মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য থেকে সাগর পথে কক্সবাজারের টেকনাফে প্রবেশের সময় রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা ডুবে গেছে। দুর্ঘটনায় পড়া নৌকাটি থেকে এ পর্যন্ত ২৫ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে জীবিত উদ্ধার করেছে বিজিবি। তবে উদ্ধারের সময় সাগরে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন মোহাম্মদ বেলাল (২৮) নামের বিজিবির এক সিপাহি। এ ছাড়া প্রায় ১৫ জন রোহিঙ্গা নিখোঁজ রয়েছেন বলে জানা গেছে।

নিখোঁজ বিজিবির সদস্য টেকনাফ উপজেলার সাবরাং ইউনিয়নের শাহপরীর দ্বীপ সীমান্ত ফাঁড়িতে কর্মরত ছিলেন। তাঁর সঙ্গে থাকা একটি রাইফেল ও চারটি ম্যাগাজিনও খোয়া গেছে।

গতকাল শুক্রবার দিবাগত রাত আড়াইটায় টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপের পশ্চিমপাড়া এলাকার সাগরে এ ঘটনা ঘটেছে। প্রথম আলোকে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন টেকনাফ-২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মো.

আশিকুর রহমান।

তিনি জানান, শুক্রবার মধ্য রাতে টেকনাফের শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া ঘাটের কাছে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অবৈধভাবে সাগরপথে বাংলাদেশের অনুপ্রবেশের চেষ্টা করে। এ সময় নৌকার তলা ফেটে যায়। খবর পেয়ে সৈকতের পাশে কর্তব্যরত বিজিবি সদস্যরা স্থানীয় জেলেদের নিয়ে তাঁদের উদ্ধারের জন্য এগিয়ে যান। সাগর থেকে বিজিবির সদস্যরা ২৫ জন রোহিঙ্গা নাগরিককে জীবিত অবস্থায় উদ্ধার করতে সক্ষম হন। তবে এ সময় সাগরে পড়ে নিখোঁজ হন বিজিবির সিপাহি মোহাম্মদ বেলাল। বিজিবি সূত্রে জানা গেছে, নিখোঁজদের সন্ধানে উদ্ধার কার্যক্রম অব্যাহত রয়েছে।

নৌকাডুবির ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করে টেকনাফ শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিম পাড়া জেলে ঘাটের সাধারণ সম্পাদক আবদুল গফুর বলেন, গভীর রাতে শাহপরীর দ্বীপ পশ্চিমপাড়া সাগরে রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা অনুপ্রবেশের সময় ডুবে গেছে। রোহিঙ্গাদের উদ্ধার করতে যাওয়া বিজিবির এক সদস্যসহ অন্তত ১৬ জন সাগরে পড়ে নিখোঁজ হয়েছেন।

এ ব্যাপারে জানতে চাইলে টেকনাফ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ এহসান উদ্দিন বলেন, সাগরপথে অনুপ্রবেশের চেষ্টার সময় রোহিঙ্গাবোঝাই একটি নৌকা ডুবে গেছে। এ ঘটনায় ২৫ জন রোহিঙ্গা নারী, পুরুষ ও শিশুকে উদ্ধার করা হলেও সঙ্গে বিজিবির একজন সদস্য এবং বেশ কয়েকজন নিখোঁজ রয়েছেন। তাঁদের উদ্ধারে অভিযান চলছে।

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: র হ ঙ গ ব ঝ ই একট শ হপর র দ ব প জন র হ ঙ গ সদস য র সময়

এছাড়াও পড়ুন:

ক্যারিবীয় জাহাজে আবারো যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, নিহত ৩

ক্যারিবীয় সাগরে একটি জাহাজে আবারো হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সামরিক বাহিনী। এতে জাহাজটিতে থাকা অন্তত তিনজন নিহত হয়েছেন। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন যুক্তরাষ্ট্রের প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ। 

রবিবার (২ নভেম্বর) এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানিয়েছে আল জাজিরা।

আরো পড়ুন:

নাইজেরিয়ায় হামলার হুমকি ট্রাম্পের

কানাডার সঙ্গে আলোচনায় না বসার ঘোষণা ট্রাম্পের

শনিবার গভীর রাতে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে দেওয়া এক পোস্টে হেগসেথ বলেন, “মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নির্দেশে এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে ওই জাহাজটিকে অবৈধ মাদক চোরাচালানে জড়িত হিসেবে শনাক্ত করা হয়েছিল।”

তিনি বলেন, “আন্তর্জাতিক জলসীমায় পরিচালিত এই হামলার সময় জাহাজটিতে ‘তিনজন পুরুষ মাদক-সন্ত্রাসী’ ছিলেন। তিনজনই নিহত হয়েছেন।” 

শনিবারের এই হামলার আগে গত বুধবার ক্যারিবীয় সাগরে আরো একটি জাহাজে মার্কিন বাহিনীর হামলায় চারজন নিহত হন। গত সোমবার মার্কিন হামলায় নিহত হন ১৪ জন।

মাদক পাচারের অভিযোগ তুলে সেপ্টেম্বর মাস থেকে এই অঞ্চলে সামরিক অভিযান শুরু করেছে যুক্তরাষ্ট্র। এই অভিযানে এখন পর্যন্ত ভেনেজুয়েলা ও কলম্বিয়ার নাগরিকসহ ৬২ জনেরও বেশি মানুষ নিহত হয়েছে। এছাড়া ১৪টি নৌযান এবং একটি সাবমেরিন ধ্বংস হয়েছে।

তবে নৌযানগুলো মাদক পাচারের সঙ্গে জড়িত থাকার কোনো প্রমাণ যুক্তরাষ্ট্র এখনও দেয়নি।  ফলে হামলার বৈধতা নিয়ে ইতিমধ্যে আন্তর্জাতিক মহলে প্রশ্ন উঠেছে। কিছু আইনজীবী যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আন্তর্জাতিক আইন লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছেন। কলম্বিয়া এবং ভেনেজুয়েলার মতো প্রতিবেশী দেশগুলো এই হামলার নিন্দা জানিয়েছে।

ভেনেজুয়েলা বলছে, যুক্তরাষ্ট্র দেশটির বিরুদ্ধে ‘অঘোষিত যুদ্ধ’ শুরু করেছে। ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলাস মাদুরো প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন, দেশটি মার্কিন সামরিক হস্তক্ষেপের যেকোনো প্রচেষ্টার বিরুদ্ধে লড়াই করবে।

যুক্তরাষ্ট্র ইতিমধ্যে ক্যারিবীয় অঞ্চলে সাতটি যুদ্ধজাহাজ, একটি সাবমেরিন, ড্রোন এবং যুদ্ধবিমান মোতায়েন করেছে এবং মেক্সিকো উপসাগরে মোতায়েন করেছে আরেকটি যুদ্ধজাহাজ।

ট্রাম্প প্রশাসন মাদক চোরাচালানকারী নৌযানের ওপর তাদের হামলাকে ‘আত্মরক্ষামূলক পদক্ষেপ’ হিসেবে অভিহিত করেছে। 

তবে বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এ ধরনের নৌযান সাধারণত আটক করা হয় ও ক্রুদের গ্রেপ্তার করা হয়। কিন্তু সাম্প্রতিক মার্কিন অভিযানগুলোতে বিস্ফোরণ ঘটিয়ে পুরো নৌকা ধ্বংস করা হচ্ছে। জাতিসংঘ-নিযুক্ত মানবাধিকার বিশেষজ্ঞরা এই অভিযানগুলোকে ‘বিচারবহির্ভূত মৃত্যুদণ্ড’ হিসাবে বর্ণনা করেছেন।

ঢাকা/ফিরোজ

সম্পর্কিত নিবন্ধ