রাজশাহীর ৯১৩ চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ
Published: 21st, March 2025 GMT
রাজশাহী বিভাগের ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করেছে আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তর। গতকাল বৃহস্পতিবার (২০ মার্চ) এই সুপারিশ খাদ্য মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। চালকলগুলোর বিরুদ্ধে কী ধরনের ব্যবস্থা নেওয়া হবে, তা চূড়ান্তভাবে নির্ধারণ করবে মন্ত্রণালয়।
আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রকের দপ্তর জানিয়েছে, সরকারি গুদামে চাল সরবরাহের চুক্তি না করা এবং চুক্তি করেও চাল না দেওয়ার কারণে এসব মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। এ জন্য তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। সবমিলিয়ে ৯১৩টি চালকলের বিরুদ্ধে এ ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।
জানা গেছে, ৭৫১টি মিল চুক্তিযোগ্য হলেও তারা চাল সরবরাহের জন্য সরকারের সঙ্গে কোনো চুক্তি করেনি। এই মিলগুলোর মধ্যে ৪৫টি অটো রাইস মিল, বাকিগুলো হাসকিং মিল। এ ছাড়া ১৬২টি মিল সরকারের সঙ্গে চুক্তি করেও পর্যাপ্ত চাল সরবরাহ করেনি। এর মধ্যে ৩০টি মিল লক্ষ্যমাত্রার ৮০ শতাংশ চাল দিয়েছে, ৭১টি মিল ৫০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে।
আরো পড়ুন:
ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদ রাবি শিক্ষার্থীদের
রাবির গবেষণা: মাটি ছাড়াই উৎপাদন হবে সবুজ পশুখাদ্য
খাদ্য বিভাগের তথ্যমতে, বিভাগের আট জেলায় শুধু কৃষকদের কাছ থেকে ধান সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৫৬ হাজার ৩৫৯ টন, কিন্তু সংগ্রহ হয়েছে মাত্র ৩৯৫ টন, যা লক্ষ্যমাত্রার মাত্র ৭ শতাংশ। কৃষকরা প্রতি মণ ধান ১ হাজার ৩২০ টাকা দরে সরকারি গুদামে বিক্রি না করে খোলা বাজারে ১ হাজার ৪৫০ টাকা কিংবা তার কিছু কম-বেশি দরে বাজারে বিক্রি করেছেন।
মিলারদের কাছ থেকে সিদ্ধ চাল কেনার লক্ষ্যমাত্রা ছিল ১ লাখ ১১ হাজার ২৬৩ মেট্রিক টন, তবে সংগ্রহ হয়েছে ৯৪ হাজার ৭০৭ মেট্রিক টন। আতপ চালের লক্ষ্যমাত্রা ছিল ২১ হাজার ৮৯১ মেট্রিক টন, যেখানে সংগ্রহ হয়েছে ১৯ হাজার ৫২৯ টন। চলতি মৌসুমে রাজশাহী বিভাগের জেলাগুলোতে সরকারি ধান-চাল সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা পূরণ হয়নি। সময়সীমা কয়েক দফা বাড়ানো হলেও কাঙ্খিত পরিমাণ ধান-চাল সংগ্রহ সম্ভব হয়নি।
খাদ্য বিভাগের বিভিন্ন সূত্র বলছে, সরকারি গুদামে চালের নির্ধারিত মূল্যের চেয়ে বাজারমূল্য বেশি হওয়ায় মিলাররা পুরোনো চাল সরবরাহ করেছেন। আবার বাজারে দাম বেশি হওয়ায় অনেকে সরকারি গুদামে চাল সরবরাহ করেননি। এ জন্য শাস্তি এড়াতে কিছু মিল মালিক ভারত থেকে আমদানি করা পুরোনো চাল সরবরাহ করেছেন বলেও অভিযোগ রয়েছে।
আঞ্চলিক খাদ্য নিয়ন্ত্রক দপ্তরের সহকারী উপ-পরিচালক ওমর ফারুক বলেন, “যেসব মিল চুক্তি করেনি বা চুক্তি করেও চাল সরবরাহ করেনি, তাদের তালিকা তৈরি করা হয়েছে। আমরা ৯১৩টি মিলের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার সুপারিশ করেছি। এখন মন্ত্রণালয় চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে।”
তিনি আরো বলেন, “যেসব মিল ৫০ থেকে ৮০ শতাংশ চাল সরবরাহ করেছে, তাদের জামানত থেকে টাকা কেটে জরিমানা করার সুপারিশ করা হয়েছে। আর যারা কোনো চাল সরবরাহ করেনি, তাদের লাইসেন্স বাতিলের সুপারিশ করা হয়েছে। মন্ত্রণালয় এগুলোর ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নেবে।”
ঢাকা/কেয়া/মাসুদ
.উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর র স প র শ কর ব যবস থ সরক র
এছাড়াও পড়ুন:
বাজারে সবজির সরবরাহ বেড়েছে, নিম্নমুখী চালের দাম
ঈদের বন্ধের আমেজ কাটতেই ব্যস্ত হয়ে পড়েছে চট্টগ্রামের পাইকারি ও খুচরা বাজারগুলো। ক্রেতা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে বাজারগুলোতে বেড়েছে সবজিসহ বিভিন্ন পণ্যের সরবরাহ। বাজার ঘুরে দেখা গেছে, কয়েক দিনের ব্যবধানে কিছুটা কমেছে সবজির দাম। পেঁয়াজ, রসুন ও চালের মতো নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্যের দামও নিম্নমুখী।
বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ঈদের ছুটি শুরু হওয়ার পর নগরের কাঁচাবাজারে সবজির সরবরাহ কমে যায়। ফলে দাম ছিল কিছুটা বাড়তি। গত রোববার ও সোমবারের দিকে নগরের আড়তগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৬০ টাকা দরে। অধিকাংশ সবজির দামও ৪০ টাকার আশপাশে ছিল। তবে গত মঙ্গলবার থেকে আবারও বাজারে পুরোদমে সবজির সরবরাহ শুরু হয়েছে। যার কারণে দাম কমতে শুরু করেছে।
আজ শুক্রবার নগরের রিয়াজউদ্দিন বাজারের পাইকারি আড়তে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ২০ থেকে ৪০ টাকা দরে। বেশির ভাগ সবজির দাম প্রতি কেজি ১০ থেকে ৩৫ টাকা। তবে খুচরা বাজারগুলোতে প্রায় দ্বিগুণ দামে সবজি বিক্রি হতে দেখা যায়। নগরের বহদ্দারহাট, চকবাজার, সাব এরিয়া ও কাজির দেউড়ি বাজারে খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, এসব বাজারে অধিকাংশ সবজির দাম ৬০ টাকার বেশি। লাউ, মিষ্টিকুমড়া ও ফুলকপির দাম কিছুটা কম। এসব সবজির দাম ৫০ টাকার আশপাশে। খুচরা বাজারগুলোতে কাঁচামরিচ বিক্রি হয়েছে ৮০ টাকা কেজি দরে। পরিবহন খরচ ও আগে কেনার অজুহাতে বাড়তি দাম নিচ্ছেন বিক্রেতারা। রিয়াজউদ্দিন বাজারের আড়তদার নুরুল ইসলাম বলেন, বাজারে সব সবজির দাম কম। কিন্তু খুচরা ব্যবসায়ীদের কারণে ভোক্তাদের ভোগান্তি হচ্ছে। আড়তের দামের দ্বিগুণ দামে তাঁরা সবজি বিক্রি করছেন।
সবজির বাজারের পাশাপাশি পেঁয়াজ, রসুন ও চালের দামও নিম্নমুখী। খাতুনগঞ্জের পাইকারি আড়তে আজ পেঁয়াজ বিক্রি হয়েছে প্রতি কেজি ৪৫ থেকে ৫২ টাকা দরে। খুচরা পর্যায়ে দাম ছিল ৬৫ থেকে ৭০ টাকা কেজি। অন্যদিকে রসুনের কেজি আড়তে ছিল ৮৫ থেকে ১১০ টাকা। খুচরায় সেটি ১০০ থেকে ১৩০ টাকা।
পাহাড়তলী চালের আড়তে মোটা চাল (গুটি, স্বর্ণা) কেজিপ্রতি ৪৮ থেকে ৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। অন্যদিকে জিরাশাইল ৭২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। গত তিন দিন আগ থেকে চালের বাজার কিছুটা নিম্নমুখী বলে জানিয়েছেন ব্যবসায়ীরা। বস্তাপ্রতি (৫০ কেজি) চালের দাম কমেছে ৩০০ টাকা পর্যন্ত। পাহাড়তলী বণিক সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক নিজাম উদ্দিন বলেন, চালের সরবরাহ যথেষ্ট আছে। চালের দাম বাড়ার আশঙ্কা নেই এখন।