বাংলাদেশিদের জন্য ওমরাহ ভিসা বন্ধ করা হয়নি। সৌ‌দি সরকা‌রের পক্ষ থে‌কে ওমরাহ ভিসা পেতে বাংলাদেশি এজেন্সির প্রতিনিধিকে যাত্রীর হোটেল বুকিং ও বিমান টিকিটের তথ্যসহ সৌদি আরবের ওমরাহ এজেন্টের সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দেওয়া হ‌য়ে‌ছে।

মঙ্গলবার (১৮ মার্চ) সচিবালয়ে ওমরাহ ভিসা জটিলতা বিষয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ পরামর্শ দিয়েছেন ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আ ফ ম খালিদ হোসেন।

এ দেশের ওমরাহ যাত্রীদের ভিসা দেওয়া হচ্ছে না, এ বিষয়টি অবহিত হওয়ার পরপরই ধর্মবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়, জা‌নি‌য়ে উপদেষ্টা বলেছেন, প্রথমে ভিসা প্রদান কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে মৌখিকভাবে অনুরোধ জানানো হয়। পরে ১৩ মার্চ ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব ভিসা প্রদান কার্যক্রম চালু রাখার বিষয়ে ঢাকাস্থ সৌদি দূতাবাসের রাষ্ট্রদূতকে একটি ডিও লেটার দেন। এর পাশাপাশি আমার সচিব সৌদি রাষ্ট্রদূতের সঙ্গে এ বিষয়ে অব্যাহতভাবে টেলিফোনে ও মোবাইল ফোনে যোগাযোগ রক্ষা করে চলেছেন।

আ ফ ম খালিদ হোসেন জানান, রাষ্ট্রদূত বর্তমানে ছুটি সৌদি আরবে আছেন। ডিও লেটারের বিষয়টি অবহিত হওয়ার পর তিনি সচিবকে একটি ফিরতি অডিও বার্তা পাঠিয়েছেন। অডিও বার্তায় তিনি জানিয়েছেন, বাংলাদেশিদের জন্য ওমরাহ ভিসা বন্ধ করা হয়নি। এক্ষেত্রে তিনি বাংলাদেশের হজ/ওমরাহ এজেন্সির প্রতিনিধিদের ওমরাহ যাত্রীদের হোটেল বুকিং বা রিজারভেশন ও এয়ারলাইন্সের টিকিটসহ সৌদি আরবের ওমরাহ এজেন্ট বা কোম্পানির সঙ্গে যোগাযোগের পরামর্শ দিয়েছেন।

উপ‌দেষ্টা জানান, তিনি (রাষ্ট্রদূত) আরো জানিয়েছেন, সৌদি ওমরাহ এজেন্ট/কোম্পানি যদি সৌদি হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ করে, তাহলে সে দেশের হজ ও ওমরাহ মন্ত্রণালয় বাংলাদেশি ওমরাহ যাত্রীদের অনুকূলে ভিসা ইস্যুর ব্যবস্থা করবে। প্রকৃতপক্ষে, বাংলাদেশিদের জন্য ওমরাহ ভিসা বন্ধ করা হয়নি বলে সৌদি রাষ্ট্রদূত নিশ্চিত করেছেন।

তিনি আরো জানান, হজ এজেন্সিজ অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের (হাব) তথ্য মোতাবেক প্রতি বছর রমজান মাসে বাংলাদেশ থেকে আনুমানিক ১ লাখ ব্যক্তি ওমরাহ পালন করে থাকেন। ওমরাহ ভিসা বন্ধ হওয়ায় বাংলাদেশের প্রায় ২০ হাজার ওমরাহ যাত্রী এ বছর রমজান মাসে ওমরাহ পালনে যেতে পারছেন না ব‌লে হাবের পক্ষ হতে আমাদের জানানো হয়েছে। ওমরাহ যাত্রীদের টিকিটের অর্থ ফেরত দিতে বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স ও সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, টিকিট সংগ্রহকারী কোনো যাত্রী ভ্রমণে অনিচ্ছুক হলে বিধি মোতাবেক তার টাকা ফেরত দেওয়া হচ্ছে।

অন্যদিকে, সৌদিয়া এয়ারলাইন্স জানিয়েছে, রমজান মাসে ভিসা না পাওয়ার কারণে যারা ওমরাহ পালনের জন্য সৌদি আরব যেতে পারবেন না, তাদের সঙ্গে আলোচনা করে ঈদুল ফিতরের পরে এবং আগামী জুলাই মাসে ওমরাহ পালনের সুযোগ রেখে টিকিট পরিবর্তন করে দেওয়া হচ্ছে।

ধর্ম সচিব এ কে এম আলতাব হোসেন প্রামানিক এজেন্সি মালিকদের বলেছেন, সৌদি রাষ্ট্রদূত যেভাবে বলেছেন, সে অনুযায়ী আপনারা আবেদন করুন। এরপরও যদি ভিসা ইস্যু করা না হয়, তবে এ বিষয়ে আমরা রাষ্ট্রদূতকে যুক্ত করব।

কী পরিমাণ ভিসা আবেদন প্রত্যাখ্যাত হয়েছে, হাবকে সে তথ্য দেওয়ার অনুরোধ জানিয়েছেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের সচিব।

বিমান বাংলাদেশ এয়ারলাইন্স এবং সৌদিয়া এয়ারলাইন্সের বাইরে অন্যান্য বিমান সংস্থার সঙ্গেও টাকা ফেরত দেওয়ার বিষয়ে আলোচনা করা হবে বলে জানিয়েছেন ধর্ম সচিব।

রমজান শুরুর পরপরই ওমরাহ ভিসা ইস্যুর সংখ্যা একেবারে কমিয়ে দিয়েছে সৌদি সরকার। এতে বিপাকে পড়েছেন বিপুল সংখ্যক ওমরাহ যাত্রী ও এজেন্সি।

এ বছর ওমরাহ যাত্রীদের অনেকেই বিমানের টিকিট বুকিং দিয়ে রেখেছেন। কিন্তু, ভিসা না পাওয়ায় কিংবা যথাসময়ে ভিসা না পাওয়ায় ওমরাহ পালন করতে যেতে পারেননি বা যেতে পারছেন না। অনেকে টিকিট বাতিল করতে বাধ্য হয়েছেন। এতে ওমরাহ যাত্রী ও হজ এজেন্সিগুলো আর্থিক ক্ষতির শিকার হয়েছে।

ঢাকা/নঈমুদ্দীন/রফিক

.

উৎস: Risingbd

কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ওমর হ য ত র দ র র ওমর হ য ত র ওমর হ ভ স র জন য রমজ ন

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ