কেরানীগঞ্জে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা
Published: 22nd, March 2025 GMT
ঢাকার কেরানীগঞ্জ উপজেলায় দিনেদুপুরে এক ব্যবসায়ীকে কোপানোর পর গুলি করে হত্যা করা হয়েছে। শনিবার দুপুরে উপজেলার গোলাম বাজার এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। নিহত যুবায়ের হোসেন (৩২) ওই এলাকার মজিদ পাড়ার মীর হাবিবুর রহমানের ছেলে। তিনি গোলাম বাজার এলাকায় ইট-বালুর ব্যবসা করতেন।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন। পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে যুবায়েরকে উদ্ধার করে মিটফোর্ড মেডিকেল কলেজ মর্গে পাঠিয়েছে। প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, ইট-বালুর ব্যবসা নিয়ে দ্বন্দ্বের জেরে হত্যাকাণ্ড। হত্যার ঘটনাকে কেন্দ্র করে এলাকায় উত্তেজনা বিরাজ করছে। এর জেরে বেলা দেড়টায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ শুভাঢ্যা উত্তরপাড়ার মসজিদ পাড় এলাকায় দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে কমপক্ষে ১০ জন আহত হন। তাদের মধ্যে সফর আলী খানের ছেলে বাবু খানকে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
স্থানীয়রা জানান, গোলামবাজার মোল্লা গ্রুপের সঙ্গে ইটবালু ব্যবসায়ী যুবায়েরে ব্যবসায়ীক দ্বন্দ্ব চলছিল দীর্ঘদিন ধরে। এছাড়া জমি নিয়েও বিরোধ ছিল তাদের মধ্যে। শনিবার বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মোল্লা গ্রুপের ডানহাত সোবাহান মিয়ার নেতৃত্বে যুবায়েরের ওপর হামলা হয়। এ সময় মোল্লা গ্রুপের লোকজন যুবায়েরকে ধাওয়া করলে তিনি অফিসে ঢুকে পেড়ন। সেখানেই তাকে কুপিয়ে ও গুলি হত্যা করে সন্ত্রাসীরা।
নিহতের বড়ভাই স্বপন হোসেন জানান, ইটবালু ব্যবসার দ্বন্দ্বে মোল্লা গ্রুপের সন্ত্রাসীরা আমার ভাই জুবায়েরের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। গ্রুপের প্রধান দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের সাবেক সভাপতি মোল্লা ফারুকের নির্দেশে সোবহান মিয়া, আমির হোসেন, সবুজ আলী, সাকিব হোসেন, জাবেদ আলী ও আব্দুর রহিমসহ ১২-১৫ জন যুবায়েরকে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে। তারা গোলামবাজার এলাকায় গুলি ও বোমা বিস্ফোরণ ঘটিয়ে আতঙ্ক সৃষ্টি করে।
স্বপন হোসেনের অভিযোগ, মূল পরিকল্পনাকারী মোল্লা ফারুক দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা তাঁতী লীগের ভারপ্রাপ্ত সভাপতি ছিল। পদের নাম ভাঙ্গিয়ে ১৬ বছর সে ইট-বালু ও অবৈধ ভূমি ব্যবসা করেছে। ৫ আগস্টের পর এক মাস এলাকাছাড়া ছিল। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে বিএনপি'র নির্বাহী কমিটির সদস্য ও দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানা বিএনপির সভাপতি নিপুন রায় চৌধুরীর হাতে ফুল দিয়ে বিএনপিতে যোগ দেয়। এরপর আবার বেপরোয়া হয়ে ওঠে।
নিহতের স্ত্রী সাবানা বেগম বলেন, সদ্য আওয়ামী লীগ থেকে বিএনপিতে যোগ দেওয়া মোল্লা ফারুক সকালেই আমার স্বামীকে হুমকি দিয়ে যায়। পরে তার লোক সোবাহান মিয়া আমার স্বামীকে ফোনে ডেকে নিয়ে কুপিয়ে ও গুলি করে হত্যা করে।
দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার ওসি মাজহারুল ইসলাম বলেন, শনিবার সকালে ও দুপুর দেড়টায় দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার শুভাঢ্যা উত্তর পাড়া মসজিদ পাড় এলাকায় সংঘর্ষ হয়। এতে এক যুবককে গুলি করে হত্যা করে সন্ত্রাসীরা। নিহতের ভাই স্বপন হোসেন বাদী হয়ে থানায় অভিযোগ করেছেন।
.উৎস: Samakal
কীওয়ার্ড: ব যবস য় এল ক য় ব এনপ
এছাড়াও পড়ুন:
পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন
চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।
লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।
চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।
লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।
প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।
লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।
লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।
অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’
তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।
তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?