আলঝেইমার রোগের উপশমে কার্যকর নতুন এক উপাদানের খোঁজ পেয়েছেন যুক্তরাষ্ট্রের ক্যালিফোর্নিয়ার স্ক্রিপস রিসার্চ ইনস্টিটিউটের একদল বিজ্ঞানী। তাঁদের দাবি, রোজমেরি ও সেজ নামের মসলায় কার্নোসিক অ্যাসিড পাওয়া যায়, যা অ্যান্টি–অক্সিডেন্ট হিসেবে অ্যান্টি–ইনফ্ল্যামেটরি বৈশিষ্ট্যের। আর তাই এসব মসলার মধ্যে থাকা একটি যৌগ আলঝেইমার রোগের উপশমে কাজ করতে পারে।

ইঁদুরের মস্তিষ্কে রোজমেরি ও সেজ মসলায় থাকা যৌগ ব্যবহার করে সাফল্য পেয়েছেন বিজ্ঞানীরা। গবেষণায় দেখা গেছে, ইঁদুরের মস্তিষ্কে যৌগটি ব্যবহারের পরে প্রদাহ কমে গেছে। আর তাই এখন আলঝেইমার রোগের চিকিৎসায় মানুষের শরীরে যৌগটি ব্যবহার করতে চান বিজ্ঞানীরা। এ জন্য কার্নোসিক অ্যাসিড ব্যবহার করে একটি ওষুধও তৈরি করেছেন তাঁরা। ওষুধটি কেবল প্রদাহ কমায় না; বরং মস্তিষ্কের স্নায়ু কোষের সংযোগ পুনরুদ্ধার করতে পারে। এতে শেখার আগ্রহ ও স্মৃতিশক্তি বাড়ে।

আরও পড়ুনশহরের আলোর কারণে বাড়তে পারে আলঝেইমারের ঝুঁকি১০ সেপ্টেম্বর ২০২৪

বিজ্ঞানীদের তথ্যমতে, কার্নোসিক অ্যাসিড ইতিমধ্যেই মার্কিন খাদ্য ও ওষুধ প্রশাসন নিরাপদ বলে বিবেচনা করেছে। এ জন্য নতুন ওষুধ ক্লিনিক্যাল ট্রায়ালের জন্য দ্রুত ব্যবহার করতে আগ্রহী বিজ্ঞানীরা। আলঝেইমার রোগ ডিমেনশিয়ার সাধারণ একটি রূপ। এই রোগের কারণে এমন একটি অবস্থা তৈরি হয়, যা সাধারণত বয়স্ক ব্যক্তিদের মন ও স্মৃতিতে প্রভাবের জন্য পরিচিত। নতুন ওষুধটি জীবন বাঁচানোর পাশাপাশি বড় কোনো পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া সৃষ্টি করবে না।

ইঁদুরের ওপর পরিচালিত পরীক্ষায় নতুন ওষুধটি নিউরোনাল সিন্যাপ্সের সংখ্যা বৃদ্ধি করেছে। বিজ্ঞানী স্টুয়ার্ট লিপটন বলেন, ‘আমরা স্মৃতিশক্তি নিয়ে একাধিক পরীক্ষা করেছি। এই ওষুধের মাধ্যমে স্মৃতিশক্তি উন্নত হতে দেখা গেছে।’

সূত্র: ডেইলি মেইল

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব যবহ র কর

এছাড়াও পড়ুন:

নিষেধাজ্ঞা শেষে ইলিশ ধরা শুরু, চাঁদপুরের মাছঘাটে কর্মব্যস্ততা

চাঁদপুরের পদ্মা-মেঘনার ৭০ কিলোমিটার নদীর অভয়াশ্রমে দুই মাস পর ইলিশসহ অন্যান্য মাছ ধরা শুরু হয়েছে। সরকারি পর্যায়ের আদেশে জাটকা রক্ষা ও অন্যান্য মাছ বৃদ্ধিতে গত ১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত ৬০ দিন শিকার বন্ধের পর বুধবার মধ্যরাত থেকেই জেলেরা নদীতে শিকারে নেমেছে। কর্মব্যস্ততা ফিরেছে চাঁদপুরের মাছঘাটে। তবে প্রথম দিনে আশানুরূপ ইলিশ না পাওয়ার কথা জানিয়েছেন জেলেরা।

মাছ আহরণ কম হওয়ায় প্রথম দিনে আড়তে তেমন ব্যস্ততা চোখে পড়েনি। আজ বৃহস্পতিবার দুপুর পর্যন্ত ১০ মণ ইলিশও আসেনি মাছের বড় ঘাট বড় স্টেশনে। তাছাড়া বরিশাল, বরগুনা, ভোলা, লক্ষ্মীপুর, সন্দ্বীপসহ দক্ষিণাঞ্চলের ইলিশ আজ দুপুর পর্যন্ত পৌঁছেনি চাঁদপুর মাছ ঘাটে। নদী তীরে দক্ষিণাঞ্চল থেকে ইলিশের কার্গো ও নৌকাও আসেনি। ইলিশের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম অনেক বেশি বলে জানিয়েছেন আড়তদাররা।

বৃহস্পতিবার সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ইলিশের পাইকারি বাজার চাঁদপুর বড়স্টেশন মাছঘাট ঘুরে দেখা গেছে, দীর্ঘদিন পর বেচাকেনা কিছুটা শুরু হওয়ায় কর্মচাঞ্চল্য ফিরেছে ব্যবসায়ী ও শ্রমিকদের মাঝে।

পুরান বাজারের হরিসভা অঞ্চলের জেলে বাবুল, সেলিম, মনির হোসেন বলেন, ভোরে মাছ ধরতে নেমেছি। নদীতে তেমন মাছ নাই। ইলিশ না পেলেও পোয়া, পাঙাশ, চিংড়িসহ বিভিন্ন দেশীয় মাছ পাওয়া যাচ্ছে। মাছ বিক্রির জন্য বড়স্টেশন মাছঘাটে এসেছি। তবে এই মাছে তেলের টাকাও উঠছে না।

ব্যবসায়ীরা জানান, আজকের আড়তে এক কেজি ওজনের ইলিশ বিক্রি হচ্ছে তিন হাজারে। এক কেজির কম ওজনের ২ হাজার ৫০০ টাকায়। সরবরাহ না বাড়লে দাম কমার সম্ভাবনা নেই বলে জানান তারা।

এদিকে শহরের সবচেয়ে বড় বাজার পালবাজার ঘুরে দেখা গেছে, সেখানের খুচরা ব্যবসায়ীরা আড়ত থেকে ইলিশই আনেননি। ‘কারণ’ হিসাবে কিরন নামে একজন ব্যবসায়ী বললেন, ‘তিন হাজার টাকার কেজিতে ইলিশ কে কিনবো বলেন? কয়জনে কিনবো? আমরা বেঁচমো কতো?’ 
 
চাঁদপুর মৎস্য বণিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক শবে বরাত সরকার বলেন, এখন নদীতে পানি কম। স্রোত ও বৃষ্টিও কম। ফলে এ সময়ে ইলিশ কম পাওয়া যায়।

চাঁদপুরের ইলিশ ক্রেতা মোহন মাছঘাটে এসেছেন ইলিশ কিনতে। দাম শুনেই ফিরে গেলেন। তিনি সমকালকে বললেন, ‘আমাদের চাঁদপুরের মানুষের ইলিশ খাওয়া বড় কঠিন হয়ে পড়ছে। আজকেও যেমন আবার ভরা মৌসুমেও দেখবো দাম আর কমবে না!’

সম্পর্কিত নিবন্ধ