দ্রুতগতির স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট–সেবা স্টারলিংকের পরীক্ষামূলক ব্যবহার করা হয়েছে ঢাকায়। এ সময় ২৩০ এমবিপিএস ডাউনলোড গতি পাওয়া গেছে। রাজধানীর একটি হোটেলের বিদেশি স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট–সেবাটির ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে ব্যবহার করে পরীক্ষামূলক ব্যবহার হয়।

প্রধান উপদেষ্টার প্রেস সচিব শফিকুল আলম গতকাল সোমবার নিজের ভেরিফায়েড ফেসবুকে অ্যাকাউন্টে ঢাকায় স্টারলিংকের গতির তথ্য জানিয়ে একটি পোস্ট দেন। সেখানে দেখা যায়, এর ডাউনলোড গতি ছিল ২৩০ এমবিপিএস। আপলোড গতি ২০ এমবিপিএস। এর সংযোগের সার্ভার ছিল সিঙ্গাপুর ও হংকংয়ে। ক্লায়েন্টের অবস্থান দেখায় মালয়েশিয়ায়।

ইন্টারনেটের গতি পরীক্ষা ও বিশ্লেষণের প্রতিষ্ঠান ওকলায় দেখা যায়, গত ফেব্রুয়ারি মাসে বাংলাদেশের ব্রডব্যান্ডের ডাউনলোড গতি ছিল ৫৩ দশমিক ১২ এমবিপিএস এবং আপলোড গতি ছিল ৪৯ দশমিক ২১ এমবিপিএস। মোবাইল ইন্টারনেটে ফেব্রুয়ারি মাসে ডাউনলোড গতি ছিল ৩৭ দশমিক ৯৮ এমবিপিএস এবং আপলোড গতি ছিল ১৩ দশমিক ৩০ এমবিপিএস।

আজ মঙ্গলবার প্রধান উপদেষ্টার প্রেস উইং থেকে পাঠানো এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস ৯০ দিনের মধ্যে স্টারলিংকের স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড ইন্টারনেট–সেবা বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে চালুর নির্দেশনা দিয়েছেন।

পরীক্ষামূলক সম্প্রচারে স্টারলিংক তার বিদেশি স্যাটেলাইট ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে ব্যবহার করলেও বাংলাদেশে বাণিজ্যিক সেবাদানের সময়ে নন-জিওস্টেশনারি অরবিট (এনজিএসও) নীতিমালা মেনে স্থানীয় ব্রডব্যান্ড গেটওয়ে বা ইন্টারন্যাশনাল ইন্টারনেট গেটওয়ে (আইআইজি) ব্যবহার করবে।

আরও পড়ুনইলন মাস্কের স্টারলিংক বাংলাদেশে এলে সুফল কী, খরচ কত১৫ ফেব্রুয়ারি ২০২৫

বাংলাদেশ টেলিযোগাযোগ নিয়ন্ত্রণ কমিশন (বিটিআরসি) স্টারলিংকের মতো স্যাটেলাইটভিত্তিক ইন্টারনেট–সেবা দিতে ‘নন-জিওস্টেশনারি অরবিট স্যাটেলাইট সার্ভিসেস অপারেটর’ শিরোনামে খসড়া নির্দেশিকা করেছে। এ নির্দেশিকায় বলা আছে, স্যাটেলাইট ইন্টারনেট সেবাদাতা প্রতিষ্ঠানগুলোকে দেশের আইআইজি থেকে ব্যান্ডউইডথ নিতে হবে।

বেশ কয়েক বছর ধরেই বাংলাদেশের বাজার ধরার চেষ্টায় রয়েছে স্টারলিংক। বিশ্বের শীর্ষ প্রযুক্তি উদ্যোক্তা ইলন মাস্কের মহাকাশবিষয়ক সংস্থা স্পেসএক্সের অঙ্গপ্রতিষ্ঠান স্টারলিংক। স্টারলিংক কৃত্রিম উপগ্রহের মাধ্যমে ইন্টারনেট-সেবা দেয়। ইলন মাস্কের সঙ্গে গত ১৩ ফেব্রুয়ারি ভিডিও কলে স্টারলিংক প্রসঙ্গে আলোচনা করেন অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূস। এ ছাড়া প্রতিষ্ঠানটির একটি দল বাংলাদেশে বিভিন্ন অংশীজনের সঙ্গে বৈঠক করছে।

আরও পড়ুনপৃথিবীর বিভিন্ন দেশে কীভাবে পরিচালিত হয় ইলন মাস্কের স্টারলিংক২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫.

উৎস: Prothomalo

কীওয়ার্ড: ব রডব য ন ড ব যবহ র কর স য ট ল ইট পর ক ষ গ টওয় দশম ক

এছাড়াও পড়ুন:

অনিয়ম-দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার

অনিয়ম ও দুর্নীতির অভিযোগে যশোর আইনজীবী সমিতির চার সদস্যকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। গতকাল বুধবার বিকেলে সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় ওই চারজনের কারণ দর্শানো নোটিশের জবাবের শুনানি শেষে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বহিষ্কৃত সদস্যরা হলেন আইনজীবী আবদুর রাজ্জাক, সৈয়দ কবির হোসেন, রফিকুল ইসলাম রফিক ও তরফদার আবদুল মুকিত। তাঁদের বহিষ্কারাদেশ প্রত্যাহার না হওয়া পর্যন্ত আদালতের সব কার্যক্রম থেকে বিরত থাকতে বলা হয়েছে।

এ সমিতির সাধারণ সম্পাদক এম এ গফুর বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণিত হওয়াতে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। কেউ সমিতির নিয়মনীতির ঊর্ধ্বে নন। বৃহস্পতিবার ওই চার সদস্যকে বহিষ্কারের বিষয়টি নোটিশ দিয়ে জানানো হবে।’

সমিতি সূত্রে জানা গেছে, যশোর জেলা আইনজীবী সমিতির সদস্য সৈয়দ কবির হোসেনের (জনি) কাছে ৩৫ লাখ টাকায় শহরের বারান্দীপাড়া কদমতলা এলাকায় জমি বিক্রি করেন ইমরান হাসান। জমি রেজিস্ট্রির আগে সব টাকা পরিশোধের কথা থাকলেও সৈয়দ কবির হোসেন ১০ লাখ টাকা দিয়েছিলেন। বাকি ২৫ লাখ টাকা না দিয়ে টালবাহানা করতে থাকেন। পরে তিনি আরও ১৭ লাখ টাকা দেন। বাকি ৮ লাখ টাকা চাইলে হুমকি দিতে থাকেন কবির হোসেন। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে ইমরান হাসান আইনজীবী সমিতি বরাবর লিখিত অভিযোগ দেন।

সমিতির নির্বাহী কমিটির সভায় তদন্ত প্রতিবেদনের ওপর শুনানি শেষে কবির হোসেনকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেওয়া হয়েছিল। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় গঠনতন্ত্র অনুযায়ী কবির হোসেনকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়।

এ বিষয়ে আইনজীবী কবির হোসেন বলেন, ‘বহিষ্কারের বিষয়টি আমি শুনেছি। তবে যে বিষয়ে আমাকে অভিযুক্ত করা হয়েছে, সেই বিষয়ে অভিযুক্ত আমি নই। তারপরও আইনজীবী সমিতি আমার অভিভাবক; তারা যে ব্যবস্থা নিয়েছে, তার বিষয়ে আমার কিছু বলার নেই।’

অন্যদিকে অভয়নগরের নওয়াপাড়ার জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশন পাওনা টাকা আদায়ে আবদুর রাজ্জাককে মামলার আইনজীবী নিয়োগ দিয়েছিল। ২০১৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত আবদুর রাজ্জাক আটটি চেকের মামলা পরিচালনা করেন। এসব মামলার রায় ও আপিল বাদীর অনুকূলে যাওয়ার পর আটটি চেকের ৪১ লাখ ১২ হাজার ৫০০ টাকা ব্যাংক থেকে উত্তোলন করে নেন আবদুর রাজ্জাক। এ টাকা জয়েন্ট ট্রেডিং কর্তৃপক্ষকে না দিয়ে তিনি ঘোরাতে থাকেন। চলতি বছরের ৪ জুন তিনি ১৫ লাখ টাকার একটি চেক দেন। চেকটি ব্যাংকে জমা দিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় নগদায়ন করা যায়নি। টাকা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে জয়েন্ট ট্রেডিং করপোরেশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক আবদুল ওহাব গত ২৮ জুলাই আবদুর রাজ্জাকের বিরুদ্ধে যশোর আইনজীবী সমিতি‌ বরাবর অভিযোগ করেন।

এ অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে আবদুর রাজ্জাককে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয় যশোর আইনজীবী সমিতি। নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় আবদুর রাজ্জাককে গঠনতন্ত্র অনুযায়ী সাময়িক বহিষ্কার করা হয়। এ ছাড়া রফিকুল ইসলাম রফিক তাঁর সহকর্মীর সঙ্গে অসদাচরণ ও মামলা করতে টাকা ও কাগজপত্র নিয়ে মামলা না করায় সমিতির সুনাম ক্ষুণ্ন করায় সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে। আইনজীবী তরফদার আবদুল মুকিতের বিরুদ্ধেও নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। এ কারণে তাঁকে সাময়িক বহিষ্কার করা হয়েছে।

সম্পর্কিত নিবন্ধ