রমজান এলে রাসুল (সা.) সাহাবিদের বলতেন, তোমাদের মাঝে এসেছে বরকতপূর্ণ মাস রমজান, এতে আল্লাহ তোমাদের আচ্ছাদন করে নেন অতঃপর রহমতের বারিধারা বর্ষণ করেন। তিনি দোয়া কবুল করেন। এ মাসে তিনি তোমাদের প্রতিযোগিতা দেখেন। ফেরেশতাদের কাছে তোমাদের নিয়ে গর্ব করেন। তাই তোমরা আল্লাহকে নিজেদের উত্তম ও কল্যাণ দেখাও। কেননা অভাগা সে, যে এ মাসে আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত হয়। তাওবার প্রধানতম মাধ্যম হলো দোয়া। রমজানে দোয়া কবুল করা হয়। হাদিসে বর্ণিত হয়েছে, দোয়াই সকল ইবাদতের মস্তিষ্ক। (তিরমিজি, হাদিস: ৩,২৯৩)
কোরআনের দিকে বর্ণনাধারার দিকে লক্ষ করুন, সুরা বাকারায় ১৮৩ আয়াত থেকে ১৮৫—পর পর তিনটি আয়াতে ক্রমান্বয়ে রমজানে রোজা ফরজ হওয়া সংক্রান্ত আয়াত রয়েছে। ঠিক তার পরের ১৮৬ নম্বরটি আয়াতটিতে দোয়ার প্রতি উৎসাহিত করা হয়েছে এবং ১৮৭ নম্বর আয়াতে আবার রোজার একটি বিধান বর্ণনা করা হয়েছে। আল্লাহ তায়ালা বলেন, ‘আমার বান্দারা যখন তোমার কাছে জিজ্ঞেস করে আমার ব্যাপারে, বস্তুতঃ আমি কাছেই রয়েছি। যারা প্রার্থনা করে, তাদের প্রার্থনা কবুল করে নিই, যখন আমার কাছে প্রার্থনা করে। (সূরা বাকারা, আয়াত: ১৮৬)
আরও পড়ুনরোজার নিয়ত কখন করবেন১০ মার্চ ২০২৫রমজানে মানুষ যখন সাহরি খায়, তখন আল্লাহ প্রথম আকাশে অবতরণ করেন এবং সে-সময়ে দোয়া কবুল হয়। রাসুল (সা.
সুতরাং দোয়া কবুল তখন অবধারিত হয়ে যায়।
দোয়া ছিল নবীদের একান্ত পথ ও পন্থা। আল্লাহ বলেছেন, ‘নবীরা অবশ্যই নেক কাজে তৎপর ছিলেন এবং তারা আগ্রহ ও ভয়ের সঙ্গে আমাকে ডাকতেন। আর আমার প্রতি তারা অত্যন্ত বিনয়ী ছিলেন।’ (সুরা আম্বিয়া, আয়াত: ৯০)
আরও পড়ুনরমজানে ৬টি অভ্যাস১০ মার্চ ২০২৫নবীদের দোয়ার দিকে লক্ষ করলে আমরা দেখি, প্রতিটি দোয়ার সঙ্গে পূর্বের কোনও কর্মের জন্য অনুশোচনা ও তাওবা লুকিয়ে আছে। আমাদের নবী মুহাম্মদ (সা.) আল্লাহর কাছে অনেক বেশি দোয়া করতেন। আল্লাহর কাছে ইবরাহিম (আ.) দোয়া করতেন, ‘আমি তো আমার প্রতিপালককেই ডাকব। আশা করি, আমার তাকে ডেকে আমি ব্যর্থ হব না।’ (সুরা মারইয়াম, আয়াত: ৪৮)
আল্লাহ বলেন, ‘অসহায় মানুষ যখন তাঁকে ডাকে, তখন সে ডাকে কে সাড়া দেন? কে তার দুঃখ দূর করেন? কে তোমাদের পৃথিবীর প্রতিনিধিত্ব দেন? আল্লাহর সঙ্গে অন্য কোনও উপাস্য কি এসবে শরিক আছে? তোমরা সামান্যই চিন্তাভাবনা করো। (সুরা নামল, আয়াত: ৬২)
আরও পড়ুনযে ৬টি আমলে রিজিক বাড়ে২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: আম র ক ছ আল ল হ রমজ ন
এছাড়াও পড়ুন:
সাগরে এক ট্রলারে ৪০ লাখ টাকার ইলিশ
সাগরে এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের জেলেদের জালে ধরা পড়েছে ১৭০ মণ ইলিশ মাছ। দক্ষিণ পশ্চিম বঙ্গোপসাগরের কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার গভীর সমুদ্রে এই ইলিশ মাছ ধরা পড়েছে।
শুক্রবার (৩১ অক্টোবর) সকালে বরগুনার পাথরঘাটা বিএফডিসি মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে সাইফ ফিশ আড়তে এই মাছ বিক্রির উদ্দেশ্যে ওঠানো হয়। মাছগুলো ডাকের মাধ্যমে বিক্রি হয় ৪০ লাখ টাকায়। ট্রলারটিতে জায়গা সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ ইলিশ তুলে দেওয়া হয়।
মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সূত্রে জানাগেছে, পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের সাইফ কোম্পানির এফবি সাফওয়ান-৩ মাছ ধরার ট্রলার গত ২৯ অক্টোবর সকালে পাথরঘাটা থেকে ১৯ জন জেলে নিয়ে সমুদ্রে মাছ ধরতে যায়।
ওই দিন বিকেলে কুয়াকাটা থেকে ৬০ কিলোমিটার দূরে গভীর সমুদ্রে জাল ফেলার পরই রাতে মাছগুলো ধরা পড়ে। ট্রলারটিতে জায়গায় সংকুলান না হওয়ায় তাদেরই আরেকটি ট্রলার সাইফ-২ এ আরো কয়েক মণ তুলে দেওয়া হয়। জেলেরা বলছে, সব মিলিয়ে ১৭০ থেকে ১৭৫ মণ ইলিশ ধরা পড়েছে।
এফবি সাফাওয়ান-৩ ট্রলারের মাঝি রুবেল হোসেন বলেন, “আমরা ২৯ অক্টোবর সাগরে যাই। বিকেলে লম্বা জাল (ইলিশ জাল) ফেলার পর রাত আটটার দিকে জালের অবস্থা দেখে বুঝতে পারি প্রচুর মাছ ধরা পড়েছে। রাত আটটা থেকে জাল টানা শুরু করে পরদিন দুপুর দেড়টা পর্যন্ত জাল ট্রলারে উঠানো শেষ হয়।”
সাইফ ফিশিং কোম্পানির ব্যবস্থাপক মনিরুল হক মাসুম জানান, অনেক দিন ধরে সাগরে খুব কম মাছ ধরা পড়ছিল। ইলিশ মৌসুমে কাঙ্খিত মাছ ধরা না পড়ায় আমাদের লোকসান গুনতে হচ্ছিল। সাগরে অবৈধ ট্রলিং বোট বন্ধ করা হলে জেলেদের জালে প্রচুর মাছ ধরা পড়বে।
পাথরঘাটা মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রের আড়তদার মোস্তফা আলম বলেন, “মাছগুলো আমার আড়তে বিক্রি হয়েছে। ইলিশের প্রকারভেদ ২৭ হাজার, ২২ হাজার, ১২ হাজার টাকায় মণ দরে সব মিলিয়ে ৩১ লক্ষ ৫০ হাজার টাকায় এই মাছ বিক্রি হয়।”
বাংলাদেশ মৎস্যজীবী ট্রলার মালিক সমিতির সভাপতি গোলাম মোস্তফা চৌধুরী বলেন, “২২ দিনের অবরোধ শেষে জেলেরা সাগরে গিয়েই মাছ পেয়েছে- এটা খুশির খবর। তবে দীর্ঘদিন ধরে কাঙ্ক্ষিত ইলিশের দেখা মেলেনি। হঠাৎ এক ট্রলারে ১৪০ মণ ইলিশ পাওয়ায় আমরাও খুশি।”
বরগুনা জেলা মৎস্য কর্মকর্তা মো. মহসীন রাইজিংবিডিকে বলেন, “মা ইলিশ সংরক্ষণের ২২ দিনের নিষেধাজ্ঞা শেষে প্রচুর ইলিশ ধরা পড়ছে জেলেদের জালে।”
তিনি বলেন, “জেলেরা সরকারের দেওয়া বিধিনিষেধ মানলে এবং অবৈধ জাল বন্ধ তাদের জেলেদের সুদিন ফিরবে।”
ঢাকা/ইমরান/এস