সাকিবের গুলিবিদ্ধ চোখে আলো ফেরানো গেল না
Published: 17th, March 2025 GMT
‘চোখটা ফালায় দিতে হইছে। ছেলেটার মনটা খুব খারাপ। আমার যে কেমন লাগে! তাও ছেলেরে সান্ত্বনা দিয়া বলি, বাবা, মন খারাপ কইরো না।’—হাসপাতালে ছেলের শয্যাপাশে বসে কথাগুলো বলছিলেন সাবিনা ইয়াসমিন। এর মাত্র দুই ঘণ্টা আগে ছেলে মো. সাকিব হাসানের (১২) ডান চোখে অস্ত্রোপচার হয়েছে। সে রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে ভর্তি রয়েছে।
গত বছরের জুলাই গণ-অভ্যুত্থানের সময় ১৯ জুলাই সাকিবের ডান চোখে ছররা গুলি লাগে। চার মাস আগে ওই চোখের সম্পূর্ণ দৃষ্টিশক্তি হারায় সে। আট মাস চিকিৎসার পর আজ সোমবার ডান চোখে অস্ত্রোপচার করে প্রস্থেটিক আই (কৃত্রিম চোখ) স্থাপন করা হয়েছে।
বেলা একটায় হাসপাতালের ৪৩৫ নম্বর কক্ষে গিয়ে দেখা যায়, সাকিব ঘুমাচ্ছে। মাঝেমধ্যে নড়াচড়া করছে। বিড়বিড় করে মাকে কিছু বলল, মা তখন একটা বালিশ এনে হাতের নিচে দিয়ে দিলেন।
যেভাবে গুলিবিদ্ধ হয় সাকিবসাকিবের বাবা আবু তালেব রংমিস্ত্রির কাজ করতেন। চর্মরোগের কারণে অসুস্থতায় বর্তমানে নিয়মিত কোনো কাজ করেন না। শেরপুরের ঝিনাইগাতি উপজেলায় গ্রামের বাড়িতে সাকিবের ১১ বছর বয়সী ছোট ভাইকে নিয়ে থাকেন। সাকিবের মা সাবিনা গৃহকর্মীর কাজ করেন। তাঁর একার আয়ে চলে সংসার। সাকিবকে নিয়ে তিনি থাকেন রাজধানীর মিরপুরের মাটিকাটা এলাকায়।
গত বছরের জুলাইয়ে আন্দোলন শুরুর আগে স্বামী গ্রামে চলে যান জানিয়ে সাবিনা বলেন, তিনি দুই সন্তানকে নিয়ে মাটিকাটা এলাকার বাসায় থাকতেন। সাকিব স্থানীয় শিশু মঙ্গল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে তৃতীয় শ্রেণিতে আর ছোট ছেলে দ্বিতীয় শ্রেণিতে পড়ত।
ঘটনার দিনের কথা বলতে গিয়ে সাবিনা বলেন, তখন স্কুল বন্ধ। অন্য দিনের মতো তিনি কাজে বেরিয়ে যান। বেলা তিনটার দিকে ইসিবি চত্বরে বন্ধুদের সঙ্গে আন্দোলনে গেলে সাকিবের ডান চোখে গুলি লাগে।
হাসপাতালে ছেলের শয্যাপাশে মা সাবিনা ইয়াসমিন। আজ রাজধানীর জাতীয় চক্ষু বিজ্ঞান ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কুয়েটের অন্তর্বর্তী উপাচার্য হলেন অধ্যাপক হযরত আলী
খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্যের দায়িত্ব পেয়েছেন চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (চুয়েট) পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. মো. হযরত আলী।
বৃহস্পতিবার শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের এক প্রজ্ঞাপনে তাকে এই পদে নিযুক্ত করা হয়।
শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সহকারী সচিব এ এস এম কাসেম স্বাক্ষরিত এক প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলরের অনুমোদনক্রমে খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় আইন অনুসারে এই বিশ্ববিদ্যালয়ে পূর্ণকালীন উপাচার্য নিয়োগের আগ পর্যন্ত অন্তর্বর্তী সময়ের জন্য ড. মো. হযরত আলীকে কুয়েটের উপাচার্য পদের রুটিন দায়িত্ব পালনের জন্য নিয়োগ দেওয়া হলো।
প্রজ্ঞাপনে বলা হয়, তিনি তার বর্তমান পদের সমপরিমাণ বেতনভাতা প্রাপ্য হবেন। তিনি বিধি অনুযায়ী পদ সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সুবিধা ভোগ করবেন। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা হিসেবে সার্বক্ষণিকভাবে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে অবস্থান করবেন। রাষ্ট্রপতি ও চ্যান্সেলর প্রয়োজন মনে করলে যে কোনো সময় এ নিয়োগ বাতিল করতে পারবেন।
এর আগে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত ২৫ এপ্রিল কুয়েটের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ এবং উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. শেখ শরীফুল আলমকে অব্যাহতি দিয়েছিল শিক্ষা মন্ত্রণালয়।