গাজায় ইসরায়েলি গণহত্যায় সিপিবির ক্ষোভ, প্রতিবাদ সমাবেশ
Published: 21st, March 2025 GMT
যুদ্ধবিরতির শর্ত লঙ্ঘন করে ফিলিস্তিনের গাজাসহ বিভিন্ন স্থানে ইসরাইলি বাহিনীর নির্বিচার হত্যাকাণ্ডের প্রতিবাদে সমাবেশ ও বিক্ষোভ মিছিল করেছে বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টি (সিপিবি)। আজ শুক্রবার রাজধানীতে এ প্রতিবাদ মিছিল হয়। মিছিলটি সিপিবির কেন্দ্রীয় কার্যালয় মুক্তি ভবন থেকে শুরু হয়ে জাতীয় প্রেসক্লাব হয়ে রাজধানীর মূল সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
রাজধানীর পুরানা পল্টন মোড়ে মিছিলপূর্ব প্রতিবাদ সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন সিপিবির সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মোহাম্মদ শাহ আলম। তিনি বলেন, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে গাজায় ইসরাইলি বাহিনীর এই গণহত্যা সাম্রাজ্যবাদের নগ্ন চেহারাকে আবারও উন্মোচিত করেছে। মার্কিন সাম্রাজ্যবাদের সরাসরি মদদে এবং তাদের মধ্যপ্রাচ্যের সেবাদাসদের যোগসাজশে শতাব্দীর এই নৃশংসতম হামলা সংঘটিত হয়েছে। এর জন্য মার্কিন সাম্রাজ্যবাদ ও তার আরব সহযোগীদের অবশ্যই বিচারের মুখোমুখি হতে হবে। বাংলাদেশের জনগণ চিরকালই ফিলিস্তিনের মুক্তিসংগ্রামের সঙ্গে ছিল এবং ভবিষ্যতেও থাকবে।
সিপিবির সাধারণ সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্স বলেন, যুদ্ধবিরতি লঙ্ঘন করে এ হামলার মধ্যে ইসরাইলি বাহিনী আবারও বিশ্ব জনমতের প্রতি বৃদ্ধাঙ্গুলি প্রদর্শন করল। মানবতার বিরুদ্ধে এত বড় অপরাধ দুনিয়ার কোনো বিবেকবান মানুষই বরদাশত করতে পারে না। কিন্তু জাতিসংঘ অত্যন্ত দুঃখজনকভাবে এ বিষয়ে উপযুক্ত ভূমিকা পালন করছেন না।
রুহিন হোসেন বলেন, বর্তমান অন্তর্বর্তী সরকারের উচিত ছিল অত্যন্ত কড়া ভাষায় এ হামলার প্রতিবাদ করা। কিন্তু কার্যত সেটি হয়েছে অত্যন্ত দায়সারা প্রকৃতির।
সিপিবির সম্পাদক ও আন্তর্জাতিক বিভাগের প্রধান হাসান তারিক চৌধুরী বলেন, আন্তর্জাতিক আদালত ইতিমধ্যেই ফিলিস্তিনে ইসরাইলি বাহিনীর পরিচালিত নৃশংস হত্যাকাণ্ডকে গণহত্যা বলে রায় দিয়েছে। ফলে মানবতাবিরোধী অপরাধের দায়ে ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী নেতানিয়াহুকে গ্রেপ্তার এখন বিশ্বজনতার দাবি। সে দাবি বাস্তবায়ন করতে হবে।
সমাবেশে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সিপিবির সহকারী সাধারণ সম্পাদক মিহির ঘোষসহ অন্যান্য কেন্দ্রীয় নেতা।
.উৎস: Prothomalo
এছাড়াও পড়ুন:
হাইতিতে গ্যাং হামলায় ৫০ জনের বেশি নিহত
ক্যারিবীয় দ্বীপপুঞ্জের দেশ হাইতিতে গত সপ্তাহে একাধিক গ্যাং হামলায় ৫০ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। জাতীয় মানবাধিকার প্রতিরক্ষা নেটওয়ার্কের (আরএনডিডিএইচ) তথ্যানুসারে, সংকটে জর্জরিত দেশটিতে সর্বশেষ ভয়াবহ গণহত্যার ঘটনা এটি।
মঙ্গলবার (১৬ সেপ্টেম্বর) বার্তা সংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে মার্কিন সংবাদমাধ্যম ব্যারন’স।
গতকাল সোমবার এএফপিকে পাঠানো এক প্রতিবেদনে আরএনডিডিএইচ জানায়, গত ১১ ও ১২ সেপ্টেম্বর রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের উত্তর এলাকায় এই হামলাগুলো ঘটে।
ওই প্রতিবেদনে বলা হয়, ‘২০২৫ সালের ১৪ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত নিহত হওয়া বহু মানুষের লাশ এখনও পাওয়া যায়নি। লাশগুলো এখনও ঝোপের মধ্যে পড়ে আছে এবং কুকুর লাশগুলো খেয়ে ফেলেছে।’
পশ্চিম গোলার্ধের সবচেয়ে দরিদ্র দেশ হাইতি। দেশটির একটি অংশ ও রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্সের বেশিরভাগ এলাকা সশস্ত্র গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণে থাকায় সহিংসতা বৃদ্ধি পাচ্ছে।
২০২৪ সালের শুরুর দিকে গ্যাংগুলোর একটি জোট লাগাতার হামলা শুরু করলে পরিস্থিতির চরম অবনতি হয়। যার ফলে প্রধানমন্ত্রী এরিয়েল হেনরি পদত্যাগ করেন এবং প্রেসিডেন্টের অন্তর্বর্তীকালীন পরিষদের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করেন।
হাইতির পুলিশকে সমর্থন করার জন্য কেনিয়ার নেতৃত্বাধীন বহুজাতিক বাহিনী মোতায়েন করার পরও সহিংসতা দমন করা সম্ভব হয়নি।
আরএনডিডিএইচ জানিয়েছে, ভিভ আনসানম গ্যাং জোট, যারা ২০২৪ সালের মার্চ মাস থেকে ক্যাবারেট শহরের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে, তারা গত সপ্তাহে নিকটবর্তী ল্যাবোডেরি শহরে বেসামরিক জনগণের বিরুদ্ধে অত্যন্ত নিষ্ঠুর গণহত্যা চালিয়েছে। শহরটি রাজধানী পোর্ট-অ-প্রিন্স থেকে প্রায় ২৫ কিলোমিটার উত্তরে অবস্থিত।
সংস্থাটি আরো জানায়, ‘তারা ৫০ জনেরও বেশি মানুষকে হত্যা করেছে এবং বেশ কয়েকটি বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দিয়েছে।’
প্রতিবেদনে আরো বলা হয়, ‘বেঁচে থাকা কয়েকজন পার্শ্ববর্তী এলাকায় পালিয়ে যেতে সক্ষম হন। অন্যান্যরা আক্রমণকারীদের হাত থেকে বাঁচতে নৌকায় করে সমুদ্রে পালিয়ে যায়।’
জাতিসংঘের মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেস গত মাসে সতর্ক করে বলেছেন, হাইতিতে ‘রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ব ভেঙে পড়ছে।’
তিনি নিরাপত্তা পরিষদকে সতর্ক করে বলেন, হাইতির রাজধানীর বাইরেও সহিংসতা ছড়িয়ে পড়ছে। সেখানকার ৯০ শতাংশ অঞ্চলের ওপর গ্যাংগুলোর নিয়ন্ত্রণ রয়েছে।
রবিবার, তিনি ক্যাবারে কমিউনে হামলার নিন্দা জানিয়েছেন এবং দেশগুলোকে প্রয়োজনীয় ‘সরবরাহ, কর্মী ও তহবিল দিয়ে বহুজাতিক নিরাপত্তা সহায়তা মিশনকে শক্তিশালী করার প্রচেষ্টা ত্বরান্বিত করার’ আহ্বান জানিয়েছেন।
জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের তথ্যানুসারে, চলতি বছরের প্রথমার্ধে হাইতিতে কমপক্ষে ৩ হাজার ১৪১ জন নিহত হয়েছে।
ঢাকা/ফিরোজ