এনায়েতপুরে ইফতার মাহফিলের আয়োজন নিয়ে বিএনপির দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ছাত্রদল নেতা কবির হোসেনের (৩৫) মৃত্যুর ঘটনায় দুই নেতার দলীয় পদ স্থগিত করা হয়েছে। বুধবার গভীর রাতে জেলা বিএনপির দপ্তর সম্পাদক তানভীর মাহমুদ পলাশ স্বাক্ষরিত চিঠিতে এ তথ্য জানা গেছে। পদ স্থগিত হওয়া নেতারা হলেন, এনায়েতপুর থানা বিএনপির সাবেক সভাপতি জাহাঙ্গীর কবির জনি সাইদুল ও সাবেক সদস্য সচিব মঞ্জু রহমান মঞ্জু শিকদার। 

পাশাপাশি এ ঘটনার তদন্তে তিন সদস্যের কমিটি গঠন করেছে জেলা বিএনপি। বুধবার রাত ৮টার দিকে ঢাকার একটি ক্লিনিকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় কবির হোসেনের মৃত্যু হয়। তিনি সোদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ডের ছাত্রদলের সাবেক সভাপতি এবং উপজেলার চাঁদপুর গ্রামের ফজল হকের ছেলে।

তদন্ত কমিটির সদস্যরা হলেন, জেলা বিএনপির সহ-সভাপতি মকবুল হোসেন চৌধুরী, সহ-সভাপতি নাজমুল হাসান তালুকদার রানা ও যুগ্ন সাধারণ সম্পাদক নুর কায়েম সবুজ। কমিটিকে ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে প্রতিবেদন দিতে বলা হয়েছে।  

জানা যায়, মঙ্গলবার সিরাজগঞ্জ-৫ (বেলকুচি ও চৌহালি) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মেজর (অব.

) মঞ্জুর কাদেরের সমর্থকরা চাঁদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে ইফতার মাহফিলের আয়োজন করেন। কেন্দ্রীয় বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক ও জেলা বিএনপির সন্মেলন প্রস্তুতি কমিটির আহবায়ক আমিরুল ইসলাম খান আলিমের সমর্থকরা তাতে বাধা দেন। এতে উভয়পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হলে সাতজন আহত হন। বুধবার রাতে ঢাকার একটি ক্লিনিকে মঞ্জুর কাদেরের সমর্থক সাবেক ছাত্রদল নেতা কবির হোসেন মারা যান। কবির চাঁদপুর গ্রামের ফজল হকের ছেলে। তিনি সৌদিয়া চাঁদপুর ইউনিয়নের ২ নম্বর ওয়ার্ড ছাত্রদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ছিলেন।  

কবির হোসেনের মৃত্যু সংবাদ এলাকায় ছড়িয়ে পড়লে মঞ্জুর কাদেরের সমর্থক শতাধিক নেতাকর্মী রাতে এনায়েতপুরে প্রতিবাদ মিছিল ও ও থানার সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালন করেন। ওই সময় তারা হত্যাকাণ্ডে জড়িতদের শাস্তি ও গ্রেপ্তার দাবি করেন। বৃহস্পতিবার সকালেও তারা আলিমের ফাঁসি চেয়ে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেন। সাবেক যুবদল নেতা আতাউর রহমান আতা, সাইদুল ইসলাম রাজ ও সাবেক ছাত্রদল নেতা এস এম কাশেম এতে নেতৃত্ব দেন।

এ বিষয়ে কথা বলতে আমিরুল ইসলাম খান আলিমের মোবাইল ফোনে কল দেওয়া হলেও তিনি রিসিভ করেননি। তার হোয়াটসঅ্যাপে খুদে বার্তা পাঠালেও সাড়া মেলেনি।

এনায়েতপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) রওশন ইয়াজদানি বলেন, কবির হোসেনের মরদেহ ময়নাতদন্ত শেষে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়। এ ঘটনায় কোনো পক্ষ মামলা করেনি। 

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: ব এনপ ছ ত রদল ন ত ব এনপ র স সদস য র সমর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ