Samakal:
2025-05-01@05:02:28 GMT

হামজাকে দেখার অপেক্ষায় শিলং

Published: 23rd, March 2025 GMT

হামজাকে দেখার অপেক্ষায় শিলং

ডাওকি নদীর সৌন্দর্য দেখতে দেখতে বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ প্রসঙ্গ তুলতেই ট্যাক্সি চালক হারমান হাসি দিয়ে বলে উঠলেন, ‘২৫ তারিখে তোমাদের সঙ্গে ভারতের ম্যাচ।’ গতকাল হামজা দেওয়ান চৌধুরীর নাম বলার আগেই যেন ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা বাংলাদেশের ফুটবলের নতুন পোস্টারবয় সম্পর্কে জ্ঞাত তিনি। মেঘালয়ে মেঘমালার মধ্য দিয়ে ট্যাক্সি চালাতে চালাতে হামজাকে নিয়ে জানার আগ্রহটা বেড়ে যায় হারমানের। ২৭ বছর বয়সী এ ডিফেন্ডারকে দেখতে তাই আগে থেকেই ম্যাচের টিকিট কেটেছেন এ ট্যাক্সি ড্রাইভার। শুধু হারমানই নন, পুরো শিলংয়ের ফুটবলপ্রেমীরা হামজাকে দেখার অপেক্ষায়।

জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে দুই প্রতিবেশী দেশের ফুটবল লড়াই সামনে রেখে অন্যরকম আবহ মনোরম জলবায়ু ও প্রাকৃতিক সম্পদের জন্য পরিচিত মেঘালয় রাজ্যের রাজধানী শিলং। ৩০ হাজার দর্শক ধারণক্ষমতার স্টেডিয়ামের গ্যালারি যে পরিপূর্ণ হবে, তা অনুমেয়। ফুটবল লাভার হিসেবে খ্যাত এই শহরের দর্শকদের একটাই কথা ‘টিকিট চাই’। এই প্রথম বড় কোনো আন্তর্জাতিক ম্যাচ হতে যাচ্ছে স্থানীয়ভাবে পোলো গ্রাউন্ড নামে পরিচিত শিলংয়ের জওহরলাল নেহরু স্টেডিয়ামে। 

১৯ মার্চ মালদ্বীপের বিপক্ষে ভারতের ৩-০ গোলের জয়ের ম্যাচটি প্রীতি ম্যাচ। বাংলাদেশের সঙ্গে এশিয়ান কাপ বাছাই পর্বের লড়াইটি যে প্রীতির মধ্যে থাকছে না, তা সহজেই বলা চলে। ভারত যেমন অবসর থেকে ফিরিয়ে এনেছে দক্ষিণ এশিয়ার ফুটবলের অন্যতম সেরা তারকা সুনীল ছেত্রিকে। বাংলাদেশের আছে যে হামজার মতো রক্ষণ সেনানী। অতীতে বাংলাদেশ-ভারত ফুটবল ম্যাচের চেয়ে এবার উন্মাদনা একটু বেশি। কারণও স্বাভাবিক হামজা। 

শনিবার নেহরু স্টেডিয়ামের পাশের আর্টিফিশিয়াল টার্ফে বাংলাদেশের অনুশীলনের কথা শুনে এসেছিলেন কিছু সংখ্যক ফুটবলপ্রেমী। পাশেই মূল স্টেডিয়ামে ভারতীয় দলের অনুশীলন শেষ হওয়ার পর দর্শকরা দৌড়ে চলে আসেন হামজাকে দেখার জন্য। কিন্তু তাদের ভাগ্য খারাপ। কারণ সন্ধ্যা ৬টায় অনুশীলন করার কথা থাকলেও কোনো এক কারণে তা পিছিয়ে সাড়ে ৭টায় নিয়ে যায় বাংলাদেশ দল। তাতে কিছুটা মন খারাপ হয় তাদের। 

১৭ ডিগ্রি তাপমাত্রার মধ্যেও দেড় ঘণ্টা পর্যন্ত অপেক্ষায় থাকার কথা জানান তিয়েলেং নামক এক ফুটবল সমর্থক, ‘আমি বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচ দেখার জন্য আগে থেকেই টিকিট কেটে রেখেছি। এখানে ফুটবলের জনপ্রিয়তা অনেক। শুনেছি ইংলিশ প্রিমিয়ার লিগে খেলা হামজা চৌধুরী নামক এক খেলোয়াড় আছেন বাংলাদেশ দলে। টিভিতে ইংলিশ ফুটবলের খেলা দেখি। এবার নিজ চোখে দেখতে চাই এমন কোনো ফুটবলারকে। আমি আগেই টিকিট কেটে রেখেছি।’

ভারতের সেভেন সিস্টার্স অঞ্চলে ফুটবলের ঐতিহ্য অনেক। এই অঞ্চলের নর্থ ইস্ট ইউনাইটেড খেলে ইন্ডিয়ান সুপার লিগে। ভারতের আই লিগে খেলে আইজল এফসি ও শিলং লাজোংয়ের মতো ক্লাব। ক্রিকেট পাগল হলেও ভারতের উত্তর-পূর্ব মেঘালয় রাজ্যের শহর শিলংকে ফুটবলের শহর বলা হয়। এখানে ফাইভ-এ সাইড খেলার পাঁচটি মাঠ আছে। অত্যাধুনিক সমৃদ্ধ ফুটসাল ভেন্যু আছে। এই শহরে শিশু বয়স থেকেই ফুটবল নিয়ে মেতে ওঠে ছোট বাচ্চারা। খাসিয়া উপজাতি আধ্যিকের এই শিলংয়ে এখন বাংলাদেশকে নিয়েও উন্মাদনা বইছে। কারণ ভারতের বিপক্ষে তাদেরই মাটিতে সর্বশেষ ২০১৯ সালে লড়াকু পারফরম্যান্স দেখানো বাংলাদেশ ১-১ গোলে ড্র করেছিল। কলকাতার যুবভারতী ক্রীড়াঙ্গনের পর এবার শিলংয়ে ভারতকে চমকে দিতে চায় হ্যাভিয়ের ক্যাবরেরার দল।

.

উৎস: Samakal

কীওয়ার্ড: র ফ টবল ফ টবল র

এছাড়াও পড়ুন:

একজন চা শ্রমিকের দিনে আয় ১৭৮ টাকা

হবিগঞ্জে ছোট-বড় মিলেয়ে চা বাগানের সংখ্যা প্রায় ৪১টি। এসব বাগানের বাসিন্দা প্রায় দেড় লাখ। এর মধ্যে, স্থায়ী ও অস্থায়ী মিলে ৩২ থেকে ৩৫ হাজার মানুষ চা পাতা উত্তোলনে জড়িত।

চা বাগানে একজন শ্রমিককে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়। এর বিনিময়ে মজুরি পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। অভিযোগ রয়েছে, কোনো কোনো বাগানে নিয়মিত এই মজুরিও দেওয়া হয় না।

শ্রমিকদের দাবি, দৈনিক মজুরি ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা করতে হবে। বর্তমানে যে মজুরি পাওয়া যায় তা দিয়ে সংসার চলে না। প্রতিদিনই নিত্যপণ্যের দাম বাড়ছে। সেই সঙ্গে চা শ্রমিকদের নৈমিত্তিক ছুটির ব্যবস্থা করতে হবে।

আরো পড়ুন:

বৈষম্য কেন? নারী শ্রমিকেরা পান না সমান মজুরি

ধান কাটায় আধুনিক যন্ত্রের ব্যবহার, পেশা বদলাচ্ছেন কৃষি শ্রমিকেরা

সরেজমিনে কয়েকটি বাগান ঘুরে দেখা যায়, শ্রমিকরা ছোট্ট কুঠুরিতে গাদাগাদি করে পরিবারের সবাইকে নিয়ে বসবাস করেন। পুষ্টিকর খাবার তো দূরের কথা, দু-বেলা পেটভরে খেতে পারেন না।

শ্রমিকদের দাবির বিষয়ে জানতে চাইলে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক নৃপেন পাল বলেন, ‘‘দুই বছর অন্তর চা শ্রমিকদের বিভিন্ন দাবি ও সমস্যা নিয়ে চা বাগান মালিক পক্ষের সংগঠনের সঙ্গে চা শ্রমিক ইউনিয়ন প্রতিনিধির বৈঠক হয়। সর্বশেষ গত বছরের আগস্টে বৈঠক হয়েছে। সে সময় ৮ টাকা ৫০ পয়সা বৃদ্ধি পেয়ে মজুরি ১৭৮ টাকা ৫০ নির্ধারিত হয়েছে।’’

শ্রমিকদের কষ্টের কথা স্বীকার করে তিনি বলেন, ‘‘দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে এই টাকায় চলা যায় না। দেশের কোথাও এতো সস্তা শ্রমের দাম নেই। বর্তমানে একজন কৃষিশ্রমিক দিনে ৫০০-১০০০ টাকা আয় করেন, একজন  রিকশাচালকের প্রতিদিনের আয় ৭০০ থেকে ৯০০ টাকা। সেখানে একজন চা শ্রমিক পান ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা। এজন্য তাকে প্রতিদিন ২৩ কেজি পাতা তুলতে হয়।’’

চা শ্রমিকদের অধিকার আদায়ে নাটক ও গানের মাধ্যমে দাবি জানিয়ে আসা জেলার চুনারুঘাট উপজেলার দেউন্দি প্রতীক থিয়েটারের সভাপতি সুনীল বিশ্বাস বলেন, ‘‘দৈনিক ১৭৮ টাকা ৫০ পয়সা মজুরিতে শ্রমিকদের চলা কঠিন হয়ে পড়েছে। অচিরেই মজুরি ৬০০ টাকা নির্ধারণ করা হোক। এছাড়া, শ্রমিকদের আরো সুযোগ সুবিধা বৃদ্ধি করা প্রয়োজন।’’

ঢাকা/রাজীব

সম্পর্কিত নিবন্ধ