সন্তান, নাতি, সবাইকে হারিয়ে যেভাবে ১২২ বছর বেঁচে ছিলেন তিনি
Published: 23rd, March 2025 GMT
এক শতাব্দীর সাক্ষী এক নারী
জ্যঁ ক্যালমঁ জন্মগ্রহণ করেন ২১ ফেব্রুয়ারি ১৮৭৫ সালে। ফ্রান্সের আর্ল শহরে। ভাবুন তো, তখনো আইফেল টাওয়ার তৈরি হয়নি! তার ১৪ বছর পর আইফেল টাওয়ার নির্মাণ সম্পন্ন হয়। সে সময় ফরাসি নারীদের গড় আয়ু ছিল ৪০ থেকে ৫০ বছর। অথচ জ্যঁ ক্যালমঁ সেই গড় আয়ুর প্রায় তিন গুণ বেশি পৃথিবীতে কাটিয়েছিলেন!
মাত্র ২১ বছর বয়সে তিনি বিয়ে করেন দূরসম্পর্কের চাচাতো ভাই ফার্নান্দো ক্যালমঁকে। এই ফার্নান্দো ক্যালমঁ ছিলেন এক ধনী ব্যবসায়ী। আর্থিক সচ্ছলতা ছিল, ঘরে কাজের জন্য গৃহকর্মী ছিল, তাই জ্যঁ জীবনকে উপভোগ করতেন নিজের মতো করে। ফেন্সিং, শিকার, সাইক্লিং, টেনিস, সাঁতারসহ বিভিন্ন শখে ব্যস্ত থাকতেন তিনি।
১৮৯৮ সালে জ্যঁর একমাত্র মেয়ে ইভন মারি নিকোল ক্যালমঁ জন্ম নেন। পরে ইভনের ঘরে জন্ম নেয় একমাত্র নাতি—ফ্রেদেরিক। কিন্তু ভাগ্যের কী নির্মম পরিহাস! ৩৬ বছর বয়সে ইভন প্লুরিসিতে মারা যান, আর মাত্র ৩৭ বছর বয়সে এক গাড়ি দুর্ঘটনায় মারা যান ফ্রেদেরিক। একই বছরে তাঁর জামাতাও মারা যান। একে একে কাছের সব মানুষ হারিয়ে সম্পূর্ণ একা হয়ে পড়েন জ্যঁ ক্যালমঁ। তাই বলে তিনি কিন্তু থেমে থাকেননি। দৈনন্দিন সব কাজই করতেন।
আরও পড়ুনবাঙালি অভিনেত্রীর সঙ্গে পরকীয়ার জেরে প্রথম স্ত্রীর সঙ্গে বিচ্ছেদ, ছবিতে প্রতীক ও প্রিয়ার বিয়ে২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫অভিনব এক চুক্তি, যা ইতিহাস হয়ে গেল১৯৬৫ সালে ৯০ বছর বয়সে আন্দ্রে-ফ্রাঁসোয়া রাফ্রে নামের এক আইনজীবীর সঙ্গে একটি ‘রিভার্স মর্টগেজ’ চুক্তি করেন জ্যঁ ক্যালমঁ। চুক্তি অনুযায়ী, রাফ্রে প্রতি মাসে জ্যঁকে ২ হাজার ৫০০ ফ্রাঁ দেবেন এবং মৃত্যুর পর তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের মালিক হবেন।
রাফ্রে ভেবেছিলেন জ্যঁ ক্যালমঁ আর কত দিন বাঁচবেন? কিন্তু এই ক্ষেত্রে ঘটনা ঘটল পুরো উল্টো!
রাফ্রে যখন চুক্তি করেন, তখন জ্যঁ তাঁর দ্বিগুণ বয়সী ছিলেন। রাফ্রের বয়স তখন ৪৭, জ্যঁর ৯০। রাফ্রে ভেবেছিলেন, কয়েক বছরের মধ্যেই অ্যাপার্টমেন্টের মালিক হবেন। কিন্তু বাস্তবে জ্যঁ তাঁকে ছাড়িয়ে যান!
৭৭ বছর বয়সে রাফ্রে মারা যান। অথচ তখনো জ্যঁ সুস্থ ও সক্রিয় ছিলেন! ফলে রাফ্রের পরিবারকে আরও দুই বছর অর্থ দিয়ে যেতে হয়। আশ্চর্যের বিষয়, এই চুক্তির ফলে জ্যঁ তাঁর অ্যাপার্টমেন্টের প্রকৃত মূল্যের দ্বিগুণ অর্থ পেয়ে যান।
উৎস: Prothomalo
কীওয়ার্ড: বছর বয়স র বয়স বছর ব
এছাড়াও পড়ুন:
বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ শুরু
কোরআন তেলাওয়াতের মধ্য দিয়ে শুরু হয়েছে বিএনপির শ্রমিক সমাবেশ। মহান মে দিবস উপলক্ষে ঢাকার নয়াপল্টনে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল আয়োজিত এ সমাবেশে হাজার হাজার নেতকর্মী উপস্থিত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১ মে) দুপুর ২টা ১৫ মিনিটে ওলামা দলের সিনিয়র যুগ্ম আহ্বায়ক কারী গোলাম মোস্তফার কোরআন তেলাওয়াত শুরু করেন।
এর আগে দুপুর ১২টা থেকে সমাবেশ মঞ্চে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান শুরু হয়। এতে বিএনপির সাংস্কৃতিক সংগঠন জাসাসের শিল্পীরা গান পরিবেশন করেন।
দুপুর আড়াইটায় আনুষ্ঠানিকভাবে সমাবেশ শুরু হওয়ার কথা থাকলেও সকাল থেকেই মিছিল নিয়ে ঢাকা মহানগরী ও আশপাশের জেলা থেকে দলে দলে নেতাকর্মীরা যোগ দেন সমাবেশে।
নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে আয়োজিত এ সমাবেশে প্রধান অতিথি হিসেবে লন্ডন থেকে ভার্চুয়াল মাধ্যমে যুক্ত হয়ে বক্তব্য দেবেন বিএনপির ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমান।
শ্রমিক দলের সভাপতি আনোয়ার হোসেনের সভাপতিত্বে সমাবেশ মঞ্চে উপস্থিত আছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আমানউল্লাহ আমান, ভাইস চেয়ারম্যান আহমেদ আজম খান, সহ দপ্তর সম্পাদক তাইফুল ইসলাম টিপুসহ বিএনপির সিনিয়র নেতারা। সমাবেশে শ্রমিক দলের পক্ষ থেকে তুলে ধরা হবে ১২ দফা দাবি।
সমাবেশ স্থলে দেখা যায়, নেতাকর্মীরা ব্যানার, মাথায় নানা রঙের ক্যাপ, দলীয় টি-শার্ট পরে নয়পল্টনে আসছেন। জায়গায় জায়গায় চলছে স্লোগান, দলীয় সংগীত আর ঢাক-ঢোলের বাদ্য।
সমাবেশস্থলে দলের কেন্দ্রীয় নেতাদের পাশাপাশি উপস্থিত রয়েছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস, জাতীয়তাবাদী সাংস্কৃতিক সংস্থা (জাসাস) আহ্বায়ক হেলাল খান, সদস্যসচিব জাকির হোসেন রোকন প্রমুখ।
এদিকে, আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সমাবেশস্থলে পুলিশসহ অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন। জিরো পয়েন্ট থেকে পল্টনমুখী সড়ক সাময়িকভাবে বন্ধ রাখা রাখা হয়েছে।
টানা চার মেয়াদে ক্ষমতায় থাকা আওয়ামী লীগের সরকার পতনের পর নয়া পল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ের সামনে প্রথম এতো বড় সমাবেশ করছে জাতীয়তাবাদী শ্রমিক দল।
এর আগে শেখ হাসিনা সরকারের পতনের পর গত বছরের ৮ আগস্ট প্রথম বাধাহীন সমাবেশ করে বিএনপি। এতে বিপুল সংখ্যক নেতাকর্মী অংশ নেন। পুরো এলাকায় ছিল উচ্ছ্বল নেতাকর্মীদের ভিড়।
ঢাকা/এএএম/ইভা