নবম হিজরির কথা৷ মক্কা বিজয় হয়নি তখনো। মক্কায় ইসলামের অনুসারীও তুলনামূলক কম। রাসুলুল্লাহ (সা.) নাজদে অশ্বারোহী বাহিনী পাঠালেন। তারা বনু হানিফা গোত্রের একজনকে বন্দী করে নিয়ে এল৷ নাম তার সুমামা ইবনে উসাল। প্রতিনিধি দলের মর্যাদায় রাখা হলো না তাকে৷ মসজিদের খুঁটির সঙ্গে বাঁধা হলো। রাসুলুল্লাহ (সা.) বেরিয়ে এলেন। তাকে দেখে বললেন, ‘তোমার মনের কথা কী?’ সে উত্তর দিল, ‘আমার মনোভাব উত্তম। আপনি আমাকে হত্যা করলে একজন দামি রক্তধারী (গোত্রপতি)-কে হত্যা করবে; অনুগ্রহ দেখালে একজন কৃতজ্ঞের প্রতি অনুগ্রহ হবে; আর সম্পদ কাম্য হলে আপনার যা চাহিদা করতে পারেন।’
তার জবাব শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.
মুক্ত হলো সুমামা। দেরি না করে সোজা চলে গেল মসজিদের কাছে। পাশেই খেজুর বাগান। সেখানেই গোসল সেরে নিল। এরপর মসজিদে ঢুকল। সজোরে সবার সামনে বলে উঠল, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, এক আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল।’ এরপর বলল, ‘হে মুহাম্মদ! আল্লাহর কসম, এ পৃথিবীর বুকে এর আগে আপনার চেহারার চেয়ে অধিক অপছন্দনীয় আর কোনো চেহারা আমার কাছে ছিল না; এখন আপনার চেহারা আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয় চেহারা। আল্লাহর কসম, এর আগে আমার কাছে আপনার ধর্মের চেয়ে অধিক অপছন্দনীয় আর কোনো ধর্ম ছিল না; এখন আপনার ধর্ম আমার সর্বাধিক প্রিয় ধর্মে পরিণত হয়েছে। আল্লাহর কসম! আপনার শহরের চেয়ে অধিক অপ্রিয় কোনো শহর আমার কাছে ছিল না; এখন আপনার শহর আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয় শহর। আপনার অশ্বারোহী বাহিনী আমাকে বন্দী করে এনেছে; অথচ ওমরাহ পালনের নিয়তে আমি বেরিয়েছিলাম। এখন আপনার মত কী?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে সুসংবাদ দিলেন। ওমরাহ পালনে যেতে বললেন৷
সুমামা (রা.) মক্কায় পৌঁছাল। লোকেরা তাকে ঘিরে ধরল। তিরস্কার করতে লাগল, ‘তুমি নাকি ধর্মান্তরিত হয়ে এসেছ?’ সে বলল, ‘না, আমি তো মুহাম্মদ (সা.)-এর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছি।’ সে তাদের হুমকি দিল, ‘আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুমতি ছাড়া ইয়ামামা থেকে রসদ হিসেবে তোমাদের জন্য গমের একটি দানাও আসবে না।’
সূত্র: আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া: ৫/৯৯-১০০
আরও পড়ুনসাহসী সাহাবি হজরত যুবাইর (রা.)০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: এখন আপন র আম র ক ছ আল ল হ বলল ন
এছাড়াও পড়ুন:
সংগীতশিল্পী দীপ মারা গেছেন
রাস্টফ ব্যান্ডের ভোকাল আহরার মাসুদ মারা গেছেন। সেমাবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দিবাগত রাতে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন)। ভক্তদের কাছে দীপ নামে পরিচিত ছিলেন আহরার মাসুদ।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) সকাল ৮টায় ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে এ তথ্য জানানো হয়। তবে এ শিল্পীর মৃত্যুর কারণ সম্পর্কে কিছু জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
৫০ শয্যার থানচি হাসপাতাল চলছে একজন চিকিৎসকে
সিজেএফবি পারফরম্যান্স অ্যাওয়ার্ড ঘোষণা
রাস্টফ ব্যান্ডের ফেসবুক পেজে দীপের মৃত্যুর খবর জানিয়ে লেখা হয়, “এমন এক বেদনাদায়ক মুহূর্তে সঠিক শব্দ খুঁজে পাওয়া বা কোনো শব্দ খুঁজে পাওয়া—প্রায় অসম্ভব। প্রিয় ভোকালিস্ট, বন্ধু ও সহযাত্রী আহারার ‘দীপ’ মাসুদের মৃত্যুসংবাদ আমাদের স্তম্ভিত করেছে। আমরা শোকে ভেঙে পড়েছি, এখনো অবিশ্বাসের ভেতর ডুবে আছি। গত রাতেই তিনি আমাদের ছেড়ে চিরবিদায় নিয়েছেন।”
দীপের শূন্যতা ব্যাখ্যা করে লেখা হয়, “তার পরিবার, বন্ধু ও প্রিয়জনদের প্রতি আমাদের অন্তরের সমবেদনা ও প্রার্থনা। আপনাদের মতো আমরাও এই অপূরণীয় ক্ষতি বোঝার চেষ্টা করছি, চেষ্টা করছি দীপের অসাধারণ প্রতিভাকে সম্মান জানাতে এবং তার চেয়েও বড় কথা—মানুষ হিসেবে তিনি আমাদের কাছে যে অমূল্য ছিলেন, তাকে স্মরণ করতে। এই কঠিন সময়ে সবার কাছে অনুরোধ, দয়া করে পরিবার ও কাছের মানুষদের ব্যক্তিগত পরিসরকে সম্মান করুন এবং তার আত্মার শান্তির জন্য প্রার্থনা করুন। শান্তিতে ঘুমাও, দীপ। তোমার শূন্যতা চিরকাল বেদনাময় হয়ে থাকবে।”
তরুণদের কাছে জনপ্রিয় আরেকটি ব্যান্ড পাওয়ারসার্চও দীপের মৃত্যুতে শোক প্রকাশ করেছে। ব্যান্ডের অফিশিয়াল ফেসবুক পেজে লেখা হয়েছে, “স্মরণ করছি আহরার মাসুদ দীপকে। কিছুক্ষণ আগে আমরা হারিয়েছি আমাদের প্রিয় ভাই, ঘনিষ্ঠ বন্ধু এবং এক সত্যিকারের শিল্পীকে। এক্লিপস, কার্ল, ক্যালিপসো ও সবশেষ রাস্টফ ব্যান্ডের অবিস্মরণীয় কণ্ঠ আহরার মাসুদ দীপ আমাদের মাঝে আর নেই। ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন।”
পাওয়ারসার্চ আরো লেখেন, “আহরার মাসুদ দীপ শুধু একজন ভোকালিস্টই ছিলেন না, তিনি ছিলেন শক্তি, সৃজনশীলতা আর আবেগের প্রতীক, যিনি তার চারপাশের সবাইকে অনুপ্রাণিত করেছেন; একই সাথে তার অত্যন্ত নমনীয় ব্যবহার, যা সবাইকে তাঁর শুভাকাঙ্ক্ষীই করে ফেলত! শান্তিতে থাকো ভাই, তুমি সব সময় আমাদের গল্পের অংশ হয়ে থাকবে।”
ঢাকা/শান্ত