রিকশা চালানো থেকে শুরু করে ফুটপাতে হকারি, রাজমিস্ত্রির কাজ—এখন শতাধিক কর্মীর বেতন দেন তিনি
Published: 21st, March 2025 GMT
মো. নুর আলম চৌধুরীর কাছ থেকে এখন সময় পাওয়া খুব কঠিন। ৭৬ বছর বয়সে দাঁড়িয়েও তাঁকে সামলাতে হয় অনেক কিছু। গত সোমবার দুপুরে রাজধানীর নীলক্ষেতের ২ নম্বর গলিতে প্রায় ঘণ্টা দেড়েক অপেক্ষার পর তিনি এলেন। কথা বলতে অনাগ্রহী। বললেন, ‘আমি বয়স্ক মানুষ, রোজার সময় কষ্ট হয় বেশি কথা বলতে। অন্যদিন আসবেন?’
তবে অন্যদিন যেতে হয়নি। প্রবীণ মানুষটির কাছে পুরোনো বই, ঢাকা শহরের দাঙ্গা, ফুলবাড়িয়া রেলস্টেশনের মতো প্রসঙ্গগুলো তুললে নিজেই শুরু করলেন কথার পিঠে কথা। গত শতকের পঞ্চাশের দশকের শেষে সন্দ্বীপে নদীভাঙনে সব হারানো নুর আলমের জীবনের গল্প শুনলে আশ্চর্যই হতে হয়। হয়তো একেই বলে ‘শূন্য থেকে পূর্ণ হওয়া’।
মো.
জীবনের বাঁকে বাঁকে পোড় খেয়ে অভিজ্ঞতা কুড়ানো নুর আলম আত্মবিশ্বাস নিয়ে বললেন, ‘ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি সাহিত্য বিভাগের গত ৫০ বছরের সব শিক্ষক-শিক্ষার্থী আমাকে একনামে চেনেন। বিশ্বাস না হলে জিজ্ঞেস করে দেখবেন। আমার দোকানের বই তাঁদের ভরসা।’
সেই ঢাকার কথা আপনাদের প্রজন্ম বুঝতেই পারবে না। এই নীলক্ষেতে ছিল কয়েক ঘর বস্তি। তালগাছটা নাই, একটা বটগাছও ছিল। এখন দোকানে ঢাকা পড়ে গেছে বড় মাঠ। বিশ্বাস হয় এই নীলক্ষেতে ফাঁকা মাঠ ছিল, রেললাইন ছিল?মো. নুর আলম চৌধুরী, নীলক্ষেতের ফ্রেন্ডস বুক কর্নারের স্বত্বাধিকারীকথা সত্যি। নীলক্ষেতের বইয়ের দোকানের ২ নম্বর গলির মুখে দাঁড়িয়ে থাকা বুড়ো তেঁতুলগাছটাও হয়তো নুর আলমের কথার সাক্ষী। এখানকার ফ্রেন্ডস বুক কর্নারের বয়স এখন ৫৮ বছর। বইয়ের দোকানটি শুরু করার আগে তিনি ঢাকা নিউমার্কেটের ২ নম্বর গেটের বিপরীতে ফুটপাতে বসে পুরোনো ম্যাগাজিন বিক্রি করতেন। এরপর বেঁচে থাকার তাগিদে করেছেন আরও বহু কাজ। তবে বই বিক্রির পেশাই তাঁকে বেশি টেনেছে।
‘তখন এমন পাঠক ছিল, যারা সত্যিকারের বইয়ের সমঝদার। ১৯৬৪ সালের দাঙ্গা, একাত্তরের মুক্তিযুদ্ধ—এসব ঘটনায় অনেকের স্থানান্তর হয়েছে। ঘরবাড়ি বদলালেই বইপত্রে নাড়াচাড়া পড়ে। সেখান থেকে পুরোনো বই আমাদের কাছে কেজি হিসেবে বিক্রি করতেন ভাঙারিওয়ালারা। তাঁদের কাছ থেকে ইংরেজি ম্যাগাজিন কিনে বিক্রি করতাম। নীলক্ষেতে তখন বেশি হলে সাত থেকে আটজন বই বিক্রেতা ছিলেন,’ বলেন নুর আলম।
নীলক্ষেতে ১৯৬৬ সালে নুর আলমের পুরোনো বইয়ের দোকান। ছবিটি উইকলি ইনডিপেনডেন্ট পত্রিকায় প্রকাশিত হয়উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে সড়কে গাছ ফেলে ডাকাতি, অপহরণ ৩
কক্সবাজারের ঈদগাঁও-ঈদগড় সড়কে গাছ ফেলে একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও মাছবাহী গাড়িতে ডাকাতির অভিযোগ উঠেছে। এসময় ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে তিন জনকে অপহরণ করেছে বলেও অভিযোগ।
সোমবার (১৬ জুন) সকাল ৭টার দিকে সড়কের হিমছড়ি ঢালায় এ ঘটনা ঘটে।
অপহৃতরা হলেন- জেলার রামু উপজেলার ঈদগড় ইউনিয়নের গুইন্যাপাড়া এলাকার শাহজাহানের ছেলে শাহেদ ও ফাতেমার ঘোনা এলাকার আলমের ছেলে আমির সোলতান। তারা পেশায় মাছ ব্যবসায়ী। অপর অপহৃত ব্যক্তির নাম-পরিচয় জানা যায়নি।
আরো পড়ুন:
রামুতে বাস-কাভার্ডভ্যান সংঘর্ষে নিহত ৩
শেরপুরে বাসচাপায় যুবক নিহত, বিক্ষুব্ধ জনতার অগ্নিসংযোগ
স্থানীয় নুর আহমদ মান্নান নামের একজন বলেন, ‘‘যাত্রীবাহী দুটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা ও একটি মাছবাহী গাড়ি হিমছড়ি ঢালায় পৌঁছালে মুখোশধারী সশস্ত্র ডাকাতরা সড়কে গাছ ফেলে যানবাহন আটকে দেয়। এসময় একটি সিএনজিচালিত অটোরিকশা পালিয়ে যায়। এরপর অন্য দুই গাড়ির যাত্রীদের কাছ থেকে নগদ টাকা ও মোবাইল ফোনসহ সর্বস্ব লুট করে তারা। পরে তিন জনকে অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে পার্শ্ববর্তী পাহাড়ে নিয়ে যায়।’’
ঈদগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো. মছিউর রহমান বলেন, ‘‘এ বিষয়ে এখনো কেউ থানায় অভিযোগ করেনি। তবে, ঘটনাটি সম্পর্কে খোঁজখবর নেওয়া হচ্ছে।’’
ঢাকা/তারেকুর/রাজীব