বাংলাদেশ জাতীয় ফুটবল দলে যোগ দেওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই আলোচনার কেন্দ্রে চলে এসেছেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগের অভিজ্ঞ মিডফিল্ডার হামজা চৌধুরী। শুধু বাংলাদেশ নয়, প্রতিবেশী ভারতেও তাকে নিয়ে চলছে নানা গুঞ্জন। দেশটির শীর্ষ ক্রীড়া গণমাধ্যমগুলো তার আগমনকে ঐতিহাসিক ঘটনা হিসেবে তুলে ধরেছে।

বাংলাদেশের মাটিতে পা রাখার পর থেকেই আত্মবিশ্বাসী চৌধুরী। তার প্রথম লক্ষ্য—এশিয়ান কাপ বাছাইপর্বে ভারতকে হারানো। এ নিয়ে কোনো রাখঢাকও নেই তার কথায়। তিনি সাফ জানিয়ে দিয়েছেন, জয়ের জন্যই তিনি মাঠে নামবেন। লাল-সবুজের জার্সিতে তার আবির্ভাব যেন বাংলাদেশের ফুটবলে এক নতুন দিগন্তের সূচনা করেছে, যা স্বপ্ন দেখাচ্ছে কোটি ভক্তকে।

আগামী ২৫ মার্চ শিলংয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে হবে সেই প্রতীক্ষিত লড়াই, যেখানে মুখোমুখি হবে বাংলাদেশ ও ভারত। ভারতীয় শিবিরেও হামজার আগমনের প্রভাব স্পষ্ট। ম্যাচটি ঘিরে তাদের প্রস্তুতিতে এসেছে পরিবর্তন। এমনকি অভিজ্ঞ স্ট্রাইকার সুনীল ছেত্রীও অবসর ভেঙে ফিরেছেন শুধুমাত্র এই ম্যাচের জন্য। মালদ্বীপের বিপক্ষে একটি প্রস্তুতি ম্যাচ খেলে নিজেদের ঝালিয়ে নিচ্ছে ভারতীয় দল।

আরো পড়ুন:

নেইমারের পর ছিটকে গেলেন মেসি

সাকিব-হামজাকে ঘিরে ‘অহেতুক’ বিভাজন রেখা

এদিকে, হামজার বাংলাদেশ দলে যোগদান ভারতীয় মিডিয়ায় তুমুল সাড়া ফেলেছে। ‘ইএসপিএন ইন্ডিয়া’ সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে শেয়ার করেছে তার হাস্যোজ্জ্বল ছবি, যেখানে দেখা যায়, সিলেটের ওসমানী আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরে ছাদখোলা গাড়িতে ভক্তদের উচ্ছ্বাসের মাঝে তিনি।  

ভারতের ক্রীড়া বিষয়ক জনপ্রিয় ওয়েবসাইট ‘রেভস্পোর্টজ’ হামজার যোগদানকে ‘বাংলাদেশ ফুটবলের জন্য ঐতিহাসিক মুহূর্ত’ বলে আখ্যা দিয়েছে। অন্যদিকে, ‘ফার্স্টপোস্ট’ আরও এক ধাপ এগিয়ে শিরোনাম করেছে, ‘এফএ কাপ জয়ী হামজার বাংলাদেশে যোগদান কেন ভারতীয় ফুটবলের জন্য বড় মাথাব্যথা?’

সব মিলিয়ে হামজা চৌধুরীর আগমন শুধু বাংলাদেশ নয়, পুরো উপমহাদেশের ফুটবলে এক নতুন উত্তেজনার সৃষ্টি করেছে। এখন দেখার বিষয়, মাঠের খেলায় তিনি কতটা পার্থক্য গড়ে দিতে পারেন।

ঢাকা/আমিনুল

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ফ টবল র জন য ফ টবল

এছাড়াও পড়ুন:

মাঠ নিয়ে শ্রাবণের আফসোস

আলোচনা-সমালোচনার মধ্যেও বসুন্ধরা কিংসের গোলরক্ষক মেহেদী হাসান শ্রাবণ নিজের সেরাটা দেওয়ার চেষ্টা করেছেন। ফেডারেশন কাপের ফাইনালে আবাহনীর বিপক্ষে টাইব্রেকারে কিংসের জয়ের নায়ক ক্যারিয়ার নিয়ে কথা বলেছেন সমকালের সঙ্গে। শুনেছেন সাখাওয়াত হোসেন জয়

সমকাল: দু’দিনের ফাইনালের অভিজ্ঞতাটা কেমন হলো?
শ্রাবণ: (হাসি) না, এটা খুব কঠিন ছিল। আমরা সম্পূর্ণ প্রস্তুতি নিয়েছি এক দিন ফাইনাল খেলব, জিতব এবং উদযাপন করব। কিন্তু প্রাকৃতিক কারণে খেলা অনেকক্ষণ বন্ধ ছিল। বাকি ১৫ মিনিট আরেক দিন। এটা একটা নতুন অভিজ্ঞতা। একই চাপ দু’বার নিতে হলো।

সমকাল: এই মাঠের সমস্যার কারণেই কি এমনটা হয়েছে?
শ্রাবণ: অবশ্যই। এত বড় একটা টুর্নামেন্টের ফাইনাল খেলা যে মাঠে, সেখানে ফ্লাডলাইট নেই। যদি ফ্লাডলাইটের সুবিধা থাকত, ওই দিনই খেলাটা শেষ করা যেত। আমার মনে হয়, দেশের ফুটবলের কিছু পরিবর্তন করা উচিত। বিশেষ করে আমরা যখন জাতীয় দলের হয়ে বিদেশে খেলতে যাই, তখন দেখি অন্যান্য দেশের মাঠ খুব গতিশীল। আমাদের দেশের মাঠগুলো আন্তর্জাতিক পর্যায়ের না। প্রায় সময়ই সমস্যা হয়। আমরা স্লো মাঠে খেলি। বিদেশে গতিশীল মাঠে খেলতে গিয়ে সমস্যায় পড়তে হয়। আমাদের লিগটা যদি আন্তর্জাতিক মানের মাঠে হতো।

সমকাল: পেনাল্টি শুটআউটের সময় কী পরিকল্পনা ছিল আপনার?
শ্রাবণ: আমি আগেও বলেছি যে অনুশীলনের সময় আগের ম্যাচের টাইব্রেকার নিয়ে কাজ করেছি। কে কোন দিকে মারে, সেগুলো ট্রেনিংয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কোচ। কোচের দিকনির্দেশনা অনুযায়ী কাজ করছি এবং সফল হয়েছি।

সমকাল: এমেকার শট ঠেকানোর পর মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছেন। এটি কি আগে থেকেই পরিকল্পনা ছিল?
শ্রাবণ: না, সেভ দেওয়ার পর মাথায় এলো। তাই এমি মার্টিনেজের মতো উদযাপন করেছি। বলতে পারেন, এটি কোনো পরিকল্পনা ছিল না। তৎক্ষণাৎ মাথায় এলো।

সমকাল: জাতীয় দল আর ক্লাব– দুটোর অভিজ্ঞতা যদি একটু বলতেন।
শ্রাবণ: ক্লাব আর জাতীয় দল– দুটো ভিন্ন বিষয়। ক্লাব হচ্ছে শুধু একটা ক্লাবকে প্রতিনিধিত্ব করা। আর জাতীয় দল তো পুরো বাংলাদেশকে প্রতিনিধিত্ব করা। যারা ক্লাবে ভালো পারফরম্যান্স করে, তাদেরই জাতীয় দলে ডাকে। আর জাতীয় দলে ডাক পাওয়াটা একজন প্লেয়ারের সবচেয়ে বড় অর্জন।

সমকাল: আপনি একটি সেভ করেছেন। কিন্তু আবাহনীর মিতুল মারমা পারেননি। জাতীয় দলে বেস্ট ইলেভেনে থাকতে পারবেন?
শ্রাবণ: না না, ব্যাপারটা এমন না। ও (মিতুল) সেভ করতে পারেনি আর আমি পারছি– এটি কিন্তু বড় বিষয় না। ও কিন্তু সেমিফাইনালে সেভ করে দলকে ফাইনালে এনেছে। বরং অনুশীলনে কোচ যাঁকে ভালো মনে করেন, তাঁকেই শুরুর একাদশে রাখেন।

সমকাল: একজন গোলরক্ষক হিসেবে নিজেকে কোথায় দেখতে চান?
শ্রাবণ: আমি চাই দেশসেরা গোলরক্ষক হতে। আমার স্বপ্ন আছে, বিদেশে লিগে খেলব।    

সম্পর্কিত নিবন্ধ