খুলনার কয়রায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকায় বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর নাম। আগের করা তালিকা পরিবর্তন অথবা সংশোধন না হওয়ায় তারা এ সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন। 
জানা যায়, তালিকায় আওয়ামী লীগ নেতাকর্মীর পাশাপাশি সচ্ছল ও মৃত ব্যক্তিদের নামও রয়েছে। যে কারণে তালিকা পরিবর্তন করে কর্মসূচির নীতিমালা অনুযায়ী প্রকৃত সুবিধাভোগীদের নাম অন্তর্ভুক্তির দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী।
সর্বশেষ গত ১০ মার্চ থেকে সুবিধাভোগীদের মাঝে চাল বিতরণ শুরু হয়েছে। চাল বিতরণ স্থানে গিয়ে দেখা গেছে.

উপস্থিত কার্ডধারীদের বেশির ভাগই আওয়ামী লীগ নেতাকর্মী। উপজেলার বাগালি ইউনিয়নের ৩ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে হোগলা গ্রামের মৃত এলাহী বকস পাড়ের ছেলে রেজাউল করিম, আবারুল ইসলাম ও আজহারুল ইসলাম নামে তিন ব্যক্তিকে চাল নিতে দেখা গেছে। তারা সবাই সচ্ছল এবং আওয়ামী লীগ পরিবারের সদস্য। 

একই অবস্থা দেখা গেছে অন্যান্য স্থানেও। মহারাজপুর ইউনিয়নের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের আলম সরদার, বজলুল করিম, আরাফাত হোসেন আওয়ামী লীগের কর্মী ও সচ্ছল পরিবারের সদস্য। এসব ব্যক্তির নামেও খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির কার্ড রয়েছে। 
উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, কয়রা উপজেলার সাতটি ইউনিয়নে এ কর্মসূচির সুবিধাভোগীর সংখ্যা ১০ হাজার ২৪৭ জন। ২০১৬-২০১৭ অর্থবছরে এসব তালিকা প্রস্তুত করা হয়েছে। সুবিধাভোগীরা বছরে পাঁচ মাস ১০ টাকা কেজি দরে ৩০ কেজি করে চাল নিতে পারবেন। প্রায় ১০ বছর আগের করা তালিকা সংশোধন না হওয়ায় সেখানে অনেক মৃত ব্যক্তির নামও রয়েছে। তালিকার ৮৩৬ ক্রমিকের আরাফত হোসেন মারা গেছেন তিন বছর আগে। তাঁর নাম এখনও বহাল রয়েছে। তালিকা ঘেঁটে এ রকম শতাধিক মৃত ব্যক্তির নাম পাওয়া গেছে, যাদের নামে এখনও চাল বিতরণ করা হচ্ছে।
উপজেলায় খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির চাল বিতরণের ডিলার রয়েছেন ২১ জন। তারা জানিয়েছেন, খাদ্য নিয়ন্ত্রকের কার্যালয় থেকে আসা তালিকা ও কার্ড অনুযায়ী তারা চাল বিতরণ করে থাকেন। 
বাগালি ইউনিয়নের ৯ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য আয়ুব আলী অভিযোগ করেন, খাদ্যবান্ধব কর্মসূচির তালিকা প্রস্তুতের সময় এলাকার আওয়ামী লীগ নেতাদের প্রাধান্য দিতে হয়েছে। তাদের অনুমতি ছাড়া কারও নাম তালিকায় দেওয়া সম্ভব হয়নি। 

দক্ষিণ বেদকাশি ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য ও ইউনিয়ন যুবদলের আহ্বায়ক কোহিনুর আলম বলেন, এলাকার হতদরিদ্র পরিবারের সদস্যদের এ সুবিধা পাওয়ার কথা থাকলেও, 
সচ্ছল ব্যক্তিরাই সুবিধা পেয়ে আসছেন বেশি। শিগগির তালিকা সংশোধন করে দরিদ্র পরিবারের সদস্যদের নাম তালিকায় অন্তর্ভুক্ত করার দাবি জানান তিনি। 
এ কর্মসূচির উপজেলা কমিটির সদস্য সচিব ও উপজেলা খাদ্য নিয়ন্ত্রণ কর্মকর্তা দেব প্রসাদ দাস বলেন, আগের করা তালিকায় যে অনেক অনিয়ম হয়েছে, তা তিনি জানেন। কিন্তু সে সময় রাজনৈতিক চাপের কারণে চাইলেও কিছুই করার ছিল না। বর্তমানে তালিকা সংশোধনের অনুমতির জন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়ে পাঠানোর প্রক্রিয়া চলছে বলে জানান তিনি।  

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: পর ব র র সদস য ল গ ন ত কর ম চ ল ব তরণ গ র কর উপজ ল আওয় ম

এছাড়াও পড়ুন:

অফিসে আপনি কি ১১ ঘণ্টার বেশি কাজ করেন

প্ল্যান ওয়ান জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণা নিয়ে চলছে আলোচনা। সেখানে দুই হাজার ফুলটাইম কর্মজীবীর ওপর একটা জরিপ পরিচালনা করা হয়। পেশাগত কাজ বা চাপের সঙ্গে মানসিক স্বাস্থ্যের সম্পর্ক নিয়ে পরিচালিত গবেষণাটি থেকে পাওয়া গেছে চমকপ্রদ তথ্য।

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, যাঁরা কর্মক্ষেত্রে ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি কাজ করেন, তাঁদের খাদ্যাভ্যাস তুলনামূলকভাবে অস্বাস্থ্যকর, তাঁরা অন্যদের তুলনায় মানসিক চাপে ভোগেন বেশি। ঠিকমতো পানি খাওয়ার প্রবণতা কম। পরিবার, প্রকৃতি ও পোষা প্রাণীর সঙ্গে সময় কাটানোর প্রবণতাও কম। কম ঘুমান। আর যেকোনো মানসিক আঘাত থেকে সেরে ওঠার পর্যাপ্ত সময় বা সুযোগ পান না। এই মানুষেরাই বেশি হতাশায় ভোগেন।

শুধু তা-ই নয়, দ্রুত বুড়িয়ে যাওয়া এবং হৃদ্‌রোগ ও স্ট্রোকের মতো কার্ডিওভাস্কুলার রোগে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিও বেশি। যাঁরা ১১ ঘণ্টা বা তার বেশি সময় অফিস করেন, তাঁদের মধ্যে কর্মক্ষেত্রে অসুস্থ হয়ে যাওয়ার সংখ্যাও অনেক।

আরও পড়ুন২৫ বছর ধরে অফিসে যাননি তিনি১৩ মার্চ ২০২৫যদি ১১ ঘণ্টা কর্মক্ষেত্রে থাকতেই হয়, তাহলে যেসব বিষয় খেয়াল রাখবেন

রাতে ৮ ঘণ্টা ঘুমাতেই হবে। তাতে শরীর ও মস্তিষ্ক দিনের শারীরিক ও মানসিক পরিশ্রমের ধকল কাটিয়ে ওঠার সুযোগ পাবে।

কাজের ফাঁকে ফাঁকে বিরতি নিন। সবুজের দিকে তাকান। ডেস্কে গাছ রাখতে পারেন। উঠে একটু হাঁটুন। ব্যায়াম করুন। সহকর্মীর সঙ্গে চা খেতে খেতে গল্প করুন। গবেষণা জানাচ্ছে, ছোট ছোট বিরতি কাজে মনোযোগ পুনঃস্থাপন করতে সাহায্য করে এবং কাজের গুণমান বাড়ায়।

দুপুরে খাওয়ার পর একটা ন্যাপ নিতে পারেন।

২ লিটারের একটা বোতলে পানি রাখবেন। প্রতিদিন ১ বোতল পানি অবশ্যই শেষ করবেন। তা ছাড়া পানি, শরবত, জুস, ডাবের পানি, তরমুজ, শসা, আনারস ইত্যাদি খাবেন। হাইড্রেটেড থাকলে এনার্জি ধরে রেখে কাজ করা সহজ হয়।

প্রক্রিয়াজাত খাবার, কার্বোনেটেড ড্রিংক, চিনিযুক্ত খাবার বাদ দিন। এসব কেবল আপনার ক্লান্তি বাড়াবে।

আর সম্ভব হলে কর্মক্ষেত্রে কথা বলে আপনার কর্মঘণ্টা ৮ ঘণ্টায় নিয়ে আসতে পারলে তো কথাই নেই।

সূত্র: এনবিসি নিউজ

আরও পড়ুনঅফিসের বাড়তি কাজকে যেভাবে ‘না’ বলবেন১৩ মার্চ ২০২৫

সম্পর্কিত নিবন্ধ