Prothomalo:
2025-08-01@21:59:33 GMT

মুগ্ধতায় শুদ্ধতা

Published: 19th, March 2025 GMT

নবম হিজরির কথা৷ মক্কা বিজয় হয়নি তখনো। মক্কায় ইসলামের অনুসারীও তুলনামূলক কম। রাসুলুল্লাহ (সা.) নাজদে অশ্বারোহী বাহিনী পাঠালেন। তারা বনু হানিফা গোত্রের একজনকে বন্দী করে নিয়ে এল৷ নাম তার সুমামা ইবনে উসাল। প্রতিনিধি দলের মর্যাদায় রাখা হলো না তাকে৷ মসজিদের খুঁটির সঙ্গে বাঁধা হলো। রাসুলুল্লাহ (সা.) বেরিয়ে এলেন। তাকে দেখে বললেন, ‘তোমার মনের কথা কী?’ সে উত্তর দিল, ‘আমার মনোভাব উত্তম। আপনি আমাকে হত্যা করলে একজন দামি রক্তধারী (গোত্রপতি)-কে হত্যা করবে; অনুগ্রহ দেখালে একজন কৃতজ্ঞের প্রতি অনুগ্রহ হবে; আর সম্পদ কাম্য হলে আপনার যা চাহিদা করতে পারেন।’

তার জবাব শুনে রাসুলুল্লাহ (সা.

) চুপ রইলেন। পরের দিন পর্যন্ত ব্যাপারটি স্থগিত রাখলেন। পরদিন আবার একই কথা বললেন রাসুলুল্লাহ (সা.)। সে উত্তর দিল, ‘আমার কথা সেই একই, যা আপনাকে বলেছি। আপনি অনুগ্রহ করলে, তা হবে একজন কৃতজ্ঞের প্রতি অনুগ্রহ।’ তাকে একই অবস্থায় রেখে দেওয়া হলো৷ তৃতীয় দিন রাসুলুল্লাহ (সা.) আবার বেরোলেন। তার কাছে এসে বললেন, ‘সুমামা! তোমার মনের ভাব কী?’ সে বলল, ‘কথা তা-ই, যা আপনাকে আগেই বলেছি।’ রাসুলুল্লাহ (সা.) সাহাবিদের বললেন, ‘তোমরা একে মুক্ত করে দাও।’

আরও পড়ুনসাহসী সাহাবি হজরত যুবাইর (রা.)০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

মুক্ত হলো সুমামা। দেরি না করে সোজা চলে গেল মসজিদের কাছে। পাশেই খেজুর বাগান। সেখানেই গোসল সেরে নিল। এরপর মসজিদে ঢুকল। সজোরে সবার সামনে বলে উঠল, ‘আমি সাক্ষ্য দিচ্ছি, এক আল্লাহ ছাড়া আর কোনো উপাস্য নেই। মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর রাসুল।’ এরপর বলল, ‘হে মুহাম্মদ! আল্লাহর কসম, এ পৃথিবীর বুকে এর আগে আপনার চেহারার চেয়ে অধিক অপছন্দনীয় আর কোনো চেহারা আমার কাছে ছিল না; এখন আপনার চেহারা আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয় চেহারা। আল্লাহর কসম, এর আগে আমার কাছে আপনার ধর্মের চেয়ে অধিক অপছন্দনীয় আর কোনো ধর্ম ছিল না; এখন আপনার ধর্ম আমার সর্বাধিক প্রিয় ধর্মে পরিণত হয়েছে। আল্লাহর কসম! আপনার শহরের চেয়ে অধিক অপ্রিয় কোনো শহর আমার কাছে ছিল না; এখন আপনার শহর আমার কাছে সর্বাধিক প্রিয় শহর। আপনার অশ্বারোহী বাহিনী আমাকে বন্দী করে এনেছে; অথচ ওমরাহ পালনের নিয়তে আমি বেরিয়েছিলাম। এখন আপনার মত কী?’ রাসুলুল্লাহ (সা.) তাকে সুসংবাদ দিলেন। ওমরাহ পালনে যেতে বললেন৷

সুমামা (রা.) মক্কায় পৌঁছাল। লোকেরা তাকে ঘিরে ধরল। তিরস্কার করতে লাগল, ‘তুমি নাকি ধর্মান্তরিত হয়ে এসেছ?’ সে বলল, ‘না, আমি তো মুহাম্মদ (সা.)-এর হাতে ইসলাম গ্রহণ করেছি।’ সে তাদের হুমকি দিল, ‘আল্লাহর কসম! রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর অনুমতি ছাড়া ইয়ামামা থেকে রসদ হিসেবে তোমাদের জন্য গমের একটি দানাও আসবে না।’

 সূত্র: আল-বিদায়া ওয়ান নিহায়া: ৫/৯৯-১০০

আরও পড়ুনসাহসী সাহাবি হজরত যুবাইর (রা.)০৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: এখন আপন র আম র ক ছ আল ল হ বলল ন

এছাড়াও পড়ুন:

সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন

প্রথিতযশা অধ্যাপক ও পরিসংখ্যানবিদ কাজী মোতাহার হোসেন ছিলেন একজন সব্যসাচী মানুষ। তিনি নিজের কাজের মাধ্যমে বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। তাঁর ঐতিহ্য শিক্ষার্থীদের ধারণ করতে হবে।

জ্ঞানতাপস কাজী মোতাহার হোসেনের ১২৮তম জন্মবার্ষিকী উপলক্ষে আজ বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র-শিক্ষক কেন্দ্র (টিএসসি) মিলনায়তনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে বক্তারা এ কথাগুলো বলেন।

অনুষ্ঠানে স্মারক বক্তৃতা, বৃত্তি, পদক, পুরস্কার ও সনদ দেওয়া হয়। অনুষ্ঠানের যৌথ আয়োজক কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগ এবং পরিসংখ্যান গবেষণা ও শিক্ষণ ইনস্টিটিউট।

অনুষ্ঠানে ‘যুগলের বন্ধন: কাজী নজরুল ইসলাম-কাজী মোতাহার হোসেন’ শীর্ষক স্মারক বক্তৃতা দেন অধ্যাপক ভীষ্মদেব চৌধুরী। তিনি দুই বন্ধুর সম্পর্কের রসায়নের নানা দিক তুলে ধরেন।

প্রধান অতিথি বক্তব্যে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য নিয়াজ আহমেদ খান বলেন, এই অনুষ্ঠানের দুটো প্রাপ্তি আছে। প্রথমত, মানুষের অবদান ও মেধাকে স্বীকার করা হচ্ছে। দ্বিতীয়ত, এই উপমহাদেশের একজন প্রথিতযশা সব্যসাচী মানুষের ঋণ স্বীকার করা হচ্ছে।

কাজী মোতাহার হোসেন যেকোনো বিবেচনায় একজন দার্শনিক বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মধ্যে মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন। প্রথম সারির পরিসংখ্যানবিদ, বিভাগের প্রতিষ্ঠাতা ছাড়াও তিনি অনেকগুলো সামাজিক আন্দোলনে নেতৃত্ব দিয়েছেন, প্রভাব বিস্তার করেছেন। একজন মানুষের ছোট জীবদ্দশায় এত গুণ সন্নিবেশিত করা কঠিন। কিন্তু তিনি তা করে দেখিয়েছেন।

সবাইকে নিয়ে চলা, প্রতিষ্ঠান তৈরি করা, নিজের জগতের বাইরে নানা কিছুতে হাত বাড়িয়ে দেওয়ার মতো ঐতিহ্য কাজী মোতাহার হোসেন করে গেছেন বলে উল্লেখ করেন নিয়াজ আহমেদ খান। তিনি বলেন, তাঁর সম্মানে যাঁরা আজ স্বীকৃতি পেলেন, তাঁরা এই ঐতিহ্যকে ধারণ করবেন। এটা (বিশ্ববিদ্যালয়) যে সামাজিক প্রতিষ্ঠান, সে বার্তা দেবেন। যেসব শিক্ষার্থী সম্মাননা পাচ্ছেন, তাঁদের ছোট প্রোফাইল তৈরি করে ওয়েবসাইটে তুলে দেওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল মাজেদ বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন একজন সব্যসাচী মানুষ ছিলেন। বিজ্ঞানের এমন কোনো দিক নেই, যেখানে তাঁর পদচারণা ছিল না। তিনি দাবা খুব পছন্দ করতেন। দাবা খেলার কথা শুনলে তিনি ছুটে যেতেন। কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে তাঁর শোনা নানা গল্প তিনি স্মৃতিচারণা করেন।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক জাফর আহমেদ খান বলেন, কাজী মোতাহার হোসেন পরিসংখ্যান চর্চার পথিকৃৎ ছিলেন। বিজ্ঞান, দাবাচর্চারও পথিকৃৎ ছিলেন। এমন কোনো পুরস্কার নেই যে, তিনি পাননি। তাঁর দেখানো পথে যেন শিক্ষার্থীরা নিজেদের আলোকিত করতে পারেন।

অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন কাজী মোতাহার হোসেন ফাউন্ডেশনের সাধারণ সম্পাদক কাজী রওনাক হোসেন। এই আয়োজনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিসংখ্যান বিভাগের বিভিন্ন বর্ষের সেরা শিক্ষার্থীদের বই, নগদ অর্থ ও সনদ তুলে দেওয়া হয়। এ ছাড়া কাজী মোতাহার হোসেনকে নিয়ে আয়োজিত রচনা প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের পুরস্কার তুলে দেওয়া হয়।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • গঙ্গাচড়ায় হিন্দুবাড়িতে হামলা ঠেকাতে ‘পর্যাপ্ত’ ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি
  • নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ-আ.লীগ নেতা–কর্মীদের ‘গোপন বৈঠক’ ঘিরে গ্রেপ্তার ২২, সেনা হেফাজতে মেজর
  • দেশের চারজনের একজন বহুমাত্রিক দারিদ্র্যের শিকার
  • ফ্যাসিবাদ, উগ্রবাদ যাতে মাথাচাড়া দিতে না পারে
  • ডেঙ্গুতে দুজনের, করোনাভাইরাসে একজনের মৃত্যু
  • জাওয়াইদেহ বেদুইনদের মৌখিক সাহিত্য
  • রাবিতে আ.লীগ ট্যাগ দিয়ে চিকিৎসা কর্মীকে বিবস্ত্র করে মারধর
  • ইরানের সঙ্গে সংঘাত: ইসরায়েলকে ক্ষেপণাস্ত্র প্রতিরক্ষা দিতে সৌদি সরকারকে অনুরোধ করেছিল যুক্তরাষ্ট্র
  • সিরিজের শেষ ম্যাচে নেই স্টোকস, দায়িত্বে পোপ
  • সব্যসাচী কাজী মোতাহার হোসেন বিজ্ঞান ও শিল্পের মেলবন্ধন ঘটিয়েছেন