অনুপ্রবেশের সময় সাগরে রোহিঙ্গাবোঝাই নৌকাডুবি, বিজিবি সদস্যসহ ১৬ জন নিখোঁজ
Published: 22nd, March 2025 GMT
মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সাগর পথে কক্সবাজারের টেকনাফে প্রবেশের সময় রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা ডুবে গেছে। দুর্ঘটনায় পড়া নৌকাটি থেকে এ পর্যন্ত ২৫ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে জীবিত উদ্ধার করেছে বিজিবি। তবে উদ্ধারের সময় সাগরে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন মোহাম্মদ বেলাল (২৮) নামের বিজিবির এক সিপাহি। এ ছাড়া প্রায় ১৫ জন রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।
নিখোঁজ বিজিবির সদস্য টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে থাকা একটি রাইফেল ও চারটি ম্যাগাজিনও খোয়া গেছে।
গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া এলাকার সাগরে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.
তিনি জানান, শুক্রবার মধ্য রাতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া ঘাটের কাছে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অবৈধভাবে সাগরপথে বাংলাদেশের অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় নৌকার তলা ফেটে যায়। খবর পেয়ে সৈকতের পাশে কর্তব্যরত বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের নিয়ে তাঁদের উদ্ধারের জন্য এগিয়ে যান। সাগর থেকে বিজিবির সদস্যরা ২৫ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হন। তবে এ সময় সাগরে পড়ে নিখোঁজ হন বিজিবির সিপাহি মোহাম্মদ বেলাল। বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।
নৌকাডুবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া জেলে ঘাটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর বলেন, গভীর রাতে শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়া সাগরে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অনুপ্রবেশের সময় ডুবে গেছে। রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করতে যাওয়া বিজিবির এক সদস্যসহ অন্তত ১৬ জন সাগরে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, সাগরপথে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা ডুবে গেছে। এ ঘটনায় ২৫ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে উদ্ধার করা হলেও সঙ্গে বিজিবির একজন সদস্য এবং বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: র হ ঙ গ ব ঝ ই একট শ হপর র দ ব প জন র হ ঙ গ সদস য র সময়
এছাড়াও পড়ুন:
কক্সবাজারে ৮০ শতাংশ মাদক আসে সাগরপথে: বিজিবি
মিয়ানমার থেকে বাংলাদেশে মাদক চোরাচালানের জন্য কক্সবাজার সীমান্ত প্রধান রুট হিসেবে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর মধ্যে উখিয়া-টেকনাফ সীমান্ত ও বান্দরবানের নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ বলে জানিয়েছেন বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) রামু সেক্টর কমান্ডার কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দীন আহমেদ।
সোমবার (১৫ সেপ্টেম্বর) দুপুরে কক্সবাজার শহরের বিজিবি সীমান্ত সম্মেলন কেন্দ্রে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ সব তথ্য তুলে ধরেন।
আরো পড়ুন:
টেকনাফে সাড়ে ৩ লাখ ইয়াবাসহ গ্রেপ্তার ২
জাকসু নির্বাচনের ২ দিন আগে ডোপ টেস্ট নিয়ে যা বলছেন প্রার্থীরা
সংবাদ সম্মেলনে কর্নেল মোহাম্মদ মহিউদ্দীন আহমেদ বলেন, ‘‘নাফ নদী ও সাগরপথ হয়ে মহেশখালী, বাঁশখালী, কুতুবদিয়া, আনোয়ারা ও কুয়াকাটা দিয়ে ইয়াবা, ক্রিস্টাল মেথসহ বিভিন্ন ধরনের মাদক দেশে প্রবেশ করছে। ধারণা করা হয়, মোট মাদকের প্রায় ৮০ শতাংশ আসছে সাগরপথে। আগে এটি শুধু অনুমান ছিল, বর্তমানে ডিজিটাল ফুটপ্রিন্টের মাধ্যমে এ রুট ব্যবহারের প্রমাণ মিলেছে।’’
তিনি আরো বলেন, ‘‘উখিয়া-টেকনাফ সীমান্তে বিজিবির কড়া নজরদারির কারণে বিকল্প পথ হিসেবে ব্যবহার বাড়ছে নাইক্ষ্যংছড়ি সীমান্ত। তবে দুর্গম ভূখণ্ড ও দুর্বল যোগাযোগ ব্যবস্থা এ সীমান্তে নজরদারি কঠিন করে তুলেছে। গত ১৫ জুলাই থেকে এ পর্যন্ত কক্সবাজার রিজিয়নের অধীনস্থ ব্যাটালিয়নসমূহ বিশেষ অভিযানে ২৮ লাখেরও বেশি পিস ইয়াবা ট্যাবলেট, ৮১৬ গ্রাম ক্রিস্টাল মেথ, ১৬৮ ক্যান বিয়ার, প্রায় ৩৬৬ লিটার বাংলা মদ এবং ২ কেজি ৪২৫ গ্রাম গাঁজা উদ্ধার করেছে।’’
তিনি জানান, এ সব অভিযানে ১৮৮ জন আসামি গ্রেপ্তার হয়েছে। উদ্ধারকৃত মাদকের আনুমানিক মূল্য প্রায় ৮৯ কোটি টাকা।
তিনি আরো জানান, শুধু মাদক নয়, এ সময়ে বিপুল অস্ত্র ও গোলাবারুদও উদ্ধার করেছে বিজিবি। এর মধ্যে রয়েছে দেশীয় এক নলা বন্দুক ৬টি, একে-৪৭ রাইফেল, এসএলআর, জি-৩ রাইফেল, বিদেশি রিভলবার ও গ্রেনেডসহ বিভিন্ন অস্ত্র রয়েছে। আটক হয়েছে ৫ জন অস্ত্রধারী আসামি। এসব অস্ত্র ও গোলাবারুদের মূল্য ২২ লাখ টাকার বেশি।
বিজিবির এই কর্মকর্তা বলেন, ‘‘সীমান্ত এলাকায় নিয়মিত টহল, আধুনিক প্রযুক্তির ব্যবহার, স্থানীয় জনগণের সহযোগিতা এবং জনসচেতনতা সৃষ্টির মাধ্যমে মাদক ও চোরাচালান দমনে বহুমাত্রিক পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে।’’
সংবাদ সম্মেলনে টেকনাফ ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল আশিকুর রহমান, রামু ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল কাজী মাহতাব উদ্দিন আহমেদসহ বিজিবির অন্যান্য কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
ঢাকা/তারেকুর/বকুল