দুজনেই দুই ভুবনের মহারথী। একজন ক্রিকেটের, অন্যজন প্রযুক্তি–দুনিয়ার। দুজনের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলেই ভিডিও তিনটি শোভা পাচ্ছে এবং ভাইরালও হয়েছে। আচ্ছা, দুই মহারথীর নাম দুটো বলে দেওয়া যাক—শচীন টেন্ডুলকার ও বিল গেটস।

আরও পড়ুনআশুতোষ–ঝড়ে লক্ষ্ণৌ না দিল্লি৩৯ মিনিট আগে

মাইক্রোসফটের সহপ্রতিষ্ঠাতা বিল গেটস তিন বছরের মধ্যে এ নিয়ে তৃতীয়বার ভারতে গিয়েছেন। এবার গিয়েছেন তাঁর গেটস ফাউন্ডেশনের ২৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে। যুক্তরাষ্ট্রের এই ধনকুবের এবারের ভারত সফরে দেশটির বিভিন্ন প্রভাবশালী ব্যক্তির সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন। প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি থেকে টেন্ডুলকারের সঙ্গেও সাক্ষাৎ করেন গেটস। এই সফরে টেন্ডুলকারের সঙ্গে বিশেষ তিন মুহূর্তের ভিডিও নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে পোস্ট করেন তিনি। টেন্ডুলকারও তিনটি ভিডিও পোস্ট করেন তাঁর ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে।

চার দিন আগে গেটস ও টেন্ডুলকারের ইনস্টাগ্রামে পোস্ট করা ভিডিওতে দেখা যায়, দুজন একসঙ্গে বসে একই খাবার খাচ্ছেন। পাত্রের ওপর রাখা খাবারটি দেখতে অনেকটাই বার্গার ও স্যান্ডউইচের মতো। দেখেই বোঝা যাচ্ছিল, বেশ মজা করে খাচ্ছেন দুজন। ভিডিওর স্ক্রিনে লেখা, ‘সার্ভিং সুন।’ গেটসের পোস্ট করা এই ভিডিওর ক্যাপশনে লেখা, ‘কাজে নামার আগে স্ন্যাক ব্রেক।’ তা, কাজটা কী, সেটা নিয়ে গেটস নিজের ব্লগে লিখেছেন, ‘আমি নতুন আইডিয়া নিয়ে ফিরেছি। কারণ, ভারত স্মার্ট ও উচ্চাভিলাষী মানুষে পরিপূর্ণ, যেখানে বিশ্বের সবচেয়ে কঠিন কিছু সমস্যা লোকে সৃষ্টিশীলতার মাধ্যমে মোকাবিলা করছে।’

আরও পড়ুন‘আমার ভাই যেন সুস্থ হয়ে মাঠে ফিরতে পারে’, তামিমকে নিয়ে সাকিব১ ঘণ্টা আগে

ভারতের সংবাদমাধ্যম টেলিগ্রাফ জানিয়েছে, গেটস ও টেন্ডুলকার পাশাপাশি বসে যে খাবারটি খাচ্ছিলেন, সেটি মুম্বাইয়ের বিখ্যাত স্ট্রিট ফুড ‘বড় পা’। কিছুদিন আগে বিশ্বের সেরা স্যান্ডউইচের তালিকায় এ খাবারটি জায়গা পেয়েছে বলে জানিয়েছে টেলিগ্রাফ। আন্তর্জাতিক ক্রিকেটে সর্বোচ্চ রান ও সেঞ্চুরির রেকর্ডধারী টেন্ডুলকার ও গেটসের এই ভিডিও ১০ হাজারের বেশি শেয়ার হয়েছে।

তিন দিন আগে গেটস ও টেন্ডুলকারের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল থেকে আরও একটি ভিডিও শেয়ার করা হয়। সেখানে দেখা যায়, টেনিস কোর্টের এক প্রান্তে র‌্যাকেট হাতে গেটস সার্ভিস করার প্রস্তুতি নিচ্ছেন। অন্য প্রান্তে টেন্ডুলকারও র‌্যাকেট হাতে প্রস্তুত, তবে তাঁর প্রস্তুতি একটু অন্য রকম। র‌্যাকেটটি নিয়ে ব্যাটিং করার স্টান্সে দাঁড়িয়েছেন। গেটস তা দেখে বলেন, ‘ভেবেছিলাম, আমরা টেনিস খেলছি।’ রসিক টেন্ডুলকার বলেন, ‘বিল, আমি বলেছিলাম ক্রেনিস—একটু ক্রিকেট, আরেকটু টেনিস।’

টেন্ডুলকার ভিডিওটি নিজের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডলে পোস্ট করে ক্যাপশনে লিখেছেন, ‘খেলাধুলা আমাদের টিমওয়ার্ক শেখায়। জীবনে এটাই প্রয়োজন। ক্রেনিস মজার ছিল। তবে আসল কাজটা জমে উঠছে শচীন টেন্ডুলকার ফাউন্ডেশন ও বিল গেটস ফাউন্ডেশনের মধ্যে।’

সেই আসল কাজটা কী—তা আজ জানা গেল টেন্ডুলকারের পোস্ট করা ভিডিওতে। গেটসের ইনস্টাগ্রাম হ্যান্ডল থেকেও একই ভিডিও পোস্ট করা হয়। সেখানে দেখা যায়, দুটি টি–শার্টে সই করছেন শচীন টেন্ডুলকার ও বিল গেটস। টেন্ডুলকারের স্ত্রী অঞ্জলিও সই করেন।

সেটা যে কোনো চুক্তি, তা বোঝা গেল টেন্ডুলকারের পোস্ট করা ভিডিওর ক্যাপশনে, ‘পার্টনার ইন প্রগ্রেস—শচীন টেন্ডুলকার ফাউন্ডেশন ও বিল গেটস ফাউন্ডেশন। এই নতুন জুটির মাধ্যমে আমরা পুষ্টি, শিক্ষা ও স্বাস্থ্য খাতে টেকসই অবদান রাখতে চাই।’

.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ও ব ল গ টস প স ট কর

এছাড়াও পড়ুন:

পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে বংশে তিনি প্রথম, তাই এত আয়োজন

চীনে উচ্চশিক্ষার জন্য অভিজাত বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর মধ্যে প্রথম সারিতে রয়েছে বেইজিংয়ের পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়। সেখানে ভর্তি হওয়ার সুযোগ পাওয়া দেশটির যেকোনো শিক্ষার্থীর জন্য দারুণ সম্মানের। এ বছর পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন লি গুওইয়াও।

লির বাড়ি জেজিয়াং প্রদেশের ওয়েনজউ শহরে। এর আগে তাঁর বংশে শত বছরের ইতিহাসে কেউ পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ার সুযোগ পাননি। এত বড় সম্মানের উপলক্ষ উদ্‌যাপন করতে তাই বিন্দুমাত্র কার্পণ্য করেননি লির পরিবার ও গ্রামের বাসিন্দারা। রীতিমতো লালগালিচা বিছিয়ে, মোটর শোভাযাত্রা করে, ব্যান্ড বাজিয়ে পরিবার ও গ্রামের মুখ উজ্জ্বল করা লিকে সংবর্ধনা দেন তাঁরা, সঙ্গে ছিল ভূরিভোজের ব্যবস্থা। চীনের সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম উইবোতে এই সংবর্ধনার ছবি ও ভিডিও রীতিমতো ভাইরাল হয়ে যায়।

চীনে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির জন্য জাতীয় পর্যায়ে একটি পরীক্ষা নেওয়া হয়। যেটি ‘গাওকাও’ নামে পরিচিত। তীব্র প্রতিযোগিতাপূর্ণ এই পরীক্ষা বেশ কঠিন। পরীক্ষায় মোট ৭৫০ নম্বরের মধ্যে লি পেয়েছেন ৬৯১।

লির গ্রামের এক প্রতিবেশী জানান, লির বাবা নির্মাণশ্রমিক। লির মা মাত্র ২ হাজার ৮০০ ইউয়ান বেতনে একটি সুপারশপে কাজ করেন। সত্যি বলতে, ছেলেটি সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টা আর পরিশ্রমে এটা অর্জন করেছেন।

প্রতিবেশী আরেক গ্রামবাসী বলেন, লি তাঁর বাবার কাছ থেকে পাওয়া একটি পুরোনো মুঠোফোন দিয়ে প্রশ্নোত্তর অনুশীলন করতেন। সাপ্তাহিক ছুটির দিনগুলোয় গ্রামের গ্রন্থাগারে বসে পরীক্ষার প্রশ্নপত্র হাতে লিখে তারপর সেগুলো অনুশীলন করতেন। মাধ্যমিকে তিনি কখনো কোনো প্রাইভেট শিক্ষকের কাছে পড়েননি।

লিকে সংবর্ধনা দিতে শতাব্দীপ্রাচীন ঐতিহ্য ভেঙে তাঁদের গ্রামের পূর্বপুরুষদের মন্দিরের প্রধান ফটক খোলা হয়, যা একটি বিশেষ সম্মানের প্রতীক হিসেবে বিবেচিত।

লিকে সংবর্ধনা দেওয়ার ছবি ও ভিডিও চীনজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে আলোচনার জন্ম দিয়েছে।

অনলাইনে একজন লেখেন, ‘পিকিং বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে ৬৯১ নম্বর! এটা অবিশ্বাস্য। সত্যিই পুরো পরিবারের মুখ উজ্জ্বল করেছে!’

তবে কেউ কেউ এই জমকালো উদ্‌যাপন নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন।

তাঁরা বলেছেন, এটা কি একটু বাড়াবাড়ি নয়? উৎসবটা খুবই জাঁকজমকপূর্ণ, এতে ছেলেটার ওপর অকারণ চাপ তৈরি হতে পারে। স্নাতক হওয়ার পর কি পরিবার তাঁর কাছ থেকে অনেক বেশি কিছু প্রত্যাশা করবে না?

সম্পর্কিত নিবন্ধ