নোয়াখালীর সোনাইমুড়ী উপজেলায় সাত বছরের একটি শিশুকে ধর্ষণের অভিযোগ উঠেছে। গতকাল শনিবার রাত সোয়া ৯টার দিকে গুরুতর অবস্থায় শিশুটিকে নোয়াখালীর ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

হাসপাতালে থাকা শিশুটির মা প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটিকে গতকাল বিকেল পাঁচটার দিকে বাড়ির পাশের দোকানে পাঠান তিনি। দীর্ঘ প্রায় এক ঘণ্টা পরও ফিরে না আসায় তিনি বের হয়ে শিশুটিকে খুঁজতে থাকেন। একপর্যায়ে শিশুটিকে বাড়ির দিকে আসতে দেখেন তিনি। শিশুটি হাটতে পারছিল না। দুলতে দুলতে আসছিল। রক্ত বের হচ্ছিল তার শরীর থেকে। তিনি শিশুটিকে দ্রুত হাসপাতালে নিয়ে আসেন।

শিশুটির মা আরও বলেন, শিশুটির শরীরে ব্লেড দিয়ে কাটার মতো জখম রয়েছে। এতে গভীর গর্ত সৃষ্টি হওয়ায় সেটিতে অনেক সেলাই করতে হয়। সকাল ৯টার দিকে শিশুটির ঘুম ভাঙার পর তাকে ঘটনার বিষয়ে জানতে চাওয়া হলেও সে কিছুই জানাতে পারেনি। তার মধ্যে ভয়-আতঙ্ক কাজ করছে।

হাসপাতালের জরুরি বিভাগের দায়িত্বরত চিকিৎসক মামুন মোস্তাফিজ প্রথম আলোকে বলেন, ধর্ষণের শিকার হওয়ার অভিযোগ নিয়ে সাত বছরের শিশুটিকে অসুস্থ অবস্থায় জরুরি বিভাগে আনা হয়। তিনি শিশুটির মায়ের কাছ থেকে ঘটনা শোনার পর তাৎক্ষণিক অসুস্থ শিশুটিকে হাসপাতালে ভর্তি করে ওয়ার্ডে পাঠিয়ে দেন।

শিশুটি সার্বক্ষণিক একজন নারী চিকিৎসকের পর্যবেক্ষণে রয়েছে বলে জানান নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালের তত্ত্বাবধায়ক মোহাম্মদ ফরিদ উদ্দিন চৌধুরী। পরে তাহমিনা বেগম নামের ওই চিকিৎসকের সঙ্গে যোগাযোগ করা হয়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, শিশুটিকে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে পর্যবেক্ষণে রাখা হয়েছে। তার বেশ কিছু পরীক্ষা-নিরীক্ষা করা দরকার। এসব পরীক্ষার ফলাফলের পর পরবর্তী চিকিৎসার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।

সোনাইমুড়ী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোরশেদ আলম প্রথম আলোকে বলেন, তিনি প্রাথমিক তথ্য পাওয়ার পর ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছেন। তবে শিশুটি কার দ্বারা নির্যাতনের শিকার হয়েছে, সে বিষয়ে কোনো তথ্য এখনো পাওয়া যায়নি। এরপরও রাতে সন্দেহভাজন হিসেবে চারজনকে আটক করা হয়েছে। এ বিষয়ে পরিবারের কাছ থেকে অভিযোগ পেলে প্রয়োজনীয় আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: প রথম আল ক

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ