উত্তরা ব্যাংকের ৩৫% লভ্যাংশ ঘোষণা, বেড়েছে শেয়ারের দাম
Published: 19th, March 2025 GMT
পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত উত্তরা ব্যাংক পিএলসি ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে সমাপ্ত হিসাববছরের জন্য লভ্যাংশ ঘোষণা করেছে। ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ওয়েবসাইটে দেওয়া ঘোষণা অনুযায়ী, গত অর্থবছরের জন্য শেয়ারহোল্ডারদের ৩৫ শতাংশ লভ্যাংশ দেওয়া হবে।
৩৫ শতাংশ লভ্যাংশের মধ্যে ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ লভ্যাংশ এবং বাকি ১৭ দশমিক ৫০ শতাংশ বোনাস লভ্যাংশ দেওয়া হবে। মঙ্গলবার অনুষ্ঠিত ব্যাংকটির পরিচালনা পর্ষদের বৈঠকে সর্বশেষ হিসাববছরের নিরীক্ষিত আর্থিক প্রতিবেদন পর্যালোচনা ও অনুমোদনের পর লভ্যাংশ–সংক্রান্ত এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
ডিএসইর ওয়েবসাইটে দেওয়া তথ্যানুসারে, সর্বশেষ বছরে সহযোগী প্রতিষ্ঠানের আয়সহ সমন্বিতভাবে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি আয় (ইপিএস) হয়েছে ৫ টাকা ৭৭ পয়সা, আগের বছর যা ছিল ৩ টাকা ৮৪ পয়সা। এ ছাড়া ৩১ ডিসেম্বর ২০২৪ তারিখে ব্যাংকটির শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদমূল্য (এনএভিপিএস) ছিল ৩২ টাকা ৭ পয়সা।
স্টক লভ্যাংশ দেওয়ার কারণ হিসেবে বলা হয়েছে, ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধি নিশ্চিত করতে ব্যাংকের পুঁজিভিত্তি শক্তিশালী করতে এই লভ্যাংশ দেওয়া হবে। যে মুনাফা পাওয়া যায়নি, তার ভিত্তিতে এই লভ্যাংশ দেওয়া হয়নি।
আগামী ১২ মে ডিজিটাল প্ল্যাটফর্মে ব্যাংকটির বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) অনুষ্ঠিত হবে। এর জন্য রেকর্ড তারিখ নির্ধারণ করা হয়েছে ২০ এপ্রিল।
লভ্যাংশ ঘোষণার পর আজ উত্তরা ব্যাংক লেনদেনের শীর্ষ তালিকায় দ্বিতীয় স্থানে উঠে এসেছে। সকালে শেয়ারের দাম বেড়েছে ৫ দশমিক ৫৮ শতাংশ। শেয়ারের দাম বেড়ে হয়েছে ২৬ টাকা ৫০ পয়সা।
গত এক বছরে কোম্পানিটির শেয়ারের সর্বোচ্চ দাম ছিল ২৭ টাকা ২০ পয়সা এবং সর্বনিম্ন দাম ছিল ১৮ টাকা ৮০ পয়সা।
২০২৩ সালের জন্য বিনিয়োগকারীদের ৩০ শতাংশ লভ্যাংশ দিয়েছে উত্তরা ব্যাংক। এর মধ্যে সাড়ে ১৭ শতাংশ নগদ ও সাড়ে ১২ শতাংশ স্টক বা বোনাস লভ্যাংশ। এ ছাড়া ২০২২ সালে ১৪ শতাংশ নগদ ও ১৪ শতাংশ বোনাস; ২০২১ সালে ১৪ শতাংশ নগদ ও ১৪ শতাংশ বোনাস; ২০২০ সালে ১২ দশমিক ৫০ শতাংশ নগদ ও সমপরিমাণ বোনাস লভ্যাংশ দিয়েছে উত্তরা ব্যাংক লিমিটেড।
.উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: শ নগদ ও র জন য দশম ক
এছাড়াও পড়ুন:
১০০ কোটি টাকার পাচারের অভিযোগ, জাহাঙ্গীরের নামে মামলা
ক্ষমতাচ্যুত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দপ্তরের সাবেক পিয়ন জাহাঙ্গীর আলম ওরফে পানি জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে ১০০ কোটি টাকা পাচারের অভিযোগে মামলা করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) নোয়াখালীর চাটখিল থানায় মানিলন্ডারিং প্রতিরোধ আইনে এই মামলা করেছে সিআইডির ফাইন্যান্সিয়াল ক্রাইম ইউনিট।
আরো পড়ুন:
নাফিসা কামালসহ ৮ ব্যক্তি-প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে অর্থপাচারের মামলা
সাজিদ হত্যার তদন্তে সিআইডিকে জিজ্ঞাসাবাদের অনুমোদন
সিআইডির বিশেষ পুলিশ সুপার (মিডিয়া) জসীম উদ্দিন খান জানান, প্রাথমিক অনুসন্ধানে উল্লেখযোগ্য প্রমাণ পাওয়ায় নোয়াখালীর চাটখিল থানায় জাহাঙ্গীরের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে।
তিনি আরো জানান, নোয়াখালীর চাটখিল উপজেলার এক নিম্ন-মধ্যবিত্ত পরিবারের সন্তান জাহাঙ্গীর আলম জাতীয় সংসদ সচিবালয়ে দৈনিক মজুরিভিত্তিক কর্মচারী হিসেবে কাজ করতেন। পরে ২০০৯ সালে আওয়ামী লীগ সরকার গঠনের পর তিনি অধিকতর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকায় প্রধানমন্ত্রীর দপ্তরে স্বল্প সময়ের জন্য ‘ব্যক্তিগত সহকারী’ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। এই দায়িত্বই তাকে আর্থিকভাবে লাভবান করেছে মর্মে প্রাথমিক অনুসন্ধানে উঠে এসেছে।
জসীম উদ্দিন খান জানান, ২০১০ সালে জাহাঙ্গীর ‘স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড’ নামে একটি কোম্পানি গঠন করে বিকাশের ডিস্ট্রিবিউশন ব্যবসা নেন। কিন্তু এর আড়ালে তিনি অসংখ্য সন্দেহজনক ব্যাংকিং কার্যক্রম করেন। কোম্পানির নামে একাধিক ব্যাংক অ্যাকাউন্টে অস্বাভাবিক অঙ্কের টাকা জমা হয়, যার বৈধ উৎস পাওয়া যায়নি ও ব্যবসার সঙ্গে অসামঞ্জস্যপূর্ণ।
সিআইডির এই কর্মকর্তা জানান, প্রতিষ্ঠানটির অ্যাকাউন্টগুলোতে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে বিভিন্ন ব্যাংকে মোট ৫৬৫ কোটিরও বেশি টাকা লেনদেন হয়েছে। এর মধ্যে উল্লেখযোগ্য অংশ নগদে জমা হয়েছে দেশের নানা স্থান থেকে। এসব অর্থের উৎস অজানা এবং হুন্ডি ও মানিলন্ডারিং কার্যক্রমের সঙ্গে জড়িত বলে প্রাথমিক প্রমাণ মেলে।
বিশেষ পুলিশ সুপার জসীম উদ্দীন জানান, জাহাঙ্গীর আলম তার স্ত্রী কামরুন নাহার ও ভাই মনির হোসেনের সহায়তায় দীর্ঘদিন ধরে অবৈধ অর্থ লেনদেন করতেন। জাহাঙ্গীর আলম ও তার স্ত্রী ২০২৪ সালের জুন মাসে যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমান এবং বর্তমানে ভার্জিনিয়ায় অবস্থান করছেন। বিদেশে তাদের বিনিয়োগ বা সম্পদ ক্রয়ের কোনো সরকারি অনুমোদন না পাওয়া গেলেও তারা যুক্তরাষ্ট্রে পাড়ি জমিয়েছেন বলে প্রাথমিক অনুসন্ধানে প্রমাণ মেলে।
অনুসন্ধানে প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হয়েছে, জাহাঙ্গীর আলম, তার স্ত্রী কামরুন নাহার, ভাই মনির হোসেন এবং প্রতিষ্ঠান স্কাই রি অ্যারেঞ্জ লিমিটেড যৌথভাবে ২০১০ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে প্রায় ১০০ কোটি টাকা বিদেশে পাচার করেছেন। অপরাধের পূর্ণাঙ্গ তথ্য উদঘাটন, অপরাপর সদস্যদের শনাক্ত ও গ্রেপ্তার করার স্বার্থে সিআইডির তদন্ত ও অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঢাকা/মাকসুদ/সাইফ