এমন একটা পরিস্থিতিতে পড়তে হবে, তা হয়তো কল্পনাও করেনি ভারতের ক্ষমতাসীন নরেন্দ্র মোদি সরকার। প্রশ্ন করলেই মিলছে এমন জবাব, যা দেশটির ক্ষমতাসীন কট্টরপন্থি বিজেপি-আরএসএস সরকারের মুখ বন্ধ করতে যথেষ্ট। এর প্রতিকারও বের করতে পারছে না। কারণ, এর পেছনে সংশ্লিষ্টতা রয়েছে মার্কিন ধনকুবের ও প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ঘনিষ্ঠজন ইলন মাস্কের।  সূত্র: দ্য ওয়্যার

কথা হচ্ছিল উন্নতমানের কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর (এআই) চ্যাটবট ‘গ্রোক-৩’ নিয়ে। ইলন মাস্কের সামাজিক মাধ্যম ‘এক্স’ ব্যবহারকারীরা এর মাধ্যমে নানা প্রশ্নের উত্তর জানতে পারছেন। যে কোনো বিষয়ের সত্যতা যাচাই করতে পারছেন। গ্রোকের দাবি, এসব জবাব পুরোপুরি তথ্যনির্ভর। তবে এ নিয়ে বিপাকে পড়েছে কট্টরপন্থি সংগঠনগুলো। এতদিন এসব সংগঠন যা দাবি করছিল, গ্রোক তার উল্টো উত্তর দিচ্ছে। কংগ্রেস নেত্রী সোনিয়া গান্ধী ‘বার ডান্সার’ ছিলেন কিনা– প্রশ্নে বলছে, তিনি বার অ্যাটেন্ডেন্ট হিসেবে কাজ করেছেন; ডান্সার ছিলেন না। ২০২৪ সালের নির্বাচনের আগে মোদির ‘অনুপ্রবেশকারী’ মন্তব্যের জবাবে গ্রোক বলছে, এটা তিনি করেছেন ‘হিন্দু জাতীয়তাবাদ’ জাগাতে।

ব্রিটিশদের কাছে সবচেয়ে বেশিবার কে ক্ষমা চেয়েছেন এবং কে তাদের কাছ থেকে মাসে ৬০ টাকা পেনশন নিতেন– এমন প্রশ্নে গ্রোক বলছে ভারতের হিন্দুত্ববাদী নেতা বিনায়ক দামোদর সাভারকরের কথা। একজন জানতে চান, ভারতের স্বাধীনতা সংগ্রামে আরএসএসের ভূমিকা কী ছিল। উত্তরে বলা হয়, ‘গবেষণালব্ধ তথ্য অনুসারে আরএসএসের ভূমিকা ন্যূনতম অথবা শূন্য ছিল। কারও কারও দাবি– ভূমিকা ছিল, কিন্তু প্রমাণ দেখাচ্ছে তা অতি নগণ্য। কেউ কেউ ব্যক্তিগতভাবে স্বাধীনতা আন্দোলনে যোগ দিয়ে থাকতে পারেন, তবে সংগঠন হিসেবে নয়।

বিজেপির অন্দর মহলে দাবি উঠছে, অবিলম্বে ‘গ্রোক-৩’ নিয়ন্ত্রণ করা হোক। কিন্তু সে দাবি মেনে সরকারের সক্রিয় হওয়াও সহজ নয়। কারণ এটি মার্কিন ধনকুবের ইলন মাস্কের।

.

উৎস: Samakal

এছাড়াও পড়ুন:

ভারতে আরএসএস নিষিদ্ধের দাবি জানালেন কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে

ভারতের কংগ্রেস দলের সভাপতি মল্লিকার্জুন খাড়গে আবারও দাবি করেছেন, রাষ্ট্রীয় স্বয়ংসেবক সংঘকে (আরএসএস) দেশে নিষিদ্ধ করা উচিত। তিনি বলেন, স্বয়ং সরদার বল্লভভাই প্যাটেল সরকারি কর্মচারীদের আরএসএসের কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন।

খাড়গে বলেছেন, বিজেপি সরকার ২০২৪ সালে সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নিয়েছে। তাই ওই নিষেধাজ্ঞা আবার চালু করতে হবে।

আজ শুক্রবার দিল্লিতে এক সংবাদ সম্মেলনে খাড়গে বলেন, ‘আমার ব্যক্তিগত মত হলো আরএসএসকে নিষিদ্ধ করা উচিত। তিনি আরএসএসের আদর্শকে ‘বিষের’ সঙ্গে তুলনা করেন।

খাড়গে বলেন, সরদার প্যাটেল বলেছিলেন, ‘সরকারি চাকরিতে থাকাকালে আরএসএসের জন্য কাজ করা উচিত নয়।’ কংগ্রেস নেতা বলেন, ‘তিনি সরকারি কর্মচারীদের আরএসএস এবং জামাত-ই-ইসলামীর কার্যক্রমে অংশ নেওয়ার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করেছিলেন। মোদি সরকার গত বছরের ৯ জুলাই সেই নিষেধাজ্ঞা তুলে নেয়। আমরা দাবি করছি, এই নিষেধাজ্ঞা আবার চালু করা হোক।’

বল্লভভাই প্যাটেল ভারতের স্বাধীনতা আন্দোলনে ভূমিকা রাখেন। আজ তাঁর জন্মবার্ষিকী। ভারতে এবার বিজেপি সরকার দিনটিকে ‘রাষ্ট্রীয় একতা দিবস’ হিসেবে পালন করছে।

খাড়গে সংবাদ সম্মেলনে বলেন, আরএসএস মহাত্মা গান্ধীর মৃত্যু উদ্‌যাপন করেছিল, এমন কথা সরদার প্যাটেল একটি চিঠিতে লিখেছিলেন। তিনি ১৯৪৮ সালে এই কট্টর হিন্দুবাদী গোষ্ঠীকে নিষিদ্ধ করার পক্ষে যুক্তি দেন।

মল্লিকার্জুন খাড়গে জোর দিয়ে বলেন, সরদার প্যাটেল দেশকে ঐক্যবদ্ধ করেছিলেন। জওহরলাল নেহরু বিশ্বাস করতেন, সরদার প্যাটেলের অবদান ছিল অপরিমেয়। ১৯৪৮ সালের ৪ ফেব্রুয়ারি তিনি আরএসএস সম্পর্কে একটি চিঠিতে লিখেছিলেন, ‘আরএসএস গান্ধীজির মৃত্যু উদ্‌যাপন করেছিল এবং মিষ্টি বিতরণ করেছিল। এরপর সরকারের কাছে আর কোনো বিকল্প ছিল না।’

খাড়গে বলেন, প্যাটেলের কাছে পৌঁছানো প্রতিবেদনে দেখা যায়, আরএসএস ও হিন্দু মহাসভার মতাদর্শের কারণে দেশে যে পরিবেশ তৈরি হয়েছিল, সেটাই গান্ধীর হত্যাকাণ্ডের জন্য দায়ী ছিল।

বিজেপি অবশ্য কংগ্রেসের এই দাবির সমালোচনা করেছে। তারা বলেছে, কংগ্রেস এত দিন ধরে প্যাটেলের অবদানকে ‘উপেক্ষা’ করে এখন আরএসএসকে আক্রমণ করার জন্য তাঁর নাম ব্যবহার করছে।

খাড়গের নিজ রাজ্য কর্ণাটকের কংগ্রেস সরকার সম্প্রতি সরকারি কর্মচারীদের আরএসএসের র‌্যালিতে অংশ নেওয়ার ওপর বিধিনিষেধ আরোপ করেছে। এ নিয়ে বিজেপির সঙ্গে রাজ্য সরকার বিবাদে জড়িয়েছিল।

সম্পর্কিত নিবন্ধ

  • ভারতে আরএসএস নিষিদ্ধের দাবি জানালেন কংগ্রেস সভাপতি খাড়গে