ওয়ালটন নিয়ে এলো নতুন ৩ মডেলের আর্ক ব্র্যান্ডের অনলাইন ইউপিএস
Published: 23rd, March 2025 GMT
প্রযুক্তি-নির্ভর প্রতিষ্ঠান এবং বিভিন্ন ধরনের অফিস ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ নিশ্চিত করতে ওয়ালটন বাজারে নিয়ে এসেছে নতুন তিনটি অনলাইন ইউপিএস।
শক্তিশালী পারফরম্যান্স এবং দীর্ঘস্থায়ী ব্যাটারি ব্যাকআপ সমৃদ্ধ আর্ক ব্র্যান্ডের এই অনলাইন ইউপিএস তিনটির মডেল হলো যথাক্রমে ইউওএন১, ইউওএন২ এবং ইউওএন৩। কম্পিউটার, সার্ভার, মেশিন এবং মেডিকেল যন্ত্রপাতির মতো গুরুত্বপূর্ণ সিস্টেমে নিরবিচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহ প্রদানে ওয়ালটনের এই অনলাইন ইউপিএসগুলো আদর্শ।
উল্লেখ্য, অনলাইন ইউপিএস এমন একটি ডিভাইস যা মূলত নিরবিচ্ছিন্ন পাওয়ার সাপ্লাই নিশ্চিত করে। এটি এসি কারেন্টকে ডিসি কারেন্টে পরিণত করে এবং পুনরায় এসি কারেন্টে পরিণত করে ইউপিএস এর সাথে সংযুক্ত যন্ত্রপাতিতে সরবরাহ করে। এই পুরো প্রক্রিয়াটির মাধ্যমে কোনো রকম বাধা-বিঘ্ন ছাড়াই একটি স্থিতিশীল পাওয়ার সাপ্লাই নিশ্চিত করা যায়। এজন্য ভারী প্রযুক্তিপণ্য বা প্রতিষ্ঠানের যন্ত্রাংশ নিরাপদ রাখতে ব্যবহার করা হয় অনলাইন ইউপিএস।
আরো পড়ুন:
স্বাধীনতা দিবস ওয়ালটন আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা
অষ্টম রাউন্ড শেষেও শীর্ষে মিনহাজ-সুব্রত
স্বাধীনতা দিবস ওয়ালটন আন্তর্জাতিক রেটিং দাবা
সাত রাউন্ড শেষেও শীর্ষে মিনহাজ-সুব্রত
ওয়ালটনের আর্ক ব্র্যান্ডের নতুন ইউপিএস মডেলগুলো সরাসরি ব্যাটারি ও রেকটিফায়ার থেকে বিদ্যুৎ সরবরাহ করে, যার ফলে বিদ্যুৎ বিভ্রাট বা ভোল্টেজ ওঠানামার কারণে সংযুক্ত ডিভাইসগুলোতে কোনো প্রভাব পড়ে না। এতে ২২০/২৩০ ভোল্টের স্থিতিশীল আউটপুট নিশ্চিত করা হয়, যা কম্পিউটার, সার্ভার, মেডিকেল যন্ত্রপাতি এবং অন্যান্য গুরুত্বপূর্ণ যন্ত্রপাতির নিরাপত্তা বজায় রাখতে সাহায্য করে।
ইউওএন১ মডেলটি ১০০০ ভোল্ট-অ্যাম্পিয়ার বা ৯০০ ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন, যা ছোটো এবং মাঝারি পরিসরে ব্যবহারের জন্য আদর্শ। এটি অফিস এবং বাসার কম্পিউটার বা অন্যান্য যন্ত্রপাতির জন্য উপযুক্ত। ইউওএন২ মডেলটি ৩০০০ ভোল্ট-অ্যাম্পিয়ার বা ২৭০০ ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন যা বড় প্রতিষ্ঠান বা ব্যবসায়িক ব্যবহারের জন্য উপযুক্ত। এটি একাধিক ডিভাইস পরিচালনায় সক্ষম। বৃহৎ শিল্প প্রতিষ্ঠান এবং ডাটা সেন্টারের জন্য উপযুক্ত ইউওএন৩ মডেলটি ৬০০০ ভোল্ট-অ্যাম্পিয়ার বা ৫৪০০ ওয়াট ক্ষমতাসম্পন্ন যা ভারী লোড বহনে সক্ষম। এছাড়াও ক্রেতাদের চাহিদা অনুযায়ী আরো বেশি লোডের ইউপিএসও তৈরি করে নেয়ার সুযোগ রয়েছে।
ওয়ালটন কম্পিউটারের চিফ বিজনেস অফিসার তৌহিদুর রহমান রাদ বলেন, “ওয়ালটনের নতুন এই অনলাইন ইউপিএসগুলো আধুনিক প্রযুক্তির সমন্বয়ে তৈরি যা গ্রাহকদের নিরবচ্ছিন্ন বিদ্যুৎ সরবরাহের মাধ্যমে তাদের মূল্যবান যন্ত্রপাতি সুরক্ষিত রাখবে। উন্নতমানের ব্যাটারি, নিখুঁত ভোল্টেজ নিয়ন্ত্রণ, এলসিডি ডিসপ্লে এবং মাল্টিপল কানেক্টিভিটি অপশনের কারণে এই ইউপিএসগুলো সব ধরনের বাণিজ্যিক ও শিল্প প্রতিষ্ঠানের জন্য আদর্শ।”
তিনি জানান, ওয়ালটনের নতুন এই ৩ মডেলের অনলাইন ইউপিএসে ১০% বিশেষ ছাড় চলছে। ইউওএন১, ইউওএন২ এবং ইউওএন৩ মডেলের অনলাইন ইউপিএসের রেগুলার মূল্য যথাক্রমে ২৯ হাজার ৭৫০, ৫৪ হাজার ৮৫০ এবং ১ লাখ ৪৫ হাজার ৫০০ টাকা।
ওয়ালটনের নতুন এই অনলাইন ইউপিএস সিরিজ এখন ওয়ালটন প্লাজা ও ওয়ালটনের অফিসিয়াল ওয়েবসাইট (https://waltondigitech.
ঢাকা/অগাস্টিন সুজন/ফিরোজ
উৎস: Risingbd
কীওয়ার্ড: চ কর চ কর ব দ য ৎ সরবর হ ন শ চ ত কর র নত ন র জন য
এছাড়াও পড়ুন:
গ্যাস অপচয়ে বছরে ক্ষতি ৩ হাজার কোটি টাকার বেশি: পেট্রোবাংলা
কারিগরি ক্ষতির (সিস্টেম লস) নামে গ্যাস অপচয় বাড়ছে। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে গ্যাস বিতরণ লাইনে অপচয় হয়েছে গড়ে ৬ দশমিক ২৮ শতাংশ গ্যাস। এতে আর্থিক ক্ষতি হয়েছে ৩ হাজার ৭৯০ কোটি টাকা। আর গত অর্থবছরের (২০২৪-২৫) মার্চ পর্যন্ত অপচয় হয়েছে ৭ দশমিক ৪৪ শতাংশ। এতে আর্থিক ক্ষতি ৩ হাজার ২৮৬ কোটি টাকা। এর বাইরে সঞ্চালন লাইনে অপচয় হয়েছে ২ শতাংশ।
‘দেশের জ্বালানিনিরাপত্তা: চ্যালেঞ্জ ও করণীয়; গণমাধ্যমের ভূমিকা’ শীর্ষক এক সেমিনারে এসব তথ্য উপস্থাপন করেছে বাংলাদেশ তেল, গ্যাস, খনিজ সম্পদ করপোরেশন (পেট্রোবাংলা)। এতে বলা হয়, ২ শতাংশ অপচয় গ্রহণযোগ্য, তাই ওইটুকু সমন্বয় করেই আর্থিক ক্ষতির হিসাব করা হয়েছে। গ্যাসের অপচয় রোধে নিয়মিত অভিযান চালাচ্ছে ছয়টি গ্যাস বিতরণ সংস্থা।
পেট্রোবাংলা বলছে, গ্যাস অপচয়ের জন্য দায়ী হচ্ছে পুরোনো, জরাজীর্ণ পাইপলাইন; গ্যাস সরবরাহ লাইনের গ্যাসস্টেশন রাইজারে লিকেজ (ছিদ্র); তৃতীয় পক্ষের উন্নয়নকাজে পাইপলাইন ছিদ্র হওয়া এবং আবাসিক খাতে প্রচুর অবৈধ সংযোগ। তবে এসব অপচয় রোধে বেশ কিছু উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানায় পেট্রোবাংলা। এর মধ্যে রয়েছে গ্যাস সরবরাহব্যবস্থায় মিটারিং/ মনিটরিং ব্যবস্থাপনা কার্যকর করা; লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কারিগরি ক্ষতি নিয়ন্ত্রণে রাখা; অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন ও উচ্ছেদ কার্যক্রম জোরদার করা এবং আবাসিক গ্রাহকদের প্রিপেইড মিটারের আওতায় আনা।
দেশের গ্যাস খাতের চিত্র তুলে ধরে সেমিনারে মূল নিবন্ধ উপস্থাপন করেন বুয়েটের সাবেক অধ্যাপক ইজাজ হোসেন। তিনি বলেন, দেশে গ্যাসের উৎপাদন কমতে কমতে ১৫ বছর আগের জায়গায় চলে গেছে। গ্যাস অনুসন্ধান জোরদারের কোনো বিকল্প নেই। গ্যাস চুরি ও অপচয় কমাতে হবে। সঞ্চালন ও বিতরণ মিলে কারিগরি ক্ষতি প্রায় ১০ শতাংশ, যা অনেক বেশি। সঞ্চালন লাইনে কারিগরি ক্ষতি কোনোভাবেই ২ শতাংশ হওয়ার কথা নয়। এটা ভালো করে দেখা উচিত।
শিল্পে নতুন সংযোগে গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করা হবে
পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান মো. রেজানুর রহমান বলেন, সঞ্চালন লাইনে কারিগরি ক্ষতির বিষয়টি গভীরভাবে দেখা হচ্ছে। অবৈধ সংযোগ বন্ধে পেট্রোবাংলা তৎপর আছে, খোঁজ পেলেই বিচ্ছিন্ন করা হবে। সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের জবাব দেন পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান। এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, শিল্পে নতুন সংযোগের ক্ষেত্রে গ্যাসের সরবরাহ নিশ্চিত করতে হবে, যেহেতু তারা বেশি দাম দেবে। তাই অগ্রাধিকার বিবেচনা করে তিনটি তালিকা তৈরি করা হচ্ছে। প্রথম ধাপের তালিকায় থাকছে, যেসব কারখানায় এখনই সংযোগ দেওয়া যাবে। এগুলো পরিদর্শন প্রায় শেষের দিকে, আগামী সপ্তাহে শেষ হয়ে যাবে।
সাংবাদিকদের অন্য এক প্রশ্নের জবাবে পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যান বলেন, আমদানি করা তরলীকৃত প্রাকৃতিক গ্যাস (এলএনজি) রূপান্তর করে পাইপলাইনে সরবরাহ করতে নতুন টার্মিনাল নির্মাণে অগ্রাধিকার পাচ্ছে স্থলভাগের টার্মিনাল। মহেশখালীর মাতারবাড়ী এলাকায় এটি করা হবে। এটি হলে কম দামের সময় বাড়তি এলএনজি কিনে মজুত করা যাবে। তবে এগুলো রাতারাতি করা যায় না, পাঁচ বছর সময় লাগতে পারে।
জাতীয় গ্রিডে নতুন করে দিনে ৭৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হয়েছে
তেল-গ্যাস অনুসন্ধানে উৎপাদন অংশীদারত্ব চুক্তি (পিএসসি) নিয়ে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন পেট্রোবাংলার পরিচালক (পিএসসি) মো. শোয়েব। তিনি বলেন, স্থলভাগে গ্যাস অনুসন্ধানের জন্য তৈরি পিএসসির খসড়া জ্বালানি বিভাগে পাঠানো হয়েছে।
গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ নিয়ে একটি নিবন্ধ উপস্থাপন করেন পরিচালক মো. রফিকুল ইসলাম। তিনি বলেন, ৫০টি কূপ সংস্কার, উন্নয়ন ও খননের প্রকল্পে ইতিমধ্যে ১৮টির কাজ শেষ হয়েছে। জাতীয় গ্রিডে নতুন করে দিনে ৭৮ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাস যুক্ত হয়েছে। ৪টি কূপের কাজ চলমান। এ ছাড়া পেট্রোবাংলার বিভিন্ন প্রকল্পের কার্যক্রম তুলে ধরেন সংস্থাটির পরিচালক (পরিকল্পনা) মো. আবদুল মান্নান পাটওয়ারী।
সবচেয়ে বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ খাতে
পেট্রোবাংলার আর্থিক দিক তুলে ধরেন সংস্থাটির পরিচালক (অর্থ) এ কে এম মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, গত অর্থবছরে পেট্রোবাংলার রাজস্ব আয় ৫৪ হাজার ১১৭ কোটি টাকা, এর মধ্যে অর্ধেক বকেয়া। গত মে পর্যন্ত গ্যাস বিল বকেয়া ২৭ হাজার ১৯৯ কোটি টাকা। এটি ধীরে ধীরে কমে আসছে। ১৩–১৫ হাজার কোটিতে বকেয়া নেমে এলে সন্তোষজনক। সবচেয়ে বেশি বকেয়া বিদ্যুৎ খাতে ১৬ হাজার ৫২৩ কোটি টাকা। এরপর সার কারখানায় বকেয়া আছে ৯৬৪ কোটি টাকা। তবে বিদেশি কোনো কোম্পানির কাছে বিল বকেয়া নেই পেট্রোবাংলার। সব বিল শোধ করা হয়ে গেছে।
গত অর্থবছরে প্রতি ইউনিটে লোকসান হয়েছে ৪ টাকা
পেট্রোবাংলা বলছে, এলএনজি আমদানি শুরুর পর থেকে লোকসান শুরু হয় সংস্থাটির। প্রতিবছর সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি নিচ্ছে পেট্রোবাংলা। ২০১৮-১৯ সালে এলএনজি আমদানি শুরু হয়, ওই বছর ভর্তুকি ছিল ২ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। এরপর এলএনজি আমদানি বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভর্তুকিও বাড়তে থাকে। গত অর্থবছরে তারা ভর্তুকি নিয়েছে ৮ হাজার ৯০০ কোটি টাকা। এ পর্যন্ত পেট্রোবাংলা মোট ভর্তুকি নিয়েছে ৩৬ হাজার ৭১২ কোটি টাকা। পেট্রোবাংলার হিসাবে গত অর্থবছরে প্রতি ইউনিট গ্যাস সরবরাহে পেট্রোবাংলার খরচ হয়েছে ২৭ টাকা ৫৩ পয়সা। তারা বিক্রি করেছে ২২ টাকা ৯৩ পয়সায়। এর মানে প্রতি ইউনিটে লোকসান হয়েছে ৪ টাকা ৬০ পয়সা।