ লাখ ৭১ হাজার ১৫১ টাকা মূল্যের স্থাবর-অস্থাবর সম্পদ রয়েছে স্বপন ভট্টাচার্যের। এছাড়া নিজের নামে ১৯টি ব্যাংক হিসাবে ৪১ কোটি ৬৪ লাখ ৮২ হাজার ৩৩৪ টাকার অস্বাভাবিক লেনদেনের তথ্য পেয়েছে দুদক। দুর্নীতি ও ঘুষ নেওয়ার মাধ্যমে পাওয়া অর্থ গোপন করার উদ্দেশ্যে এর রূপান্তর, স্থানান্তর ও হস্তান্তর করে মানিলন্ডারিংয়ের অপরাধ করেছেন বলে মামলায় উল্লেখ করা হয়েছে। এ কাজে তার স্ত্রী তাকে সহায়তা করেন। এ মামলায় তন্দ্রা ভট্টাচার্যের আয়করের মূল নথি জব্দের নির্দেশ দিয়েছেন বিচারক।

ঢাকা/রিটন/মাসুদ

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর

এছাড়াও পড়ুন:

আয়কর রিটার্নে ভুল হলে কীভাবে ঠিক করবেন

বার্ষিক আয়কর বিবরণী বা রিটার্ন জমায় ইচ্ছায় হোক আর অনিচ্ছায় হোক, ভুল হতেই পারে। করের হিসাবেই বেশি ভুল হয়। কর রেয়াতের হিসাবেও ভুল করেন অনেক করদাতা। এ ছাড়া করদাতারা এমনিতেই আয়কর নিয়ে ভয় ও শঙ্কায় থাকেন।

যদি কোনো কারণে রিটার্ন ভুল হয়ে যায়, তাহলে আপনার মাথায় আকাশ ভেঙে পড়বে না। আপনি রিটার্ন জমার পরও তা সংশোধন করতে পারবেন। দুশ্চিন্তার কারণ নেই।
এবার দেখা যাক, কীভাবে রিটার্নের ভুল সংশোধন করবেন।

তিন ভুল সংশোধন করা যাবে

রিটার্নে তিন ধরনের ভুল সংশোধন করা যাবে। রিটার্ন দাখিলের পর যদি করদাতার কাছে প্রতীয়মান হয় যে তাঁর প্রদেয় কর সঠিকভাবে পরিগণিত হয়নি বা সঠিক অঙ্কে পরিশোধিত হয়নি, তাহলে তিনি সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে পারবেন। যেসব ভুল সংশোধন করা যাবে, তা হলো—১. প্রদর্শিত আয়, ২. দাবি করা কর অব্যাহতি বা ক্রেডিট ও ৩. অন্য যেকোনো যৌক্তিক কারণে ভুল।

যাঁরা ভুল সংশোধন করতে পারবেন না

রিটার্নে তিন ধরনের কারণে ভুল সংশোধন করা যাবে না। এগুলো হলো—১. রিটার্ন দাখিল করার তারিখ থেকে ১৮০ দিন শেষ হওয়ার পর, ২. সংশোধিত রিটার্ন প্রথমবার দাখিলের পর ও ৩. মূল রিটার্নটি নিরীক্ষার জন্য নির্বাচিত হওয়ার পর।

অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন

করদাতাদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন জমার সুবিধা চালু করেছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। এ জন্য ওয়েবসাইটে প্রবেশ করে সংশোধন অপশন ব্যবহার করতে হবে। সংশোধনী রিটার্নে যদি করের পরিমাণ বাড়ে, তাহলে নিয়ম অনুসারে বাড়তি করসহ জরিমানা দিতে হবে।

যেসব করদাতা অনলাইনে মূল আয়কর রিটার্ন দাখিলের পর ভুলত্রুটির কারণে অনলাইনে সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে চান, তাঁদের জন্য অনলাইনে সংশোধিত আয়কর রিটার্ন দাখিলের ব্যবস্থা চালু আছে। যাঁরা সংশোধন অপশন ব্যবহারের জন্য অনলাইনে প্রবেশ করবেন, তাঁদের অবশ্যই সংশোধিত রিটার্ন দাখিল করতে হবে।

আয়কর দিবস–পরবর্তী সময়েও বছরব্যাপী অনলাইনে আয়কর রিটার্ন দাখিল করার সুবিধাও চালু আছে।

সরাসরি রিটার্ন দাখিল

আয়কর আইনে কর কার্যালয়ে গিয়েও ভুল সংশোধনী রিটার্ন দেওয়ার সুযোগ রাখা হয়েছে। সর্বজনীন স্বনির্ধারণী পদ্ধতিতে কোনো করদাতা রিটার্ন দেওয়ার পর যদি দেখেন যে অনিচ্ছাকৃত ভুলে রিটার্নে কম আয় দেখিয়েছেন, কম কর পরিশোধ করেছেন কিংবা বেশি কর রেয়াত, কর অব্যাহতি বা অন্য কোনো কারণে কম কর পরিশোধ করেছেন। হিসাবের ভুলেও এমন হতে পারে। তাহলে সংশ্লিষ্ট উপকর কমিশনারের কাছে এই রিটার্ন জমা দিতে হয়।

আপনি ভুল সংশোধনী রিটার্ন জমার পর উপকর কমিশনার যদি সন্তুষ্ট হন যে সব শর্ত পূরণ করা হয়েছে, তাহলে তিনি রিটার্নটি গ্রহণ করবেন। প্রাপ্তি স্বীকার রসিদ দেবেন।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • আয়কর রিটার্নে ভুল হলে কীভাবে ঠিক করবেন