প্রশ্ন: আমার বয়স ২৮ বছর। প্রত্যন্ত গ্রামে থাকি। আমি এখন চার মাসের অন্তঃসত্ত্বা। অনাগত সন্তানকে নিয়ে নানা রকম চিন্তা মাথায় ঘোরে। এখন নাকি গর্ভের সন্তানকে পরীক্ষা করে বোঝা যায় তার কোনো ধরনের শারীরিক ও মানসিক জটিলতা বা অটিজম আছে কি না। এ ধরনের টেস্ট করাতে চাইলে কীভাবে করাব? কত মাসে এই টেস্ট করানো সম্ভব? টেস্টে কোনো জটিলতা আছে কি না, তা–ও জানাবেন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক

পরামর্শ: গর্ভের সন্তানের স্বাস্থ্য-ভাবনা খুবই ইতিবাচক একটি বিষয়। যেকোনো ঝুঁকি এড়াতে সচেতনতার কোনো বিকল্প নেই। বর্তমানে চিকিৎসাবিজ্ঞানের কল্যাণে খুব সহজে গর্ভকালীন মাতৃস্বাস্থ্য ও শিশুস্বাস্থ্য সম্পর্কে সুস্পষ্টভাবে জানা যায়। গর্ভধারণের পর তিন থেকে চার মাস সময় খুব গুরুত্বপূর্ণ। এ সময়ে আপনার গর্ভের সন্তানের কোনো ত্রুটি থাকলে কিছু পরীক্ষার সাহায্যে তা জেনে নিতে পারেন। এরপর চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী ব্যবস্থা নিলে উপকার পাবেন।

তবে অতিরিক্ত দুশ্চিন্তা করবেন না। এতে আপনার স্বাস্থ্যের ওপর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে। প্রথমত, আপনি একজন গাইনি ও ফিটোমেটারনাল মেডিসিন–বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের শরণাপন্ন হোন। চিকিৎসকের পরামর্শে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করিয়ে নিলে আপনার অহেতুক ভাবনা কমে যাবে। যদি গর্ভের শিশুর কোনো ত্রুটি কিংবা স্বাস্থ্যঝুঁকি থাকে, তা–ও শনাক্ত হবে। এ ক্ষেত্রে আলট্রাসনোগ্রাফি এবং কিছু রক্ত পরীক্ষা করাতে হবে। যেমন রক্তের গ্রুপ, রক্তে গ্লুকোজের মাত্রা, রক্তশূন্যতা কিংবা রক্তে ইনফেকশন আছে কি না—এগুলো দেখতে হবে। এসব পরীক্ষা খুব সহজে করা যায়। এসব পরীক্ষা করার কারণে কোনো জটিলতাও তৈরি হয় না; বরং গর্ভাবস্থায় নিয়মিত স্বাস্থ্য পরীক্ষা করালে এবং চিকিৎসা গ্রহণ করলে মা ও শিশুর সুস্বাস্থ্য নিশ্চিত করা যায়।

পরামর্শ দিয়েছেন— ডা.

জোবায়দা সুলতানা, গাইনি ও ফিটোমেটারনাল মেডিসিন–বিশেষজ্ঞ, ল্যাবএইড লি. (ডায়াগনস্টিকস), কলাবাগান।

প্রশ্ন পাঠানোর ঠিকানা

স্বাস্থ্য জিজ্ঞাসা

ই-মেইল: [email protected]

ফেসবুক পেজ: fb.com/ProShastho

ডাকযোগে: প্র স্বাস্থ্য, প্রথম আলো, ১৯ কারওয়ান বাজার, ঢাকা-১২১৫

আরও পড়ুনগর্ভকালীন সময়ে দুঃস্বপ্ন দেখা কি ভালো? স্বপ্ন নিয়ে এই তথ্যগুলো জানতেন?১৫ জানুয়ারি ২০২৪

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: পর ক ষ

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ