বাবার ওপর প্রতিশোধ নিতে খুন করা হয় শিশুকে
Published: 20th, March 2025 GMT
নারায়ণগঞ্জ সদর উপজেলার ফতুল্লায় এক ব্যক্তির ওপর প্রতিশোধ নিতে তার সাত বছরের ছেলেকে অপহরণ করে হত্যা ও লাশ গুম করে দুই প্রতিবেশী। খুনের পর শিশুটির সন্ধান চেয়ে দুই ঘাতক মাইকিংয়েও অংশ নেয়।
প্রায় আড়াই মাস আগের এ ঘটনায় দুই আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার আসামিরা হলো ফতুল্লার লামাপাড়া দরগাবাড়ি মসজিদ-সংলগ্ন সালাম মিয়ার ভাড়াটে ওবায়েদউল্লাহ বাবুর ছেলে তানজিল (২৪) ও একই বাড়ির ভাড়াটিয়া মৃত ফরজুল ইসলামের ছেলে নুর মোহাম্মদ ওরফে শাহ আলম (২০)।
পুলিশ ও এলাকাবাসী জানায়, গ্রেপ্তার আসামিরা ও নিহত শিশু মুস্তাকিনের পরিবার পাশাপাশি বাসায় বসবাস করত। একটি মোবাইল ফোন নিয়ে তানজিল ও শাহ আলমের সঙ্গে মুস্তাকিনের বাবা হাশিম মিয়ার ঝগড়া হয়। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তানজিল তাঁর সহযোগী শাহ আলমকে নিয়ে মুস্তাকিনকে অপহরণ ও হত্যার পরিকল্পনা করে। পরিকল্পনা অনুযায়ী, প্রথমে তারা ফতুল্লার ডিআইটি মাঠ থেকে ৪৫০ টাকা দিয়ে একটি সুইচ গিয়ার চাকু কেনে। এর পর ৫ জানুয়ারি সন্ধ্যার দিকে প্রথমে চিপস কিনতে শিশুটির হাতে ২০ টাকা দেয় তানজিল। পরে শিশুটির সঙ্গে হেঁটে মূল রাস্তায় মেইন রোডে এসে দুটি চিপস কিনে হাতে দেয়। এর পর অটোরিকশায় করে ফতুল্লা গুদারাঘাট দিয়ে কেরানীগঞ্জের কাওটাইল এলাকায় যায়। সেখানে বাইতুল জান্নাত জামে মসজিদের পেছনে ঝোপের ভেতরে নিয়ে গিয়ে শিশুটির মুখে স্কচটেপ পেঁচিয়ে মাটিতে শুইয়ে দেন শাহ আলম। এ সময় তানজিল তাঁর সঙ্গে থাকা সুইচ গিয়ার চাকু দিয়ে শিশুটিকে একাধিকবার আঘাত করে মৃত্যু নিশ্চিত করে। এরপর তারা ঘটনাস্থলে শিশুটির লাশ ফেলে রেখে লামাপাড়ার বাসায় চলে যায়।
শিশুটিকে না পেয়ে তার পরিবার সন্ধান চেয়ে মাইকিং করেছিল। ঘাতকরাও সে সময় মাইকিংয়ে অংশ নেয়। দু-তিন দিন পর তারা তাদের নিজ গ্রামের বাড়ি ময়মনসিংহ চলে যায়। ঘটনার ১৩ দিন পর ১৮ জানুয়ারি দুপুরে কেরানীগঞ্জ থানা পুলিশ শিশুটির লাশ উদ্ধার করে। কোনো পরিচয় না পাওয়ায় লাশটি অজ্ঞাতনামা হিসেবে দাফন করা হয়। পরে ২০ জানুয়ারি কেরানীগঞ্জ থানায় পুলিশ বাদী হয়ে হত্যা মামলা করে। এর আগে ৬ জানুয়ারি শিশুটির বাবা ফতুল্লা মডেল থানায় সাধারণ ডায়েরি করেন। শিশুটির সন্ধান না পেয়ে তার বাবা গত শুক্রবার ফতুল্লা মডেল থানায় অপহরণ মামলা করেন। সেই মামলার তদন্তে নেমে পুলিশ তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় হত্যাকাণ্ডের ৭২ দিন পর গত মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে ময়মনসিংহ নান্দাইল থেকে প্রথমে শাহ আলমকে, পরে দুপুর ১২টার দিকে একই জেলার ফুলবাড়িয়া থানার কাচিজোড়া থেকে তানজিলকে গ্রেপ্তার করে। পরে তাদের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী পুলিশ রাত ৮টার দিকে ফতুল্লা থানার লামাপাড়ায় তানজিলের বাসা থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত সুইচ গিয়ার চাকুটি উদ্ধার করে।
নারায়ণগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (ক্রাইম অ্যান্ড অপস) ‘ক’ সার্কেল হাসিনুজ্জামান জানান, শিশুটির বাবার ওপর প্রতিশোধ নিতেই শিশুটিকে অপহরণ করে হত্যা করা হয়। গ্রেপ্তার তানজিল ও শাহ আলম হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি স্বীকার করেছেন। কেরানীগঞ্জ থানা থেকে যোগাযোগ করা হলে শিশুটির পরিবার থানায় গিয়ে পুলিশের কাছে রক্ষিত শিশুর জামাকাপড় দেখে পরিচয় শনাক্ত করে।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ন র য়ণগঞ জ শ হ আলম
এছাড়াও পড়ুন:
রূপগঞ্জে সাংবাদিকতায় বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ কর্মশালা অনুষ্ঠিত
নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের আয়োজনে দিনব্যাপী ‘সাংবাদিকতায় বুনিয়াদি প্রশিক্ষণ-২০২৫' কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বৃহস্পতিবার (১২ জুন ) রূপগঞ্জ উপজেলা পরিষদ অডিটোরিয়ামে এই কর্মশালা অনুষ্ঠিত হয়। এতে নারায়ণগঞ্জের বিভিন্ন উপজেলার অনলাইন, প্রিন্ট ও ইলেকট্রনিক্স মিডিয়ার প্রায় অর্ধশতাধিক সংবাদ কর্মী অংশগ্রহণ করেন।
নারায়ণগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি মোহাম্মদ রুহুল আমিনের সভাপতিত্বে ও অর্থ সম্পাদক জয়নাল আবেদীনের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নারায়ণগঞ্জ জেলা শাখার সেক্রেটারি মুহাম্মদ হাফিজুর রহমান।
এ ছাড়াও বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন নারায়ণগঞ্জ- ১ রূপগঞ্জ আসনের জামায়াত সমর্থিত এমপি প্রার্থী মোঃ আনোয়ার হোসেন মোল্লা, নারায়ণগঞ্জ জেলা জামাতের জয়েন্ট সেক্রেটারি আবু সাঈদ মুন্না, মোহাম্মদ সালাউদ্দিন কাদের ইন্সপেক্টর অপারেশন, রূপগঞ্জ সাংবাদিক ফোরামের সভাপতি নাজমুল হুদা, আড়াইহাজার প্রেসক্লাব সভাপতি মাসুম বিল্লাহ, সাংবাদিক ফোরাম সেক্রেটারি নুর আলম প্রমুখ।
দিনব্যাপি এ অনুষ্ঠানে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ প্রদান করেন স্টার নিউজের নিউজ এডিটর মোঃ হাবিবুর রহমান অভি, দৈনিক জনকণ্ঠে ডেপুটি এডিটর অধ্যাপক খালেদ ইবনে আমিন, নির্বাচনী রিপোর্টিং নিয়ে বক্তব্য রাখেন মোঃ হাফিজুর রহমান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে মোহাম্মদ হাফিজুর রহমান বলেন, এ প্রশিক্ষণে নারায়ণগঞ্জে কর্মরত সংবাদকর্মীদের এর মাধ্যমে সাংবাদিকতা বিষয়ক জ্ঞান আরও বাড়বে। সাংবাদিকদের কাজ হলো সত্যকে উন্মোচন করা। এখনকার সময়ে প্রকৃত সাংবাদিক খুঁজে পাওয়া মুশকিল।
এরকম প্রশিক্ষণের অনেক গুরুত্ব আছে। কারণ সাংবাদিকতা শিখতে হলে বুনিয়াদি কর্মশালা অবশ্যই করতে হবে। যারা সত্যিকার অর্থে এ পেশা বেছে নিতে চায়, তাদের এ প্রশিক্ষণ অনেক কাজে দেবে। সাংবাদিকরা সব কিছু জানবে এবং সবার অধিকার আদায়ের কথা বলবে।