বিএসপিএ কক্সবাজার শাখার ইফতার অনুষ্ঠিত
Published: 19th, March 2025 GMT
বাংলাদেশের ক্রীড়া সাংবাদিকদের অন্যতম সংগঠন বাংলাদেশ স্পোর্টস প্রেস অ্যাসোসিয়েশন (বিএসপিএ) কক্সবাজার জেলা শাখার উদ্যোগে ইফতার মাহফিল অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল মঙ্গলবার (১৮ মার্চ, ২০২৫) বিকেলে কক্সবাজার শহরের একটি অভিজাত রেস্টুরেন্টের হলরুমে আয়োজিত এ ইফতার মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএসপিএ কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি ক্রীড়া সাংবাদিক সুদীপ্ত আহমেদ আনন্দ।
কক্সবাজার বিএসপিএ আহ্বায়ক এমআর মাহাবুবের সভাপতিত্বে এবং সদস্য সচিব আহসান সুমনের সঞ্চালনায় ইফতার পূর্ববর্তী আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়।
এতে অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন, কক্সবাজার প্রেসক্লাবের সভাপতি মাহবুবুর রহমান, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক সাধারণ সম্পাদক অধ্যক্ষ জসিম উদ্দিন, দৈনিক দিনকালের সিনিয়র রিপোর্টার নুরুল ইসলাম হেলালী, বাংলাদেশ প্রতিদিনের স্টাফ রিপোর্টার হাসানুর রশীদ, এনটিভির স্টাফ রিপোর্টার ইকরাম চৌধুরী টিপু, মোহনা টিভির স্টাফ রিপোর্টার আমানুল হক বাবুল, জেলা ফুটবল দলের সাবেক অধিনায়ক মাসুদ আলম, জেলা ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন প্রমুখ।
কক্সবাজার বিএসপিএ’র সাবেক সভাপতি মাহবুবুর রহমানের স্বাগত বক্তব্যের মধ্য দিয়ে আলোচনা সভার সূচনা হয়।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে সুদীপ্ত আহমেদ আনন্দ বলেন, ‘‘সারাদেশে বিএসপিএ-এর যেসব শাখা রয়েছে, তার মধ্যে কক্সবাজার শাখা অন্যতম শক্তিশালী ও সংগঠিত। যে কারণে দেশসেরা সংগঠনের পুরস্কারও পেয়েছে কক্সবাজার। এটি বর্তমানে আহ্বায়ক কমিটি হিসেবে কাজ করছে। দ্রুত সময়ের মধ্যে সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে পূর্ণাঙ্গ কমিটি গঠন করা হবে। সংগঠনের সাফল্যের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে আহ্বায়ক কমিটির কর্মকর্তা ও সদস্যদের আন্তরিকভাবে কাজ করতে হবে। ক্রীড়াঙ্গনকে এগিয়ে নিতে সাংবাদিকদের ভূমিকা থাকতে হবে।’’
এসময় কক্সবাজার জেলা ফুটবল রেফারিজ অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সৈয়দ করিম, জেলা ক্রীড়া সংস্থার সাবেক কর্মকর্তা অধ্যাপক জসিম উদ্দিন, দৈনিক সমকালের চট্টগ্রাম অফিসের সিনিয়র সাংবাদিক নাসির উদ্দিন হায়দার, রাইজিংবিডির জেলা প্রতিনিধি তারেকুর রহমানসহ অন্যান্যরা উপস্থিত ছিলেন।
কক্সবাজার/তারেকুর/আমিনুল
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব এসপ এ ইফত র
এছাড়াও পড়ুন:
আজও আছে পরতে পরতে সৌন্দর্য
কারুকার্যখচিত বিশাল ভবন। দেয়ালের পরতে পরতে মনোহর সৌন্দর্য। মনোরম পরিবেশে ভবনের চারপাশে দাঁড়িয়ে সুন্দরী পরীর আবক্ষ মূর্তি। ছবির মতো সাজানো ‘পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি’ এখন কালের সাক্ষী।
মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া থেকে ১২ কিলোমিটার উত্তর-পশ্চিমে টাঙ্গাইলের নাগরপুরের কলমাই নদীতীরে ১৫ একর জমিতে জমিদারবাড়িটি। ঢুকতেই চোখে পড়ে পুরোনো মন্দির। লোকমুখে প্রচলিত, শরতের দিনে দেবী দুর্গার প্রতিমা তৈরিতে এখানে ব্যস্ত থাকতেন ভারতবর্ষের নামকরা কারিগররা। কালের বিবর্তনে স্থানটি এখন নির্জন। নেই আগের গৌরব-আভিজাত্যের ছাপ, এমনকি প্রতিমা তৈরির ব্যস্ততাও।
মন্দির ঘুরে দেখা যায়, এর কোথাও কোথাও ইট খসে পড়েছে। পুরোনো দিনের নকশা হারাচ্ছে তার সৌন্দর্য। মন্দিরের পেছনে বিশাল তিনটি মহল, যা সেকালে তিন তরফ নামে পরিচিত ছিল। মহলগুলোর আলাদা কোনো নাম পাওয়া যায়নি। সবচেয়ে বড় মহলে বর্তমান পাকুটিয়া বিসিআরজি বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরিচালিত হচ্ছে।
দোতলা ভবনের নির্মাণশৈলী মুগ্ধ করবে সবাইকে। যদিও সংস্কারের অভাবে ভবনটিতে ফাটল দেখা দিয়েছে। পাশেই অপূর্ব লতাপাতার কারুকার্যখচিত বিশাল আরেকটি ভবন, যার মাথায় ময়ূরের মূর্তি। এ ছাড়া কিছু নারী মূর্তিরও দেখা মেলে। জমিদার আমলের টিনের চৌচালা ঘরে অস্থায়ীভাবে সরকারি তহশিল অফিস স্থানান্তর হলেও, সেটি এখন স্থায়িত্ব পেয়েছে।
লতাপতায় আচ্ছন্ন ভবনের একাংশ বর্তমানে উপস্বাস্থ্যকেন্দ্র এবং আরেকাংশে একটি বেসরকারি দাতব্য সেবা সংস্থা কার্যক্রম চালাচ্ছে। ভবনটির পিলারের মাথায় এবং দেয়ালেও অসাধারণ নকশা মুগ্ধ করে।
দোতল আরেকটি মহল, যার সামনে বিশাল শান বাঁধানো সিঁড়ি। অন্য সব ভবনের সঙ্গে এটির নকশার যথেষ্ট মিল খুঁজে পাওয়া যায়। ভবনটির বারান্দা ও পুরোনো কাঠের দরজা সৌন্দর্য বাড়িয়ে তুলেছে কয়েক গুণ। ভবনটির মাথায় ময়ূরের সঙ্গে দুই পাশে দুই নারী মূর্তির দেখা মেলে। সিঁড়ি বেয়ে ছাদে গেলে গাছগাছালির সবুজে ঘেরা পুরো জমিদারবাড়ির সৌন্দর্য বিমোহিত করতে বাধ্য। যদিও ভবনের ভিন্ন অংশ খসে পড়ছে, হারাচ্ছে রূপ-লাবণ্য।
জমিদারবাড়ির পেছনে রয়েছে দীঘি ও দুটি পরিত্যক্ত কূপ। এ ছাড়া জমিদারবাড়ির বিশাল মাঠের এক কোণে নাটমন্দির। জানা যায়, নাগরপুরের সঙ্গে কলকাতার একটি বাণিজ্যিক ও সাংস্কৃতিক সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এর পরিপ্রেক্ষিতে পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা থেকে আসেন ধনাঢ্য ব্যক্তি রামকৃষ্ণ সাহা মণ্ডল। তিনিই ঊনবিংশ শতাব্দীর শুরুতে ব্রিটিশদের কাছ থেকে বিপুল অর্থের বিনিময়ে জমি কিনে জমিদারি শুরু করেন।
রামকৃষ্ণ সাহার দুই ছেলে বৃন্দাবন ও রাধাগোবিন্দ। রাধা নিঃসন্তান। তবে বৃন্দাবনের তিন ছেলে– ব্রজেন্দ্র মোহন, উপেন্দ্র মোহন ও যোগেন্দ্র মোহন দীর্ঘকাল রাজত্ব করেন। এভাবে পাকুটিয়া জমিদারবাড়ি তিন ভাইয়ের তরফে বিভক্ত থাকলেও, জমিদাররা সবাই ছিলেন প্রজানন্দিত। বৃন্দাবনের মেজ ছেলে উপেন্দ্রকে কাকা রাধাগোবিন্দ দত্তক নেন। ফলে উপেন্দ্র কাকার জমিদারির পুরো সম্পত্তি লাভ করেন।
দৃষ্টিনন্দন পাকুটিয়া জমিদারবাড়িতে প্রতিনিয়ত পর্যটকের ভিড় বাড়ছে। ইতিহাসের সাক্ষী বাড়িটি সংস্কার না হওয়ায় একদিকে যেমন সৌন্দর্য হারাচ্ছে, অন্যদিকে তরুণ প্রজন্মের কাছে অজানা থেকে যাচ্ছে ইতিহাস। জমিদারবাড়িটি পুরাকীর্তি হিসেবে প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের অধীনে নিয়ে সংস্কার ও সংরক্ষণের দাবি জোরালো হচ্ছে।